হনুমানের ছবি দেওয়া লকেটটি সম্বিতবাবুর বলে চিহ্নিত করেছেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। নিজস্ব চিত্র।
তাইওয়ান নৌবাহিনীর উদ্ধার করা দেহই কি নিখোঁজ বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার সম্বিত মজুমদারের? প্রায় পচে গলে যাওয়া দেহের সঙ্গে পাওয়া হনুমানের ছবি দেওয়া লকেট এবং সোনার চেন, পরনের পোশাক দেখে এমনটাই সন্দেহ সম্বিতবাবুর পরিবারের।
বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা ৫০ বছরের সম্বিত মজুমদার রহস্যজনক ভাবে গত ১৭ জুন তেলবাহী জাহাজ এমটি সেরেংগেটি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। ওই জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়র পদে কর্মরত ছিলেন সম্বিতবাবু। নাইজেরিয়ার এসক্রাভোস তেলের খনি থেকে তেল বোঝাই করে দক্ষিণ কোরিয়ার ডায়সান বন্দরের দিকে রওনা হয় সেই জাহাজ। মাঝে সিঙ্গাপুরের বন্দরেও থামে জাহাজটি। ডায়নাকন ট্যাঙ্কার ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার হয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এম টি সেরেংগেটি জাহাজে কাজে যোগ দেন সম্বিতবাবু।
সম্বিতবাবুর স্ত্রী জয়তীর কথায়, ‘‘গত ১৮ জুন ডায়নাকন কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফোন করে জানান যে, ১৭ জুন সকাল থেকে উধাও সম্বিতবাবু। জয়তী বলেন, ‘‘ জাহাজ সংস্থা আমাকে শুধু জানিয়েছে, ১৬ জুন রাতে স্থানীয় সময় ৮ টা নাগাদ সবার সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নিজের কেবিনে চলে যান সম্বিত। পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্টের সময় থেকে তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। চলন্ত জাহাজ থেকে মাঝ সমুদ্রে কি উবে গেলেন আমার স্বামী?’’
এর মধ্যে সম্বিতবাবুর কোনও খোঁজ মেলেনি। গত ৩ জুলাই তাইওয়ানের একটি ইংরেজি সংবাদপত্র ‘তাইওয়ান নিউজ’-এর একটি খবর চোখে পড়ে সম্বিতবাবুর পরিবারের। ওই সংবাদে জানানো হয়েছে, তাইওয়ানের নৌবাহিনী সমুদ্রে রুটিন টহল দেওয়ার সময় তাইতুং এলাকার উপকূলে সমুদ্রের মধ্যে একটি দেহ ভাসতে দেখে। নৌবাহিনীর পক্ষ থেকেই খবর দেওয়া হয় সে দেশের উপকূল রক্ষী বাহিনীকে। উপকূলবর্তী শহর চাংবিঙ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে সেই দেহ উদ্ধার করে উপকূল রক্ষী বাহিনী। সেখানকার স্থানীয় পুলিশকে উদ্ধৃত করে তাইওয়ানের ওই সংবাদপত্র জানিয়েছে, ‘‘দেহটি দেখে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসক এবং তদন্তকারীদের ধারণা, দীর্ঘসময় জলে ছিল দেহটি। পচে গলে গিয়েছে। দেহের সঙ্গে কোনও পরিচয় পত্র পাওয়া যায় নি।’’ সেই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘মৃতের শরীরে পাওয়া গিয়েছে হিন্দুদের দেবতা হনুমানের ছবি দেওয়া একটি লকেট, সঙ্গে সোনার চেন।’’ মৃতের পরনে ছিল ক্রোকোডাইলের লোগো দেওয়া গাঢ় নীল রঙের পোলো শার্ট, ধূসর শর্টস এবং পায়ে কালো চটি।” মৃতের দেহের দৈর্ঘ্য ১.৮০ মিটার বলে বর্ণনা করেছে ওই সংবাদপত্র।
আরও পড়ুন: সরকারি হিসেবে বহাল কোভিড শয্যা, বাস্তবে চলছে ভোগান্তি
সম্বিতবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শার্ট, শর্টস এবং জুতোর যে বর্ননা পাওয়া গিয়েছে, ওই রকম সবই সম্বিতবাবু এমটি সেরেংগেটি জাহাজে কাজে যোগ দেওয়ার আগে কিনেছিলেন। তাঁরা ওই হনুমানের ছবি দেওয়া লকেটটিও সম্বিতবাবুর বলে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা পারিবারিক বন্ধুদের মাধ্যমে তাইওয়ান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। জানা গিয়েছে, দেহটি চিহ্নিতকরণের জন্য ডিএনএ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তবে কী ভাবে মৃত্যু তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: সংক্রমিত বিধাননগর পুলিশের কর্তা, স্ত্রী এবং রক্ষী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy