Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

শৃঙ্খলার ছটে দূষণ থেকে রক্ষা সুভাষ সরোবরের

রবীন্দ্র সরোবরের মতো পূর্ব কলকাতার ওই জলাশয়ের দূষণ ঠেকাতে পরিবেশ আদালতের কোনও নির্দেশ ছিল না। তাই আশঙ্কা ছিল ছটের উপচার পড়ে সুভাষ সরোবরের জলের দূষণ হবে। কিন্তু শনিবার সেখানে দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র।

বিধি মেনে: সরোবরে পুজো হলেও জলে পড়েনি পুজোর কোনও উপচার। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বিধি মেনে: সরোবরে পুজো হলেও জলে পড়েনি পুজোর কোনও উপচার। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

কাজল গুপ্ত 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৬
Share: Save:

দূষণ থেকে জল বাঁচল সুভাষ সরোবরে।

রবীন্দ্র সরোবরের মতো পূর্ব কলকাতার ওই জলাশয়ের দূষণ ঠেকাতে পরিবেশ আদালতের কোনও নির্দেশ ছিল না। তাই আশঙ্কা ছিল ছটের উপচার পড়ে সুভাষ সরোবরের জলের দূষণ হবে। কিন্তু শনিবার সেখানে দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। দক্ষিণ কলকাতায় রবীন্দ্র সরোবরে যখন ছটের পুণ্যার্থীরা চরম বিশৃঙ্খলার নজির তৈরি করলেন, তখন সুভাষ সরোবরে ছট পালিত হল পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়েই। যদিও পুজোর পরে সন্ধ্যায় সেখানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উচ্চ গ্রামের বক্স বাজানো হয়।

এ দিন ছটপুজো চলার সময়ে সুভাষ সরোবরে পৌঁছে দেখা যায় বিভিন্ন সংগঠন জলাশয়ের পাড়ে মঞ্চ তৈরি করেছে। সেখান থেকে মাইকে বারবার পুণ্যার্থীদের সতর্ক করা হচ্ছে জলে কোনও ধরনের উপচার না ভাসানোর জন্য। যাতে সরোবরে জল দূষিত না হয়। একই ঘোষণা করতে দেখা গেল পুলিশকেও। সেই ঘোষণাকে গুরুত্ব দিতেও দেখা গেল পুণ্যার্থীদের। জলাশয়ের পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বুকজলে নেমে পুণ্যার্থীরা পুজো সেরে উঠে আসছেন। ফুলমালা-সহ বিবিধ উপচার অন্যত্র সরিয়ে রাখা হচ্ছে। অনেককে দেখা যায় পিতলের গামলা থেকে উপচার নামিয়ে পুজোর পরে ফের তা গামলায় গুছিয়ে নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞাই সার! গেট ভেঙে, প্রশাসনের সামনেই ছটপুজো রবীন্দ্র সরোবরে​

ছটের সঙ্গে জড়িত একটি সংগঠনের এক উদ্যোক্তা ধর্মেন্দ্র প্রসাদের কথায়, ‘‘এই সরোবর আমাদেরই। তাই সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে সরোবরের জল দূষিত না করতে। কিংবা বাজি ফাটিয়ে পরিবেশ দুষণ না করতে। পুলিশ এবং প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করেছে। বাচ্চারা কেউ এক-দু’টি বাজি ফাটিয়ে থাকলেও বড়রা কেউ এমন করেননি। সামগ্রিক ভাবে শৃঙ্খলা মেনেই পুজো হয়েছে।’’

স্থানীয় প্রশাসনের হিসেবে এ দিন সুভাষ সরোবরে পুণ্যার্থীদের জমায়েত এক লক্ষেরও বেশি হয়েছিল। স্থানীয় কলকাতা পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পবিত্র বিশ্বাসের দাবি, ছটের আগে বেশ কয়েক দিন পাড়ায় পাড়ায় পরিবেশ নিয়ে লাগাতার প্রচার এ দিন কাজে এসেছে। পবিত্রবাবু বলেন, ‘‘আমরা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ছটের পুণ্যার্থীদের কাছে প্রচার করেছিলাম যে সুভাষ সরোবর তাঁদেরই। প্রতিদিন ওই পুণ্যার্থীদের অনেকেই সুভাষ সরোবরে আসেন। তাই তাঁরা সমস্যাটি উপলব্ধি করেছেন। কেউ বাজি ফাটাননি। জলে কিছু ফেলেননি। এ দিক সে দিক যা পড়ে রয়েছে রবিবার দুপুরের মধ্যে সব সাফাই হয়ে যাবে।’’ তিনি জানান, গত ক’দিন জলাশয় ও সুভাষ সরোবরের পাড়ও সাফাই করা হয়েছে।

তবে পুজো চলাকালীন সময়ে তাসা বাজাতে দেখা যায় অনেককে। আবার পুজোর পরে শনিবার সন্ধ্যায় সুভাষ সরোবর চত্বরে উচ্চগ্রামে ডিজে বাজিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। যার অনুমতি ছিল না বলেই দাবি করেছে কেএমডিএ। ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি যে ছিল না তা স্বীকার করেছেন উদ্যোক্তারাও।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন অভিনেত্রী জুন মাল্য

নির্বিঘ্নে ছটের পুজো মেটাতে এ দিন সুভাষ সরোবের তৎপর ছিল প্রশাসনও। কলকাতা পুরসভার তিনটি নৌকা ও একটি স্পিডবোট সারা ক্ষণ ডুবুরি নিয়ে জলাশয়ে ঘুরপাক খেয়েছে। যাতে দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। গোটা সরোবর জুড়ে পুলিশি তৎপরতাও ছিল যথেষ্ট। শিশুদের বাজি পোড়াতে দেখলেও তাদের আটকাতে দেখা গেছে পুলিশকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Subhas Sarovar Chhath Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy