বিধাননগর পুরসভা। ফাইল চিত্র।
বিধাননগর পুরসভার অধিগৃহীত জমি স্বরাষ্ট্র দফতরকে হস্তান্তর করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, পূর্ববর্তী বোর্ডের আমলে মেয়র পারিষদদের না জানিয়ে ওই জমি আবাসন নির্মাণের জন্য পুলিশ বিভাগকে দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে বুধবার পুরসভার মেয়র পারিষদদের বৈঠকে অনেকেই সরব হন বলে খবর।
সূত্রের খবর, ভিআইপি রোডের উপরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের পাশে রয়েছে ৮৭ কাঠার ওই জমি। সেখানে পুলিশ আবাসন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ওই জমিতে পুরসভার জলের ট্যাঙ্ক-সহ জল সরবরাহের কিছু পরিকাঠামোও রয়েছে। আবাসন তৈরি হলে জল সরবরাহের সেই পরিকাঠামো কী ভাবে অক্ষত রাখা যাবে, তা নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই মেয়র পারিষদদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন জমির হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে।
ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমার। তিনি জানান, রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা তাদের দফতর তৈরির জন্য ওই জমিটি এক সময়ে হিডকোর কাছ থেকে কিনে নিয়েছিল। পরবর্তী কালে বিধাননগর কর্পোরেশন তৈরি হওয়ায় ওই জমি কর্পোরেশনের হয়ে যায়। রাজেশ জানান, জমিটি প্রথম বোর্ডের আমলেই স্বরাষ্ট্র দফতরকে দেওয়া হয়েছিল। সে কথা বোর্ডের সদস্যদের জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এক সরকারি দফতর অন্য সরকারি দফতরকে জমি দিতেই পারে। কিন্তু বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার ছিল। শুনছি ওই দফতর আবাসন নির্মাণ শুরু করলেও পুরসভার কাছে কোনও নকশাই নেই।’’
সূত্রের খবর, বিধাননগরে জলের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ তুলসী সিংহরায় বৈঠকে প্রস্তাব দেন, জল সরবরাহের স্বার্থে খানিকটা হলেও জমি ফেরত নেওয়া হোক। আবার রাজেশবাবু-সহ কয়েক জন পুরো জমিই ফেরত নেওয়ার দাবি তোলেন।
উল্লেখ্য, বাম আমলে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তাপস চট্টোপাধ্যায়। জমিটি তাঁর আমলেই হিডকো-র থেকে কেনা হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘৪৫ লক্ষ টাকা দিয়ে জমিটির রেজিস্ট্রি করা হয়েছিল। সেখানে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার অফিস হওয়ার কথা ছিল। বিধাননগর পুরসভার প্রথম বোর্ডের আমলে জমিটি কাউকে না জানিয়েই দিয়ে দেওয়া হয়। ওখানে সরকারি হাসপাতালও তৈরি করা যেতে পারত।’’
বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র হয়েও সেই সময়ে কেন এ নিয়ে জানতে চাননি? উত্তরে তাপসবাবু বলেন, ‘‘তৎকালীন বোর্ডে আমার কথা শোনা হয়নি।’’ ঘটনা যে সময়ের বলে দাবি, তখন বিধাননগরের মেয়র ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। বর্তমানে তিনি পুরসভার চেয়ারম্যান। সব্যসাচীর কথায়, ‘‘মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে থানা তৈরির জন্য ওই জমি দেওয়া হয়েছিল। বোর্ড মিটিং-এর পুরনো মিনিটস খুঁজলেই জানা যাবে বিষয়টি সবাইকে জানানো হয়েছিল কি না। তৎকালীন ডেপুটি মেয়র তো সেই সময়ে পুরমন্ত্রীর কাছে অভিযোগও করেছিলেন। উনি না জানলে অভিযোগ করলেন কী ভাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy