চলতি বছরে মেডিকা হাসপাতাল ১৫০ শয্যার নতুন ক্যানসার হাসপাতাল চালু করতে চলেছে। নিজস্ব চিত্র
এক দশক ধরে রোগের সঙ্গে যুদ্ধে করে জয় পেয়েছেন ৪৩বছরের বিমল সাহা। কিন্তু অসুস্থ শরীরে কর্মক্ষমতা কমেছে। আগের মতো দোকানে কাজ করার শক্তি নেই। চিকিৎসা করাতে শেষ হয়ে গিয়েছে জমানো টাকাও। একই রকম অভিজ্ঞতা বছর ৩৮-এর ঠিকাকর্মী সুরজিৎ মৃধারও। ৪৬ বছরের রিমা রায় চাকরি করলেও, চিকিৎসা করাতে এসে পুরনো চাকরির থেকে ভাল সুযোগ পেয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ছিলেন। বর্তমানে প্রত্যেকেই ক্যানসার জয়ী। এ বার তাঁরাই শহরের এক নির্মীয়মাণ বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালে ক্যানসার রোগীদের পরিষেবা দেবেন। শুধু এই তিনজনই নয় বাইপাসের ধারে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ক্যানসার হাসপাতালের অর্ধেক কর্মীই নিয়োগ করা হবে ক্যানসার জয়ীদের মধ্যে থেকে।
চলতি বছরে মেডিকা হাসপাতাল ১৫০ শয্যার নতুন ক্যানসার হাসপাতাল চালু করতে চলেছে। সেখানে ক্যানসার চিকিৎসার আধুনিক পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে জানান ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান অলোক রায়। আর সেই পরিষেবা দেবেন ক্যানসার জয়ীরাই। শুধু এই হাসপাতালের নয়, অন্য হাসপাতালে চিকিৎসার পর সেরে ওঠা ক্যানসার রোগীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অলোক বলেন,‘‘ক্যানসার মানেই সব শেষ নয়। এরপরও নতুন জীবন শুরু করা যায়। সেটার জন্যই ক্যানাসার জয়ীদের নিয়োগের এই সিদ্ধান্ত।’’
অনেক রোগীর দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের চিকিৎসা চলে। কেমোথেরাপি বা দামি ওষুধেরও প্রয়োজন হয়। খরচ চালাতে অনেককে আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের কাছে সাহায্যপ্রার্থীও হতে হয়, বলে জানান ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সৌরভ দত্ত। ক্যানসার থেকে সেরে ওঠার পর অনেকে পুরনো কাজ হারান। সৌরভ বলেন, ‘‘ক্যানসার হওয়ার পর বা দীর্ঘ চিকিৎসায় অনেক রোগী মনোবল হারান, কিন্তু তাঁরা যখন হাসপাতালে ক্যানসার জয়ীদের কাজ করতে বা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেখবেন তাতে তাদের মনোবল বাড়বে। মুখের ক্যানসারে অনেকের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়ে যায়। হতাশাতেও ভোগেন। নতুন হাসপাতালে তাদেরও কাজের কোনও অসুবিধা হবে না।’’
সুরজিৎ এবং বিমলকে হসপাতালের সাফাইকর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। রিমা সামলাবেন রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ। ভবিষ্যতে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী থেকে চিকিৎসা সব স্তরেই ক্যানসার জয়ীদের নিয়োগ করা হবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক সময় রোগীদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্মীরা সমব্যথী হতে পরেন না কিন্তু এখানে যেহেতু অর্ধেক কর্মীই ক্যানসার জয়ী হবেন তাই অন্য রোগীদের প্রতি তাঁরা বেশি যত্নশীল হবেন বলেও মনে করছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে ক্যানসার আক্রান্তরা যখন চিকিৎসার প্রতি পর্যায়ে ক্যানসার জয়ীদের পাশে পাবেন তাঁদেরও মনোবল বাড়বে। এতে চিকিৎসকদের কাজ অনেক সহজ হবে বলে জানান সৌরভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy