— প্রতীকী চিত্র।
মাত্র ২৭ বছর বয়সেই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন রবি (নাম পরিববর্তিত)। হাত, পা-ও নাড়াতে পারতেন না। নিশ্বাসেরও প্রবল সমস্যা ছিল। কার্যত বিছানাতেই দিন কাটত যুবকের। রবিকে সারিয়ে তুলতে কম চেষ্টা করেনি তাঁর পরিবার। কিন্তু সঠিক রোগের সন্ধান দিতে পারেননি কোনও চিকিত্সকই। অবশেষে মাস তিনেক আগে প্রতিবেশী দেশ থেকে কলকাতায় চিকিত্সা করাতে আসেন রবি। ভর্তি হন সিএমআরআই-এ। সেখানে রবির মাথার অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করার সিদ্ধান্ত নেন নিউরোলজিস্ট দীপ দাস। দেখা যায় এক বিরল রোগের শিকার রবি। যার পোশাকি নাম মোয়ামোয়া। এরপর শুরু হয় তাঁর চিকিত্সা। নিউরোলজিস্ট রুদ্রজিত্ কাঞ্জিলাল ও তাঁর টিম রবির ব্রেনের অস্ত্রোপচার করেন। তা সফলও হয়। তিন মাস পর যখন রবি ফলোআপের জন্য সিএমআরআইতে আসেন তখন তাঁর দৃষ্টি ফিরেছে। সাইড ভিশন না এলেও সামনাসামনি দেখতে তেমন কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। পাশাপাশি হাত-পায়ের অসাড় অবস্থাও কেটে গিয়েছে বলে দাবি করলেন সিএমআরআই-এর কর্পোরেট কমিউনিকেশনের প্রধান পিয়াসি রায়চৌধুরী।
আরও পড়ুন, বাঁচতে হুড়োহুড়ি, ওটিতে একা রোগী
মোয়ামোয়া কী?
চিকিত্সক কাঞ্জিলাল জানালেন, বংশগত এই রোগের প্রথম খোঁজ পাওয়া যায় জাপানে। ভারতে এখনও এ রোগ বিরল। জানা তো দূরের কথা, নামই শোনেননি বেশির ভাগ মানুষ। তবে ধীরে ধীরে ভারতীয়দের মধ্যেও এই রোগের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে। ডায়গনিসিস বাড়ছে। তাই ট্রিটমেন্টও বাড়ছে। আর রবির অস্ত্রোপচারের পর বোঝা যাচ্ছে, সঠিক ডায়গনিসিস হলে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই।
রোগীর কী সমস্যা হয়?
মাথায় ধোঁয়ার মতো রক্তকণা জমা হতে থাকে। ব্লাড ভেসেলস্গুলি বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে ব্রেনের ওই অংশের কাজ করার ক্ষমতা চলে যায়। ফলে দেহের এক একটি প্রত্যঙ্গ একটু একটু করে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
উপসর্গ কী?
চিকিত্সক কাঞ্জিলালের কথায়, ‘‘শিশুদের ক্ষেত্রে দেরিতে কথা বলা শেখে। যারা স্কুলে যাচ্ছে তাদের পড়ার সমস্যা, শেখার সমস্যা হয়। আর অ্যাডাল্টদের মাথার যন্ত্রণা বা মৃগী রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে অস্ত্রোপচার ছাড়া এর কোনও চিকিত্সা নেই।’’
রবি আপাতত সুস্থ। মোয়ামোয়ার আতঙ্ক কাটিয়ে ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। তবে সচেতন হওয়াটা জরুরি। উপসর্গ দেখলেই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy