ঘাতক বাস। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক মাসে বেসরকারি রুটের বাসটির বিরুদ্ধে ৪৮৬ বার ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৪৫ বার ওই বাসের বিরুদ্ধে সাইটেশনের মামলা রয়েছে। এ ছাড়া, নির্দিষ্ট সময়ে জরিমানার টাকা না মেটানোয় ওই বেসরকারি বাসটির বিরুদ্ধে আরও ৩৪১টি মামলা আদালতে বিচারাধীন।
লালবাজার জানিয়েছে, উপরের হিসাবটি গড়িয়া স্টেশন থেকে বাগবাজার রুটের সেই বেসরকারি বাসের, যার ধাক্কায় শনিবার সকালে বাঘা যতীন উড়ালপুলে এক স্কুটার আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। জরিমানার টাকা জমা না দিয়েও বহাল তবিয়তে রাস্তায় যাত্রী পরিবহণ করছিল বাসটি। পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু ওই বেসরকারি বাসই নয়, দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়ি ধরা পড়ার পরে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেটির নামে প্রচুর জরিমানা বকেয়া রয়েছে। শহরের রাস্তায় সব চেয়ে বেশি ট্র্যাফিক আইন ভাঙে বেসরকারি বাসই। তাই বেসরকারি বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগও সব চেয়ে বেশি। ‘স্পট ফাইন’ ছাড়া সাইটেশনের মামলায় জরিমানার টাকা ঠিক সময়ে বাসমালিকেরা দেন না বলে অভিযোগ। শুধু বাস নয়, শহরের অন্য গাড়ির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। এ বার ওই জরিমানা না দিয়ে রাস্তায় বাস বা অন্য গাড়ির চলার ক্ষেত্রে রাশ টানতে চাইছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার পরে বকেয়া জরিমানা না দিলে বাস বা কোনও গাড়িই যাতে ফিটনেস সার্টিফিকেট ও দূষণের সার্টিফিকেট না পায়, তার জন্য পরিবহণ দফতরকে চিঠি দিয়েছে লালবাজার। ওই প্রস্তাবে লালবাজার বলেছে, গাড়িগুলির কর, পারমিট, ফিটনেস ও দূষণের সার্টিফিকেট পরিবহণ দফতর থেকে নিতে হলে প্রথমে যেন কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে ‘নো অবজেকশন’ ছাড়পত্র নেওয়া হয়। জরিমানা বকেয়া না থাকলে তবেই পুলিশ ওই ছাড়পত্র দেবে। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিবহণ ভবনে। যা বর্তমানে পরিবহণ দফতরে আলোচনার স্তরে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গুরুতর কোনও ট্র্যাফিক আইন অমান্য না করলে কোনও বাস বা গাড়ি আটক করা হয় না। দুর্ঘটনা বা গুরুতর অপরাধ করলে তবেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। অন্য ক্ষেত্রে কখনও স্পট ফাইন করা হয়, আবার কখনও তা বকেয়া থাকে। ট্র্যাফিক আইন অমান্য করলে সাইটেশন কেসের জরিমানাই মূলত বকেয়া থাকে। আর ওই সুযোগ নিয়ে গাড়ির মালিকদের জরিমানার টাকা ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, গত পাঁচ বছরের হিসাব অনুযায়ী, এই খাতে বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৬৭ কোটি ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ২১৪ টাকা। পরিবহণ দফতর পুলিশের থেকে ‘নো অবজেকশন’ ছাড়পত্র নিয়ে ওই ব্যবস্থা চালু করলে জরিমানার টাকা ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমবে। কারণ জরিমানা দিলে তবেই রাস্তায় নামার অনুমতি মিলবে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব খাতে আয়ও বৃদ্ধি পাবে।
করোনার আগে দু’বার কলকাতা পুলিশ জরিমানার টাকা আদায়ের জন্য এককালীন ছাড় দিয়েছিল। তার পরেও দেখা যাচ্ছে, বিপুল পরিমাণে জরিমানা বকেয়া। যা অভিযুক্ত গাড়িমালিক বা চালক সরকারের ঘরে জমা না দিয়েই রাস্তায় বেরোচ্ছেন। সূত্রের দাবি, গত পাঁচ বছরে সব চেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy