প্রতীকী ছবি।
ঘরের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছেন এক মহিলা। দরজায় শিকল তুলে বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। এমনই অভিযোগ করেছিলেন মহিলার ভাই। সেই তরুণী সীমা মল্লিক (১৮) বুধবার মারা গেলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দিদির মৃত্যুর পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সীমার ভাই সুমন ও তাঁর মা-বাবা। পণের দাবিতেই তাঁকে এমন নির্মম ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে সীমার শ্বশুর শিবু মল্লিক ও শাশুড়ি দীপা মল্লিককে। তবে মৃতার স্বামী মৃত্যুঞ্জয় পলাতক।
পুলিশ জানিয়েছে, শাসন থানার সর্দারহাটির বাপি মণ্ডলের মেয়ে সীমার সঙ্গে দু’বছর আগে বিয়ে হয় দেগঙ্গার শ্বেতপুরের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয়ের। তাঁদের সাত মাসের একটি ছেলে আছে। গত শনিবার কালীপুজো উপলক্ষে দিদির বাড়িতে যান সুমন। এ দিন সুমন বলেন, ‘‘রবিবার দেখি, ঘরে দাউ দাউ করে জ্বলছে দিদি। চিৎকার করলেও কেউ বাঁচাতে যাচ্ছে না।’’ কোনও মতে আগুন নেভান সুমন ও পড়শিরা। সুমনের অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকে আরও পণের দাবিতে দিদির উপরে অত্যাচার চালাত স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। ওরাই মেরেছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, সীমাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে আরজি করে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরের একশো শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। বুধবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। সীমার শ্বশুর শিবু বলেন, ‘‘আমি স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকি। ছেলে-বৌমাও আলাদা থাকে। এ সবের কিছুই জানতাম না।’’
সীমার বাবা বাপি বলেন, ‘‘দেখাশোনা করেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। পাত্রপক্ষের দাবি মতো টাকা-গয়না, খাট— সব দিয়েছিলাম। তার পরেও টাকার দাবিতে মেয়ের উপরে অত্যাচার চলত।’’ কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ বলেন, ‘‘মেয়েটাকে যে পুড়িয়ে মারবে, ভাবিনি। আরও পণের দাবিতে আমার মেয়ে বলি হল, সাত মাসের নাতিটাও মাকে হারাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy