Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
CC Camera

তদন্তকারীর ঘরে সিসি ক্যামেরা হেয়ার স্ট্রিট থানায়

সিঁথি থানার ভিতরে পুলিশি জেরা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। পুলিশের মারধরের কারণে তিনি মারা গিয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১২
Share: Save:

এ যেন রোগের আতঙ্কে আগাম সতর্কতা।

সিঁথি থানার ভিতরে পুলিশি জেরা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। পুলিশের মারধরের কারণে তিনি মারা গিয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার আগাম সতর্কতা হিসেবে হেয়ার স্ট্রিট থানায় তদন্তকারী অফিসারের ঘর সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে আনা হল।

হেয়ার স্ট্রিট থানা সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের বসার ঘর, থানার ভিতরের বারান্দা-সহ একাধিক জায়গায় রাতদিনের বিভিন্ন সময়ের ছবি তুলে রাখতে সাতটি সিসি ক্যামেরা গত সপ্তাহে হেয়ার স্ট্রিট থানায় বসানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টাই ক্যামেরা চালু থাকবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের একটি অংশের দাবি, অভিযুক্তদের জেরা বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মূলত তদন্তকারীদের সিসি ক্যামেরাহীন ঘরে। আধিকারিকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয় বলেই তদন্তকারী অফিসারের (আই ও) ঘরে এত দিন সিসি ক্যামেরা লাগানো হত না। ঘটনাচক্রে সিঁথি-কাণ্ডের কিছু দিনের মধ্যেই হেয়ার স্ট্রিট থানায় তদন্তকারী অফিসারের ঘর সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হল। যদিও পুলিশ আধিকারিকদের উপরে নজরদারি চালানোর জন্য ওই ক্যামেরা বসেনি বলেই দাবি থানার আধিকারিকদের।

সিঁথি থানায় সম্প্রতি তদন্তকারী অফিসারের ঘরেই জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার সাউ (৫৪)। আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। চুরির ঘটনায় তাঁকে থানায় ডেকে এনে জেরা করা হচ্ছিল। ওই ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়ে। অস্বস্তিতে পড়তে হয় লালবাজারকে। পুলিশের মারধরের কারণেই রাজকুমারবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর পরিবারের তরফে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন পুলিশ আধিকারিককে সাময়িক ভাবে কাজ থেকে অব্যাহতি (ক্লোজ) দেওয়া হয়। চলতি সপ্তাহেই ওই চুরির ঘটনার তদন্তকারী অফিসার সৌমেন্দ্রনাথ দাসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে লালবাজারের খবর।

সিঁথির ওই ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশ সম্প্রতি একটি নির্দেশিকায় ডিসি-দের নির্দেশ দিয়েছে যে থানার ভিতরে লক-আপ, সেরেস্তা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে কি না, তা দেখে নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে কাউকে গ্রেফতারি ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে হবে। কলকাতা পুলিশের সেই নির্দেশিকায় কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে তদন্তকারী অফিসারের ঘরও সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে রাখতে হবে।

তা হলে আগ বাড়িয়ে কেন হেয়ার স্ট্রিট থানার আধিকারিকেরা তদন্তকারী অফিসারের ঘরে নজরদারির ব্যবস্থা করতে গেলেন? এই উদ্যোগ কি তদন্তকারী অফিসারের ঘর নিয়ে চলা বিতর্ককে ইঙ্গিতপূর্ণ করে তুলছে না?

মানতে নারাজ কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, হেয়ার স্ট্রিটে অফিসারদের ঘরে বসানো ক্যামেরার ছবি সংরক্ষণ করে রাখা হবে অন্য জায়গার মতো। যাতে প্রয়োজনে সেই ছবি খতিয়ে দেখা যায়। বাকি থানাতেও তদন্তকারীদের বসার ঘরে ওই ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও জানান ওই পুলিশকর্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

CC Camera Hare Street Police Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE