—ফাইল চিত্র।
বইমেলার সুবাদে পাল্টে যেতে পারে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মেলার মাঠ। মেলার মাঠের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে, ধুলোর সমস্যা যাতে না বাড়ে, সে দিকে লক্ষ রেখে আন্তর্জাতিক মেলার উপযোগী পরিকাঠামো আরও ভাল ভাবে গড়তে তৎপর হচ্ছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড।
আজ, রবিবার ৪৫তম কলকাতা বইমেলার শেষ দিন। তার আগেই বইমেলার মাঠ নিয়ে পরিকল্পনা খতিয়ে দেখছেন গিল্ডকর্তারা। বইমেলা শেষ হলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা কার্যকর করতে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর ও বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন গিল্ডকর্তারা। এ শহরে সায়েন্স সিটির কাছে মিলনমেলায় একটি আন্তর্জাতিক মানের মেলা প্রাঙ্গণ গড়ে উঠলেও, সাধারণ মানুষের উৎসাহ যাচাই করে গিল্ডকর্তারা সল্টলেকের মাঠেই বইমেলার স্থায়ী ঠিকানা তৈরির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তাঁদের সেই অনুরোধ রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকের ওই তল্লাটটুকুই বইমেলার স্থায়ী মাঠ বলে ঘোষণা করেছেন। জায়গাটির নামও রাখা হয়েছে ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’। গিল্ডের সভাপতি সুধাংশুশেখর দে শনিবার বলছিলেন, ‘‘বইমেলার মাঠে কয়েকটি স্থায়ী নির্মাণের বন্দোবস্ত করা হবে। গিল্ডের একটি অফিস ছাড়াও মাঠে চলাচলের কয়েকটি নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ যেমন গিল্ডকর্তাদের ভাবনা, পুলিশ ও দমকলের জন্য বইমেলার মাঠে স্থায়ী কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হতে পারে। বইমেলার ভিতরে রান্না করা খাবার বিক্রি হলেও রান্নার বন্দোবস্ত এখন মাঠ থেকে একটু দূরে, মেলা প্রাঙ্গণের চৌহদ্দির বাইরে। আগামী বছরের বইমেলায় নিরাপত্তা বজায় রেখে রান্নার একটু বন্দোবস্ত রাখার কথাও ভাবছেন উদ্যোক্তারা।
সুধাংশুবাবু জনসাধারণের সুবিধার্থে বইমেলার মাঠে আরও কয়েকটি বিষয়ের উপরে জোর দিচ্ছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বইমেলার মাঠে পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত রাখতে হবে। পাউচে করে জলের জোগানটাই স্থায়ী ব্যবস্থা কেন হবে! আমরা চেষ্টা করব, পরিস্রুত জলের বন্দোবস্ত করার।’’
গিল্ডকর্তাদের ভাবনা রয়েছে বইমেলার শৌচাগারের পরিকাঠামো নিয়েও। সিইএসসি-র মণ্ডপে ‘বায়ো টয়লেট’ রয়েছে, গিল্ডের দফতরের কাছেও রয়েছে কয়েকটি স্থায়ী শৌচাগার। বইমেলায় বিশিষ্ট অতিথিরা এলে এই ব্যবস্থাটুকু যথাযথ। কিন্তু বেশি লোকের জন্য এই ব্যবস্থা অপ্রতুল। বইমেলায় জনসাধারণের জন্য তৈরি হওয়া শৌচাগারগুলি নিয়ে কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেই সমস্ত শৌচাগারের পরিকাঠামো আরও উন্নত করায় জোর দেওয়া হবে বলে সুধাংশুবাবু জানিয়েছেন।
বইমেলার অন্দরের আরও কয়েকটি খামতি নিয়েও গিল্ডকর্তারা ওয়াকিবহাল। যেমন, তাঁরা লক্ষ করেছেন, এ বার বইমেলার মানচিত্রে প্রয়াত গুণীজনেদের নামে মাঠের ভিতরের বিভিন্ন রাস্তার নামকরণ করা হলেও মাঠে দাঁড়িয়ে কোন রাস্তা কার নামে, তা বোঝার জো নেই। ভবিষ্যতে সুদৃশ্য ফলক বা সাইনেজের মাধ্যমে রাস্তার নামগুলিও মেলে ধরা হবে। আগামী বছর লিটল ম্যাগাজ়িনগুলিকে এক জায়গায় বসানোর চেষ্টা হবে বলেও সুধাংশুবাবুর আশ্বাস। এ বার কোভিড-বিধি মানতে গিয়েই লিটল ম্যাগাজ়িন মণ্ডপ দু’দিকে ছড়িয়ে দিতে হয়।
সেই সঙ্গে বইমেলা লাগোয়া রাস্তায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে জনসাধারণের সুবিধার কথা ভেবেও কয়েকটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যেমন, গিল্ডকর্তারা মনে করছেন, চার ও পাঁচ নম্বর গেটের দিক থেকে রাস্তা পেরিয়ে ও-পারে যাওয়ার ব্যবস্থাটি উন্নত করতে একটি আন্ডারপাস তৈরি হলে ভাল হয়। তাতে রাজপথে যান চলাচল অক্ষুণ্ণ রেখেই লোকজন অন্য দিকের পার্কিং লটে যেতে পারবেন। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বইমেলার আয়োজন সুষ্ঠু ভাবেই করা হয়েছে। আমরা পরের বছরও সব রকম ভাবে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।’’ গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসন অনুমতি দিলে দরকারে বইমেলার জন্য মেলা প্রাঙ্গণের কিছু নির্মাণকাজ আমরা সেরে ফেলতে পারি। পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্যে দিয়েই আমরা এগোতে চাই।’’
শনিবারও বইমেলার মাঠে ভিড় উপচে পড়েছে। রাত পর্যন্ত জনসংখ্যার চূড়ান্ত হিসেব পাওয়া না-গেলেও গিল্ডকর্তারা জানান, এখনও পর্যন্ত ১৮ লক্ষ লোকের ভিড় তো হয়েইছে। বই কেনাও তুঙ্গে। ত্রিদিববাবুর দাবি, ‘‘বাংলা, ইংরেজির বড় প্রকাশকেরা অনেকেই আগের বারের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি বিক্রির আশা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy