Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ধস বন্ধে তৃতীয় দেওয়াল মেট্রোয়

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কর্তারা সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না। তবে শুক্রবার সারা দিনে বৌবাজারে নতুন করে আর কোনও বাড়ি ভেঙে পড়েনি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০১
Share: Save:

সুড়ঙ্গে ধস নামা বন্ধ হয়েছে কি? কেটে গিয়েছে কি ধস নামার আশঙ্কা?

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কর্তারা সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না। তবে শুক্রবার সারা দিনে বৌবাজারে নতুন করে আর কোনও বাড়ি ভেঙে পড়েনি। মাটি বসে যাওয়ার মাত্রাও আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে বলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি।

ধস দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সুড়ঙ্গের বদ্ধ অংশে জলের চাপ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। সেই জন্য টানেল বোরিং মেশিনের পিছন দিকে যে-দ্বিস্তরীয় দেওয়াল তৈরি করা হয়েছিল, তাতে নতুন একটি স্তর যোগ করা হচ্ছে। সেই কাজ শুরু হয়েছে শুক্র-সন্ধ্যায়।

ধস নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যে-সব আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তাঁদের নিয়ে চার সদস্যের একটি কোর গ্রুপ তৈরি করেছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সিঙ্গাপুরের সুড়ঙ্গ-বিশেষজ্ঞ জন এন্ডিকটকে ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি ছাড়াও ওই কোর গ্রুপে রয়েছেন ক্রিস্টোফার ব্রিজ, ভূতত্ত্ববিদ কুমার পিচ্ছুমণি এবং প্রযুক্তিবিদ সুমন দত্ত। কোর গ্রুপকে সাহায্য করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ পল ভেরল। এ ছাড়াও কোর গ্রুপকে সাহায্য করবেন রাশিয়ার গ্রাউট বিশেষজ্ঞ কিরিল শ্রামকো। সুড়ঙ্গের অভ্যন্তরে এবং বৌবাজার অঞ্চলে মাটির উপরে কী পরিবর্তন হচ্ছে, তার খুঁটিনাটির উপরে নজরে রাখছে ওই গ্রুপ। প্রতিদিন সকাল ৯টা এবং সন্ধ্যা ৬টায় বৈঠকে বসে তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে বলে ঠিক হয়েছে।

সুড়ঙ্গের কাছাকাছি যে-সব বাড়ি রয়েছে, সেগুলোর অবস্থা যাচাই করার জন্য পাঁচ সদস্যের অন্য একটি কমিটি তৈরি করেছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএলের কর্তারা। পাঁচ সদস্যের ওই কমিটিতে রয়েছেন কাঠামো-বিশেষজ্ঞ নীতিন সোম, অম্বরীশ মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ ঘোষ, কুমার পিচ্ছুমণি এবং তাইল্যান্ডের প্রযুক্তিবিদ কেএন ওয়াং। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, বিপজ্জনক বা হেলে পড়া বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা হবে। তবে যে-সব বাড়ির কাঠামোর তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি বলে বাইরে থেকে মনে হচ্ছে, সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন বিশেষজ্ঞেরা।

এ দিন পর্যন্ত বৌবাজারের ৫৩টি বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেএমআরসিএল-কর্তারা। এ-পর্যন্ত মোট ৫১৫ জনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আরও ১১টি বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কলকাতা পুলিশ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের শংসাপত্রের ভিত্তিতে স্থানান্তরিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রাথমিক তালিকা কেএমআরসিএল-কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছেছে। সেই তালিকার ভিত্তিতে আজ, শনিবার থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হতে পারে।

হাওড়ামুখী সুড়ঙ্গে জলে ডুবে থাকা বহু কোটি টাকার টিবিএম বা টানেল বোরিং মেশিনটিকে আর কাজে লাগানো যাবে না বলেই মনে করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশ। বহুমূল্য ওই যন্ত্রটিকে পরে বৌবাজারে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হবে। সুড়ঙ্গের বাকি অংশের কাজ শেষ করার জন্য শিয়ালদহের দিক থেকে কাজ শুরু করা হতে পারে। সে-ক্ষেত্রে শিয়ালদহমুখী সুড়ঙ্গ খনন শেষ হলে ওই টিবিএম-ই ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এই বিষয়ে সরকারি স্তরে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Metro Kolkata East West Metro Landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy