প্রতীকী ছবি।
মাঝপথে বদলে যাচ্ছে নম্বর প্লেট। কখনও বদলানো হচ্ছে গাড়ির রং। বদলে যাওয়া নম্বর প্লেটের উপরে লাগানো হচ্ছে ‘পুলিশ’ লেখা স্টিকার! শহর থেকে গাড়ি তুলে নিয়ে গিয়ে এই ভাবে পাচার করে দেওয়ার একটি চক্রকে ধরল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রের দুই পান্ডাকে। ওই চক্রের হদিস মিলেছে যার কথার সূত্রে, গ্রেফতার করা হয়েছে তাকেও।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৬ জানুয়ারি কসবার রাজডাঙা মেন রোডের একটি গ্যারাজ থেকে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেটের একটি সেডান গাড়ি উধাও হয়ে যায়। তদন্তে নেমে কসবা থানা ওই এলাকার কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা শুরু করে। গাড়ির মালিক পুলিশকে জানান, কয়েক বছর ধরে গাড়িটি এক জনই চালাচ্ছেন। কিন্তু ওই দিন তিনি গাড়ি নিয়ে বেরোননি। ওই গাড়িচালকের নিজেরও একটি গাড়ি রয়েছে। সেটি তাঁর ছেলে, বছর উনিশের প্রভাত রায় চালায়। সেটিও গ্যারাজেই থাকে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পুলিশ দেখে, চুরি যাওয়া গাড়িটি কেউ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে সেখান থেকে বাবার গাড়ি নিয়ে বেরোচ্ছে প্রভাত।
এর পরেই তাকে থানায় ডেকে জানতে চাওয়া হয়, সে যখন বেরোচ্ছিল, তখন চুরি যাওয়া গাড়িটি ছিল কি না! গাড়িটি সেখানেই ছিল জানানোর পাশাপাশি প্রভাত জানায়, ওই দিন নিজের গাড়ি এক জায়গায় রেখে শিয়ালদহ থেকে সে ট্রেনে কাঁচরাপাড়া যায়, সেখান থেকে বান্ধবীকে বর্ধমানের ট্রেনে তুলে দেওয়ার জন্য। কাঁচরাপাড়া হয়ে ট্রেনে বর্ধমান যাওয়া সম্ভব নয়। তাই সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। প্রভাতের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে জানা যায়, ওই দিন ট্রেনেই ওঠেনি সে। সড়কপথে বর্ধমান হয়ে দুর্গাপুরের দিকে গিয়েছিল। পরদিন প্রভাতকে লালবাজারে নিয়ে গিয়ে গোয়েন্দা বিভাগের ‘মোটর থেফট সেকশন’-এ জেরা করা শুরু হয়। প্রভাত জানায়, দুর্গাপুর পর্যন্ত গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে গিয়ে সুন্দরম কুমার নামে এক জনকে সেটি দেয় সে। সুন্দরম গাড়িটি দেয় অভিষেক কুমার নামে আর এক জনকে। অভিষেক সেটি নিয়ে যায় বিহারের বৈশালীতে। রাস্তায় বদলানো হয় নম্বর প্লেট। নতুন নম্বর প্লেটে পুলিশ লেখা স্টিকারও লাগানো হয়। দ্রুত বৈশালীতে হানা দিয়ে সোমবার রাতে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় সুন্দরম এবং অভিষেককে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ধৃত দু’জন আন্তঃরাজ্য গাড়ি পাচার চক্রে যুক্ত। তদন্তকারীদের দাবি, এই দু’জন কলকাতা থেকে আগেও গাড়ি তুলে নিয়ে গিয়েছে। বিহার বা ঝাড়খণ্ড হয়ে এই সমস্ত গাড়ি পাচারের কারবার সারা দেশে চলে। টাকার টোপ দিয়ে গাড়ি চালকদের ব্যবহার করা হয়। গাড়ির নম্বর প্লেট বদলে অন্য রাজ্যে চলে গেলে ধরা কঠিন। এ ক্ষেত্রে প্রভাতের ট্রেন ধরার গল্পের ছোট্ট ভুলের কারণে গাড়িটি উদ্ধার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy