—প্রতীকী চিত্র।
অন্যের বাড়ির জল চুঁইয়ে ঘরের সামনে পড়ছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় তাঁর বাবাকে মাথায় হাতুড়ি মেরে খুন করা হয়েছে বলে গার্ডেনরিচ থানার দ্বারস্থ হলেন এক যুবক। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় ওই যুবকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। রাতেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েক জনের খোঁজ চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। কিছু দিন আগেই বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ে ১৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শিরোনামে উঠে এসেছিল গার্ডেনরিচ। এ বার সেখানকারই বাংলা বস্তিতে উঠল এ ভাবে খুনের অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিহতের নাম মহম্মদ আনিস (৪৮)। তিনি গার্ডেনরিচের বাংলা বস্তির বাসিন্দা ছিলেন। বন্দর এলাকায় জাহাজ কাটাইয়ের কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছেন তাঁর চার সন্তান। ছোট ছেলে মহম্মদ আতিফের দাবি, তাঁরা যে ঘরে থাকেন, সেটি একটি বহুতলের নীচের তলায়। উপরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছু দিন ধরেই ময়লা জল চুঁইয়ে নীচে পড়ছিল। যার জেরে তাঁদের ঘরে ঢোকার মুখে জল জমে থাকত। বার বার বলেও সুরাহা হয়নি। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে উপরের ফ্ল্যাটের মালিক নায়েরা সুলতান ও তাঁর স্ত্রী আনিসকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। আতিফের কথায়, ‘‘বাবাকে মারা হয়েছে শুনে আমার দাদা মহম্মদ আরিফ ছুটে যায়। তাকেও ধরে মারধর করা হয়। এর পরে বাইরে থেকে আরও ছেলেদের নিয়ে এসে বাবাকে বেধড়ক মারা হয়। হাতের লোহার বালা খুলে তা দিয়ে মারার পরে এক জন একটা হাতুড়ি দিয়ে মেরে বাবার মাথা ফাটিয়ে দেয়।’’ দ্রুত আনিসকে কাছের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করতে বলেন। কিন্তু এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা আনিসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশকে দেওয়া অভিযোগপত্রে আতিফের দাবি, নায়েরার পাশাপাশি তাঁর বাবা ও দাদাকে মারধর করেছেন আরিফ, নেহা, পুনম নামে তাঁদের বস্তিরই কয়েক জন। তাঁদের সঙ্গেই যোগ দিয়েছিলেন পাশের বাদামতলা এলাকার জাভেদ, আফতাব, তহসিন এবং আরিস। পুলিশ রাতেই মহম্মদ আরিফ এবং তবসুম আরা ওরফে নেহাকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে। কিন্তু শনিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় আর কোনও গ্রেফতারির খবর জানায়নি পুলিশ।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় পুলিশ-পিকেট বসানো হয়েছে। স্থানীয়দের কেউই মুখ খুলতে চাননি। এক আনাজ বিক্রেতা শুধু বললেন, ‘‘জল পড়া নিয়ে ওই লড়াই এমন চেহারা নিয়েছিল, যেন যুদ্ধক্ষেত্র। লোহার রড, লাঠি, হাতুড়ি নিয়ে সবাই একে অপরের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। গন্ডগোলের মধ্যে পড়েই মৃত্যু হয়েছে আনিসের।’’ অভিযুক্তদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ওই পাড়ারই এক মহিলা বললেন, ‘‘হাতুড়ি দিয়ে মারার অভিযোগ মিথ্যা। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আনিসের।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, দেহে হাতুড়ির আঘাতের চিহ্ন আছে কি না, দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই স্পষ্ট হবে, পড়ে গিয়ে, না কি হাতুড়ি দিয়ে মারার কারণে এই মৃত্যু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy