Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Bowbazar

সেকরাপাড়ায় ফের হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাড়ি, বিপজ্জনক চিহ্নিত আরও ২০টি

এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ৯ নং সেকরা পাড়া লেনের একটি দোতলা বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ওই বাড়ির বাসিন্দা চিরঞ্জিত্ সেন বলেন, “এ দিন সকালে যখন পাড়ার গলির সামনে আসি তখন জানতে  পারি আমাদের বাড়িটা ভেঙে পড়েছে।”

বৌবাজারে ভেঙে পড়া বাড়ি। ছবি: পিটিআই

বৌবাজারে ভেঙে পড়া বাড়ি। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:০২
Share: Save:

বৌবাজার এলাকা যেন আতঙ্কপুরী! নতুন করে বুধবার সকালেও সেকরা পাড়া লেনে ভেঙে পড়ল একটি বাড়ি। ওই এলাকার অন্য কয়েকটি বাড়িতেও বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। সেগুলো যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বলে আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। অন্য দিকে, গৌর দে লেনের বস্তিবাসীদের এ দিন বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। ফলে নতুন করে ফের গৃহহীন হয়ে পড়লেন বহু মানুষ। বৌবাজারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সকালেই তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল সেখানে গিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকার আরও ২০টি বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ায় সেগুলোকে বিপজ্জনকের তালিকায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর পাশাপাশি নবান্নেও পৌঁছেছে।

এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ৯ নং সেকরা পাড়া লেনের একটি দোতলা বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ওই বাড়ির বাসিন্দা চিরঞ্জিত্ সেন বলেন, “এ দিন সকালে যখন পাড়ার গলির সামনে আসি তখন জানতে পারি আমাদের বাড়িটা ভেঙে পড়েছে। কয়েক দিন হল গোটা পরিবারকে নিয়ে চাঁদনি চকের একটি হোটেলে আমরা উঠেছি। প্রতি দিনই সকালে এক বার করে আসি এলাকাটা দেখতে। কিন্তু আমার বাড়ি ভেঙে পড়বে ভাবতে পারিনি। বাড়ির ভিতরে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে। শখের ৬০-৭০টি পাখি রয়েছে। মনে হয়ে ওরা বেঁচে নেই।” মা, বোন, ঠাকুরদা এবং চারটে কুকুর নিয়ে চাঁদনি চকের ওই হোটেলে রয়েছেন চিরঞ্জিত্। তাঁর মতোই কলকাতার সাতটি হোটেল প্রায় ৪০০ জন রয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ওই বাসিন্দাদের পরিবারের এক জন করে নিজেদের বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে ঠিকই। কিন্তু তাঁরা জানাচ্ছেন এমন ভয়ানক পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে এলাকায় যে তাঁরা বাড়িতে ঢুকতেই ভয় পাচ্ছেন।

সেকরা পাড়া লেনেরই এক মহিলা অন্যদের মতো নিজের বাড়িটা দেখতে এসেছিলেন এ দিন সকালে। কিন্তু বাড়ির পরিস্থিতি দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। ওখানেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেকরা পাড়া লেনের মতো আতঙ্কের একই ছবি ধরা পড়েছে দুর্গা পিতুরি লেন, গৌরী দে লেনের বিস্তীর্ণ অংশে। মঙ্গলবারই ১৩ এ দুর্গা পিতুরি লেনে একটি বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তার পর ফের এ দিন ভেঙে পড়ল বাড়ি।

বুধবার সকালে এই গলিতেই ভেঙে পড়েছে একটি বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

অন্য দিকে, সেকরা পাড়া লেন লাগোয়া হিদারাম ব্যানার্জি লেনেরও বহু বাড়িতে ফাটলের ছবি ধরা পড়ছে। ফলে বৌবাজার এলাকা জুড়ে এখন ত্রাহি ত্রাহি রব। বৌবাজারের নীচে টানেলে বোরিং মেশিন ঢোকানোর আগে বেশ কিছু দুর্বল বাড়ি চিহ্নিত করেন কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বিপর্যয় এড়াতে সেগুলো লোহার খাঁচার সাপোর্ট দেয় কেএমআরসিএল। কিন্তু তাতেও বিপর্যয় এড়ানো যায়নি। মাটি বসে সুড়ঙ্গে জল ঢুকে পড়ায় এই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের। আপাতত ওই এলাকাগুলো জনশূন্য হয়ে রয়েছে। শুধু দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাঙচোরা বা়ড়িগুলো।

আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তূপে একা পাখিরা! ওরা কী বেঁচে রয়েছে?

আরও পড়ুন: বৌবাজারে বিপর্যয়ের জেরে দেরি হবে প্রকল্পে, জানাল মেট্রো

অন্য বিষয়গুলি:

Bowbazar Building Collapse East West Metro Kolkata Metro ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy