ডিজিটাল গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। সেই গ্রেফতারির ভয়ে দু’মাস কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন এক প্রবীণ দম্পতি। তারও কিছু দিন পরে, ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। দমদম থানা এলাকার এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, দমদম থানার আর বি সি রোডের বাসিন্দা এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ওই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, মাসদুয়েক আগে দম্পতির কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। তাঁদের বলা হয়, টেলিকম সংস্থার তরফে ফোন করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্থিক তছরুপের মামলা হয়েছে। সিবিআই তার তদন্ত করছে। তাতেই ডিজিটাল গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দম্পতিকে।
এ-ও বলা হয়, এই মামলার তদন্তে নরেশ গোয়েল নামে এক জনের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সূত্রে দমদমের ওই বাসিন্দাদের যোগসূত্র মিলেছে। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। এর পরে জাল নির্দেশনামা পাঠিয়ে বলা হয়, ৫২ লক্ষ টাকা দিতে হবে, যা যাবে সুপ্রিম কোর্টের সাসপেনশন অ্যাকাউন্টে। তার পরেই ওই দম্পতি নিজেদের মিউচুয়াল ফান্ড, স্থায়ী আমানত ভেঙে ৬ দফায় ৫২ লক্ষ টাকা দিয়ে দেন প্রতারকদের। টাকা পাওয়ার পরেই মোবাইলের স্ক্রিন থেকে উধাও হয়ে যায় প্রতারকেরা।
অভিযোগকারী ব্যক্তির স্ত্রী জানান, তাঁদের মোবাইলের ক্যামেরা খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল প্রতারকেরা। বাড়ি থেকে বেরোনোও বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সর্বদা নজরে রাখত। বলা হত, দম্পতির সুরক্ষার খাতিরে চলছে নজরদারি। তবে প্রতারকেরা উধাও হওয়ার পরেও আতঙ্কে পুলিশের দ্বারস্থ হননি দম্পতি। শেষে চলতি মাসে তাঁরা দমদম থানায় যান। যদিও অভিযোগ, পর পর পাঁচ দিন থানায় গেলেও পুলিশের পর্যাপ্ত সহযোগিতা মেলেনি। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে পুলিশের দাবি, অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে।
স্থানীয়দের একাংশের মতে, সাইবার অপরাধীরা প্রবীণ ব্যক্তিদের নিশানা করছে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হলেও অনেকেই না বুঝে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এমন অপরাধের বিষয়ে সচেতন করতে লাগাতার প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)