সভায় ঢোকার মুখে বাজেয়াপ্ত করা কালো পোশাক। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
‘‘সঙ্গে কালো রঙের কিছু নেই তো?’’ পোশাক থেকে পকেটের রুমাল— কড়া নজর ছিল সবেতেই। কালো কিছু দেখলেই দ্রুত তা বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।
রবিবার অমিত শাহের জনসভায় যে কোনও রকম বিক্ষোভ এড়াতে এমনই কালো ‘ফতোয়া’ জারি করেছিল বিজেপি। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গত কলকাতা সফরে কালো জিনিস নিয়ে প্রতিবাদ দেখিয়েছিলেন অনেকেই। কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি কালো বেলুনও ওড়ানো হয়েছিল। সেই কালো-প্রতিবাদ রুখতেই এ দিন শহিদ মিনার চত্বরের জনসভায় বাড়তি সাবধানি ছিল তারা।
জনসভায় ঢোকার গেটে দাঁড়িয়ে কয়েক জন কর্মকর্তা। গেট দিয়ে ঢোকার সময়ই পকেটে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘কী আছে পকেটে? কালো রুমাল নেই তো? রুমালের রং দেখান।’’ সে রং লাল, নীল, হলুদ, সবুজ যাই হোক, ক্ষতি নেই। কিন্তু কালো হলেই বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছিল। তবে সভা শেষে বাজেয়াপ্ত রুমাল ফেরতের আশ্বাস মিলছিল।
এক কর্মকর্তার যুক্তি, ‘‘যদি সভায় কালো রুমাল ওড়ান কেউ? তাই ঝুঁকি নিচ্ছি না।’’ শুধু কালো রুমালই নয়, এ দিন কালো রঙের জ্যাকেট, টুপি, স্কার্ফ, প্লাস্টিকও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছিল। বিজেপির এক কর্মকর্তার কথায়, ‘‘শেষ বার শহরে প্রধানমন্ত্রীর সফরে নেতাজি ইন্ডোরের সামনে এক জন কালো পতাকা দেখাতে গিয়েছিলেন। এ বার তেমন কিছু হতে দেওয়া যাবে না।’’
সভার সব গেটেই চলছিল এই কালো-পরীক্ষা। হাওড়া জেলার বিজেপি যুব মোর্চার এক কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য পকেট থেকে একগোছা কালো রুমাল বার করে দেখালেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত কালো রুমাল। কয়েকটা তো সদ্য কেনা।’’ পাশের এক জন মুচকি হেসে বলেন, ‘‘কালো রুমাল কেন সদ্য কিনেছে, তা কি বুঝি না?’’
কালো জামা এবং টি-শার্ট পরে ঘুরছিলেন কয়েক জন যুবক। এক কর্মকর্তার কথায়, ‘‘যাঁরা কালো রঙের পোশাক পরে এসেছেন, সভায় তাঁদের উপরে নজর থাকছে।’’ জনসভায় ঢুকতে চাওয়া এক যুবকের হাতের কালো জ্যাকেট জমা নেওয়া নিয়ে রীতিমতো বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন কয়েক জন কর্মকর্তা। কালো রঙের উলের টুপি মাথায় আসা এক প্রৌঢ়কে কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘‘শীত তো চলে গিয়েছে! জ্যাকেট-টুপির কী দরকার?’’ এক বিজেপি সমর্থক তাঁর প্রিয় কোনও নেতার গলায় পরাতে কালো পলিথিনে করে ফুলের মালা এনেছিলেন। পলিথিন জমা রেখে মালা হাতে ঢোকার অনুমতি মিলল তাঁর। জয়িতা দে নামে বিজেপির এক কর্মী জানান, কালো জিনিসে ভরে গিয়েছে বাক্স।
সভা তখন শুরু হয়ে গিয়েছে। কালো বোরখা পরা এক প্রৌঢ়া হন্তদন্ত হয়ে ঢুকছিলেন। দেশের ঐক্য নিয়ে কিছু লেখা বোর্ড ঝুলছিল মারুফা খাতুন নামে ওই প্রৌঢ়ার গলায়। নীচে লেখা ‘বিজেপি’। হাতে তাঁর বিজেপির পতাকা। তা সত্ত্বেও বাধা পেলেন তিনি। মারুফা বারবার বলছিলেন, তিনি বিজেপির কলকাতা জেলার কর্মী। কিছু জেরা পর্বের পরে অবশ্য বরফ গলল কর্মকর্তাদের। শেষে শ্রোতাদের সামনের সারিতে তাঁর বসার অনুমতি মিলল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy