Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
State news

বডি প্যাচে মাদকের নেশা! নয়া কৌশলে প্যাঁচে গোয়েন্দারাও

বাজারে আসার পরই টিনেজারদের কাছে প্রচণ্ডভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নয়া এই মাদক।

এই রকমই দেখতে বডি প্যাচ ড্রাগ

এই রকমই দেখতে বডি প্যাচ ড্রাগ

সিজার মণ্ডল
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৫৩
Share: Save:

ক্লাসরুমে বা সিনেমা হলে বসেই চলছে ‘শুকনো’ নেশা। এক্কেবারে পাশে বসা মানুষটিরও তা বুঝে ওঠার উপায় নেই। লোকজন-ভিড়ভাট্টার মধ্যে থেকেও, এমন লোকচক্ষুর আড়ালে নেশার উপায় চলে এসেছে এ দেশে। কলকাতাতেও যে ঢুকে পড়েনি, এমন কথা হলফ করে বলতে পারছেন না গোয়েন্দারা। নতুন পদ্ধতিতে গাঁজা বা হাসিসের মতো জিনিস আর ছিলিম বা সিগারেটে ভরে খাওয়ার আর দরকার নেই। গায়ের চামড়ায় ট্যাটুর মত একটা স্টিকারই যথেষ্ট নেশার আমেজ পেতে। এলএসডি, সাইকোট্রপিক মাদকের পর এ বার ঢুকে পড়েছে বডি প্যাচ ড্রাগ। মাদকের বাজারে এই নয়া আমদানি কার্যত ঘুম ছুটিয়েছে গোয়েন্দাদের। বাজারে আসার পরই টিনেজারদের কাছে প্রচণ্ডভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নয়া এই মাদক।
সম্প্রতি কমলেশ বাসতে নামে এক ছাত্রকে নাসিক থেকে গ্রেফতার করে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো। কলকাতায় ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের মধ্যে বিভিন্ন রকম পার্টি ড্রাগ পাচারের মূল পাণ্ডা এই বাসতে। তাকে জেরা করেই এই বডি প্যাচ ড্রাগের হদিশ পান গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের দাবি, বডি প্যাচ ড্রাগ অনেকটা একটা স্টিকারের মত, যা চামড়ার ওপর লাগিয়ে দিলে ধীরে ধীরে ওই স্টিকারের মধ্যে থাকা রাসায়নিক ব্যবহারকারীর রক্তে মিশতে শুরু করে। এ ধরণের কিছু ব্যথার ওষুধ বাজারেও পাওয়া যায়। সেই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে মাদক কারবারীরা। খালি সেই স্টিকারের মধ্যে ওষুধের বদলে থাকছে মাদক। স্টিকার শরীরের যে কোনও অংশে চামড়ার উপর লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে মাদক ধীরে ধীরে রক্তে মিশতে শুরু করে। নেশার আমেজ পেতে শুরু করেন ব্যবহারকারী।

আরও পড়ুন: সেক্স, ড্রাগ অ্যান্ড... জড়িয়ে যাচ্ছে শহরের নামী স্কুলের ছাত্রীরা!

নাসিক থেকে ধৃত পার্টি ড্রাগ পাচারের মূল পাণ্ডা কমলেশ বাসতে

কমলেশকে জেরা করে ডার্ক ওয়েবে রেডিট ডট কম এবং ডিএনএম ইন্ডিয়ার মত কয়েকটি সাইটের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যেগুলির মাধ্যমে এই নয়া মাদকের রমরমা কারবার চালানো হচ্ছে। তদন্তকারীদের দাবি, এখন পর্যন্ত বাজারে যে বডি প্যাচ ড্রাগ মিলছে তার মূল উপাদান গাঁজা বা চরস। অর্থাৎ, ওই মাদক স্টিকার লাগালেই চরসের আমেজ। ডার্ক ওয়েবে এ রকম একটি মাদক স্টিকারের দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। বেশি দাম হওয়া সত্বেও ছাত্র ছাত্রীদের কাছে এই মাদক জনপ্রিয় কারণ যে কোনও জায়গায় এই মাদক ব্যবহার করা যায়। স্কুল কলেজে ব্যবহার করলেও ধরা পড়ার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। প্রধানত ইউরোপ থেকে এই মাদক আমদানি করা হচ্ছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তার পর এ দেশের মাদক কারবারীরা ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে ছাত্র ছাত্রীদের কাছে। এন সি বি-র আঞ্চলিক অধিকর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব এই নয়া মাদক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই শহরেও এই মাদক ছড়িয়ে পরতে পারে। আমরা একাধিক নামী স্কুল কর্তৃপক্ষর সঙ্গে আলোচনা করেছি। সচেতনতা শিবিরও করব আমরা। সতর্ক থাকতে হবে শিক্ষক শিক্ষিকা ও অভিভাবকদেরও।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE