ফাইল চিত্র।
থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের নানা কাজ আগেই করতেন তাঁরা। এ বার শহরের অলিগলিতে সাইকেলে চেপে টহলও দেবেন কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। লালবাজার সূত্রের খবর, প্রথমে যাদবপুর বা সাউথ সাবার্বান ডিভিশনে এমনটা চালু হচ্ছে। শুক্রবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী এ জন্য সাইকেলও বিতরণ করেছেন। ওই ডিভিশনের প্রতি থানায় আপাতত দু’টি করে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। টহলদারি চালানো ও ছোটখাটো অপরাধ ঠেকানোর পাশাপাশি জনসংযোগের কাজও করবেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। পরে কলকাতা পুলিশের সব থানায় টহলদারির জন্য তাঁদের সাইকেল দেওয়া হবে।
কী করবেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা? শহরে এমন অসংখ্য অলিগলি আছে, যেখানে মোটরবাইক বা সাইকেল ছাড়া অন্য কোনও যান চলাচল করতে পারে না। সেই সব জায়গায় নজরদারি চালাবেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। এর ফলে ফাঁকা বাড়ি থেকে এটিএম কাউন্টার, সর্বত্র নজর রাখতে সুবিধে হবে পুলিশের।
যদিও এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষমতা নিয়ে। কারণ, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা পুলিশকর্মী নন। তাঁদের চলতি কথায় ‘সিভিক পুলিশ’ বলা হয়। টহলদারির সময়ে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা কি সামলাতে পারবেন? তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করলে তার বৈধতা কি থাকবে? যদিও কলকাতা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারেরা একা যাবেন না। সঙ্গে কনস্টেবল থাকবেন। ফলে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।’’
আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশের আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। তবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কনস্টেবল বা হোমগার্ডদের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। এই পরিস্থিতিতে টহলদারির মতো কাজ তাঁদের দিয়ে কি করানো যুক্তিসঙ্গত? পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘হোমগার্ডদের আইনি পাঠ পড়ানো হয়। তাঁরা পুলিশের মতোই ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু সিভিক ভলান্টিয়ারদের এই এক্তিয়ার নেই।’’
এই স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর জন্ম হয়েছিল বাম জমানার শেষে। পুলিশকর্তাদের একাংশ বলছেন, এমনই এক বাহিনীর উপরে রাজ্য পুলিশ অনেকটাই নির্ভরশীল। বিভিন্ন এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারেরা টহলদারি চালান। গোলমাল থামাতেও তাঁদের পাঠানো হয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রুট মার্চ করা, বুথের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। কনস্টেবল থেকে অফিসার, সব পদেই ঘাটতি থাকায় রাজ্য পুলিশের প্রায় প্রতিটি থানা সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরে নির্ভরশীল।
যদিও কলকাতা পুলিশ এলাকায় এত দিন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা সাহায্যকারীর ভূমিকাতেই থাকতেন। পুলিশকর্মী বা অফিসারদের সঙ্গে থেকে কাজ করেন তাঁরা। যান সামলাতে তাঁদের নিয়োগ করা হলেও সঙ্গে থাকরেন অভিজ্ঞ পুলিশকর্মী। তবে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, টহলের সময়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy