Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Green School Program For West Bengal

স্কুলে সবুজায়ন প্রকল্প নিয়ে দুই মন্ত্রীর ভিন্ন সুর

গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং সবুজায়নে তাদের শামিল করতে হবে।

পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

অনির্বাণ দাশগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩২
Share: Save:

সবুজের অভিযান শুরু করতে সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় বন দফতর। ‘গ্রিন স্কুল প্রোগ্রাম ইন সাউথ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ প্রকল্পের জন্য বন দফতর তাকিয়ে রয়েছে পরিবেশ দফতরের দিকে। তাদের ছাড়পত্র মিললেই শতাধিক স্কুলে সবুজায়নের কাজ শুরু করবে বন দফতর। কিন্তু পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, তাঁর দফতর এখনও ওই প্রকল্পের জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রস্তাব পায়নি। যদিও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ওই প্রকল্পটি প্রস্তাব আকারে ইতিমধ্যেই পরিবেশ দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং সবুজায়নে তাদের শামিল করতে হবে। বন দফতর সূত্রের খবর, গত জুলাইয়ে তাদের কাছে ‘গ্রিন স্কুল প্রোগ্রাম ইন সাউথ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর সুপারিশ করেছিল পরিবেশ দফতর। কলকাতা থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত শতাধিক স্কুলের একটি তালিকা চূড়ান্ত করে বন দফতর। সেই তালিকায় কলকাতার সরকারি-বেসরকারি ২৪-২৫টি স্কুল রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে সল্টলেকের আটটি, বাঁকুড়ার ১৬টি, পুরুলিয়া ও বর্ধমানের ১০টি করে স্কুল। এই স্কুলগুলি কোন ধরনের বাগান চায়, তা-ও তারা বন দফতরকে জানিয়েছে। গত জুলাইয়ে ওই প্রকল্পের অনুমোদন চেয়ে পরিবেশ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বন দফতর। কিন্তু এ সম্পর্কে পরিবেশমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘আমরা প্রকল্প আকারে কোনও প্রস্তাব এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে পাইনি। পেলে অবশ্যই বিবেচনা করব।’’ যদিও বন দফতর সূত্রের খবর, প্রকল্পটিকে যাতে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে নিজে উদ্যোগী হয়েছেন বনমন্ত্রী। পরিবেশ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি ইতিমধ্যে কথাও বলেছেন। প্রকল্পটি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে রাজীব বলেন, ‘‘এটি ভাল প্রকল্প। আমরা পরিবেশ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, তারা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই এই বিষয়টি দেখবে।’’

বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, স্কুলগুলিতে লতানো গাছের দেওয়াল (হেজ ওয়াল), কিচেন গার্ডেন, ভেষজ গাছের উদ্যান, উল্লম্ব উদ্যান (ভার্টিক্যাল গার্ডেন), ফলের বাগান, ছাদের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। যে স্কুলে যেমন বাগান তৈরির সুযোগ থাকবে, সেখানে তেমনই করা হবে। বন দফতরের আধিকারিকদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বায়ুদূষণ যেমন অনেকটাই রোধ করা যাবে, তেমনই পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হবে এবং তাদের সবুজায়নে আগ্রহী করা যাবে। আধিকারিকদের যুক্তি, শহর-মফস্‌সলের নতুন প্রজন্ম পরিবেশ সম্পর্কে কার্যত উদাসীন। তারা এখন কম্পিউটার, ‌ল্যাপটপ, ভিডিয়ো গেমে অনেক বেশি সময় খরচ করে। এই পরিস্থিতিতে ‘গ্রিন স্কুল প্রোগ্রাম ইন সাউথ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হলে, পড়ুয়ারা বিভিন্ন ধরনের গাছ চিনতে পারবে। গাছের বসানোর প্রতি তারা আকৃষ্ট হবে। পরিবেশ এবং সবুজ সম্পর্কে তাদের আগ্রহ বাড়বে। এ ছাড়াও বাগান তৈরি হলে তার পরিচর্যার দায়িত্ব নিতে হবে স্কুলগুলিকেই। সেই কাজে পড়ুয়াদের শামিল করলে কোন গাছের কী ভাবে দেখভাল করতে হবে, তা-ও হাতেকলমে শিখতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। পরিচর্যার কাজ শেখাবে বন দফতরই। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পরিবেশ দফতর থেকে ছাড়পত্র পেলে বর্ষার আগেই কাজ শুরু করে দেওয়া যেত।’’

সূত্রের খবর, এই প্রকল্প নিয়ে রীতিমতো উৎসাহী বিভিন্ন শহর ও শহরতলির বহু স্কুল। বন দফতরের আর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র না-পাওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছু করণীয় নেই। ইতিমধ্যেই অনেক স্কুল জানতে চেয়েছে প্রকল্পের কাজ কবে শুরু হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy