বিপদ: মাঝ রাস্তায় বাস থামিয়ে এ ভাবেই চলে যাত্রীদের ওঠানামা। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
হাতিবাগান মোড়। ওই ঘিঞ্জি এবং ব্যস্ত রাস্তায় অবিরাম চলেছে পথচারীদের যাতায়াত। তার মাঝেই দেখা গেল, মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে বেসরকারি একটি বাস। কয়েক মুহূর্ত। বেপরোয়া গতিতে অপর একটি বেসরকারি রুটের বাস এসে আগের বাসকে টপকে সামনে দাঁড়াল। শুরু হল যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা।
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে গিরিশ পার্ক মোড়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এক বাসকে টপকে কোন বাস আগে যাবে, তার দৌড় চলতে থাকে এখানে। শুধু এই গিরিশ পার্ক মোড় নয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে বাস-বে বলে কিছু আছে বলেই মনে হয় না। এখানে প্রতি দিন সেটা লঙ্ঘন করাই চালকদের নিয়ম হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। উত্তর কলকাতায়, বিশেষ করে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে প্রায় প্রতিদিনই মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা-নামানো করে থাকে একাধিক বাস। বৃহস্পতিবারও দেখা গেল, এমন দৃশ্য। যার জেরে দুর্ঘটনা ঘটে প্রায়ই।
চলতি সপ্তাহের সোমবারই শহর সাক্ষী থেকেছে তেমনই এক দুর্ঘটনার। কসবা পোস্ট অফিসের সামনে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন বছর একুশের যুবক অবিনাশ সাউ। অভিযোগ, বেসরকারি রুটের একটি বাসকে তিনি হাত দেখালে সেটি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যায়। ইনস্টিটিউট যাওয়ার তাড়ায় যুবকও ছোটেন বাস ধরতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, সেই সময়ে বেপরোয়া গতিতে পিছন থেকে ছুটে আসে অপর একটি বেসরকারি রুটের বাস। দাঁড়িয়ে থাকা বাসটির বাঁ দিক থেকে এসে এমন ভাবে সেটি দাঁড়ায় যে অবিনাশ দু’টি বাসের মাঝে পিষে যান। তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ চালক-সহ বাস দু’টি আটক করেছে। বেপরোয়া গতিতে বাস চালিয়ে জীবন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। তার পরেও অবশ্য দক্ষিণের মতোই উত্তর কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ঘুরে দেখা যাচ্ছে একই ছবি।
প্রশ্ন উঠেছে, এত দুর্ঘটনার পরেও কী ভাবে বাসচালক এবং কন্ডাক্টরেরা নিয়ম ভেঙে পার পেয়ে যাচ্ছেন? যাত্রীদের কথায়, আইনের বিষয়ে ট্র্যাফিককে আরও কড়া হতে হবে। তা হয় না বলেই একের পর এক পথের বলি হচ্ছেন অনেকে। ট্র্যাফিক পুলিশের অবশ্য দাবি, বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো বা আইন ভাঙায় যাত্রী বা পথচারীর জীবন সংশয় হলে দ্রুত চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে শাস্তিও হয়।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ডিসি রূপেশ কুমারের কথায়, ‘‘অভিযোগ দায়ের হওয়ার ফলে আগের থেকে দুর্ঘটনা অনেক কমেছে। কখনও কখনও ট্র্যাফিকের গতি সচল রাখতে সেই মুহূর্তে হয়তো বাসটিকে কেস দেওয়া যায় না। শুধু নম্বর লিখে রাখা হয়। পরে সেই নির্দিষ্ট নম্বরের বাসগুলির বিরুদ্ধে কেস দিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy