অষ্টমীতে কোন কোন পূজামণ্ডপে ঢুঁ মারবেন, জেনে নিন আনন্দবাজার অনলাইনে। ছবি: ফেসবুক।
শহর, কলকাতা এবং বৃহত্তর কলকাতায় নয় নয় করে কয়েক হাজার পুজো। প্রতিটির নিজস্বতায় অনন্য। তবে সবগুলি ঘুরে দেখতে গেলে গোটা দশেক দুর্গাপুজো লাগবে। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য আনন্দবাজার অনলাইন প্রতি দিন বাছাই ছ’টি পুজো সম্পর্কে পাঠক-পাঠিকাদের অবহিত করছে। পুজো দেখতে গিয়ে যে যে প্রশ্ন আপনার মনে তৈরি হবে, তার জবাব রইল এই নির্দেশিকায়। সকলের পুজো সর্বাঙ্গসুন্দর হোক।
শ্রীভূমি স্পোর্টিং (পূর্ব কলকাতা)
কী দেখবেন
থিম ‘ডিজ়নিল্যান্ড’। নানা রঙের ব্যবহারে তৈরি মণ্ডপের ভিতর শিশুদের মন ভাল করার মতো খেলার জগৎ।
কেন দেখবেন
মন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো। বছর বছর নতুন চমক! এ বারও আয়োজন বিপুল। লেকটাউন মোড়ে স্থায়ী ‘বিগ বেন’ তৈরি করেছেন সুজিত। পুজোয় করেছেন আমেরিকার ডিজ়নিল্যান্ড। মণ্ডপের আলোর কাজ থেকে সাজে গোলাপি খেলার দেশ।
কোথায় দেখবেন
ভিআইপি রোডে লেকটাউন মোড়ের কাছেই। উল্টোডাঙা থেকে দমদম বিমানবন্দর যাওয়ার পথে লেক টাউন মোড়ের আগে বাঁ দিকে।
কী ভাবে যাবেন
বিকেল ৩টের আগে গেলে উল্টোডাঙা মোড় থেকে অটো করে। নইলে বাস। শ্রীভূমি বাস স্টপে নামতে হবে। মেট্রোয় গেলে শোভাবাজার থেকে উল্টোডাঙা হয়ে যেতে পারেন।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
সল্টলেকে গাড়ি রেখে হেঁটে ফুটব্রিজ পেরিয়ে পুজো দেখতে যেতে পারেন। মণ্ডপের কাছাকাছি গাড়ি রাখার জায়গা নেই। লেকটাউনের ভিতরের কোনও কোনও গলিতে গাড়ি রাখছেন কেউ কেউ। সেখান থেকেও মণ্ডপ অনেকটা দূর।
কোথায় খাবেন
লেকটাউনের ভিতরে বিরিয়ানির দোকান থেকে কফি শপ, সবই আছে। রাস্তার ধারের চপ, কাটলেট, শরবতের দোকানও প্রচুর।
কী ভাবে ফিরবেন
লেকটাউন থেকে চলে যেতে পারেন যশোহর রোডের দিকে। সেখান থেকে বাস ধরে বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশন।
এইচবি ব্লক (সল্টলেক)
কী দেখবেন
নানা ধরনের পুতুল দিয়ে তৈরি মণ্ডপ। বাংলার শোলার কাজ এই পুজোয় বিশেষ ভাবে দেখার মতো।
কেন দেখবেন
ভিড়ের মধ্যে হেঁটে পুজো দেখার ইচ্ছা না থাকলে এখানে বাংলার শিল্প দেখার আনন্দ পাবেন। সল্টলেকে গাড়ি নিয়ে ঢোকাও কলকাতা শহরের তুলনায় সহজ। অদূরে এফডি ব্লকের মণ্ডপ। দেখতে পারেন সেটিও। এক বার সল্টলেকে ঢুকলে নিরিবিলিতে অনেক পুজো দেখার সুযোগ আছে।
কোথায় দেখবেন
বাইপাস থেকে ঢুকে ইস্টার্ন জ়োনাল কালচারাল সেন্টারের কাছে।
কী ভাবে যাবেন
বাইপাস থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের পাশ দিয়ে ব্রডওয়ে রোড ধরে জিডি আইল্যান্ড। সেখানেই এইচবি ব্লকের পার্কে পুজো।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
মণ্ডপের অদূরে ব্লকের বিভিন্ন গলিতে শান্তিতে গাড়ি রাখা যায়।
কোথায় খাবেন
ব্রডওয়ের আশপাশে বহু ক্যাফে এবং রেস্তরাঁ আছে। পুজোর ভিড়েও নিরিবিলিতে আড্ডার জায়গা পাওয়া যাবে।
কী ভাবে ফিরবেন
বাইপাসের পর্যন্ত চলে গেলে বিভিন্ন দিকে যাওয়ার বাস পাবেন। মেট্রোয় শিয়ালদহ পর্যন্তও চলে যেতে পারেন। সল্টলেক স্টেডিয়াম মেট্রো স্টেশন কাছেই।
তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন (পূর্ব কলকাতা)
কী দেখবেন
থিম ‘প্রান্তজনের আত্মকথন’। প্রান্তিকদের জীবনের নানা যুদ্ধ তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়।
কেন দেখবেন
৫৮তম বর্ষে পদার্পণ এ বার। প্রান্তিক মানুষদের জীবনের কথা তুলে ধরতে ব্যবহার করা হয়েছে খবরের কাগজ দিয়ে তৈরি ঠোঙা। গোটা মণ্ডপ সেজেছে ঠোঙায়।
কোথায় দেখবেন
মুচিবাজারে। উল্টোডাঙা মেন রোডে।
কী ভাবে যাবেন
উল্টোডাঙা স্টেশন থেকে অটোয় যাওয়া যায়। হাতে সময় থাকলে হেঁটেও যেতে পারেন। মেট্রোয় যেতে হলে শোভাবাজারে নামতে হবে। সেখান থেকে বাস বা অটো মিলবে।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
বড় রাস্তার পাশেই পুজো। গাড়ি রাখার জায়গা পাওয়া কঠিন। একান্ত গাড়ি নিতে হলে পুজো প্রাঙ্গণের উল্টো দিকের কোনও গলিতে গাড়ি রাখতে পারেন।
কোথায় খাবেন
মণ্ডপের চারপাশে চপ-কাটলেট তো পাওয়া যায়ই। তবে ভাল করে বসে খেতে হলে উল্টোডাঙা মোড়ের কাছে লর্ডস বা বেঙ্গল ধাবা। মোড়ের কাছে আছে ফ্লুরিজ়ের একটি শাখাও।
কী ভাবে ফিরবেন
ফেরার পথে অন্য কোনও পুজো দেখতে হলে শোভাবাজারের দিকের অটো ধরুন। সেখান থেকে উত্তর কলকাতার কোনও মণ্ডপে যেতে পারেন। নইলে মেট্রো ধরে বাড়ির পথে।
বোসপুকুর শীতলা মন্দির (দক্ষিণ কলকাতা)
কী দেখবেন
থিম ‘আয়োজন’। বেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত গার্ডেন চেয়ারের চল ছিল শহরে। শহরতলিতেও। এখন আর সে ভাবে চোখে পড়ে না। সেই গার্ডেন চেয়ারকেই ফিরিয়ে এনেছেন বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের পুজোয়।
কেন দেখবেন
এই পুজো থিমের জনক। মাটির ভাঁড়ের মণ্ডপ তৈরি করে প্রথম তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বোসপুকুর শীতলা মন্দির। এ বছর ১২ হাজার গার্ডেন চেয়ার দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ।
কোথায় দেখবেন
কসবা কানেক্টরের উপর। বাইপাস থেকে গড়িয়াহাট যেতে গেলে বাঁ হাতে। গড়িয়াহাট থেকে বাইপাস যেতে গেলে ডান হাতে। বড় রাস্তার উপরেই।
কী ভাবে যাবেন
সবচেয়ে কাছের মেট্রো স্টেশন কালীঘাট। সেখান থেকে বাস বা অটো। বাইপাস দিয়েও যাওয়া যায়। বাসে বা গাড়িতে।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
বহু দূরের কোনও গলিতে। অনেকটা হেঁটে ঢুকতে হবে মণ্ডপে।
কোথায় খাবেন
কসবা কানেক্টরের দু’পাশে অজস্র স্থায়ী-অস্থায়ী খাবারের দোকান রয়েছে। কড়ি বেশি ফেললে পাবেন নামী ব্র্যান্ডের খাবারের দোকানও। কেএফসি-ও আছে।
কী ভাবে ফিরবেন
বাস-অটো পাওয়া যাবে। তবে যানজটের প্রবল সম্ভাবনা। রুবি মোড় বা গড়িয়াহাট, যে দিকেই যান, রয়েছে অনেক বড় পুজো।
বাবুবাগান (দক্ষিণ কলকাতা)
কী দেখবেন
কাল্পনিক এক শহর। সেই শহরে রয়েছে নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলার আদলে দেবীর গর্ভগৃহ। বিশ্ব বাংলা গেটের তলায় বসানো দেবীমূর্তি। মূর্তিতেও সবুজায়নের ছোঁয়া। শহরের মাঝামাঝি একটি শহিদ মিনার। শহরের মধ্যেই একাধিক খাবারের স্টল।
কেন দেখবেন
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে একের পর এক সেরা থিম পুজো করে আসছে বাবুবাগান। প্রতি বছরেই নানা চমক।
কোথায় দেখবেন
ঢাকুরিয়া সেতুর সামনে দক্ষিণাপণের উল্টো দিকের রাস্তায়।
কী ভাবে যাবেন
নিকটতম মেট্রো স্টেশন কালীঘাট। সেখান থেকে অটো বা বাসে পৌঁছনো যায়। বালিগঞ্জ স্টেশনে নেমে অটো-বাস বা ঢাকুরিয়া স্টেশনে নেমে হাঁটাপথে মণ্ডপ।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
ঢাকুরিয়া সেতুর নীচে গাড়ি রাখার জায়গা থাকে। কিন্তু পুজোর তা অকেবারেই অপ্রতুল। সাউথ এন্ড পার্কের ভিতরে বা সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি রেখে হেঁটে যেতে হবে।
কোথায় খাবেন
মণ্ডপে। সেটি আদতে একটি শহর। সেই শহরে বসেছে এক ঝাঁক অস্থায়ী খাবারের দোকান।
কী ভাবে ফিরবেন
বড় রাস্তায় গেলে বাস পাওয়া যাবে। এক দিকে যাদবপুর। অন্য দিকে গড়িয়াহাট। যে দিকে যাওয়া প্রয়োজন।
ম্যাডক্স স্কোয়ার (দক্ষিণ কলকাতা)
কী দেখবেন
আদি এবং অকৃত্রিম ডাকের সাজের প্রতিমা। সঙ্গে মেলার মাঠ। আড্ডার ঠিকানা। শরীর-মন ‘রিচার্জ’ করার একমাত্র জায়গা।
কেন দেখবেন
ভাবনায় বাঙালি সাবেকিয়ানা। প্রতি দিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ধুনুচি নাচ। তাতে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে অংশ নেন দর্শনার্থীরাও। নতুন প্রেমের জন্মস্থান বলেও বিখ্যাত ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো প্রাঙ্গণ।
কোথায় দেখবেন
হাজরা মোড় থেকে গরচা রোডের দিকে এগোলে বাঁ দিকে পঙ্কজ মল্লিক সরণির দিকে ঘুরলেই।
কী ভাবে যাবেন
যতীন দাস পার্ক মেট্রোয় নেমে অটো পাবেন।
কোথায় গাড়ি রাখবেন
গরচা রোড বা পঙ্কজ মল্লিক সরণির কাছে কোনও গলিতে।
কোথায় খাবেন
মাঠেই হরেক খাবারের আয়োজন। চাউমিন, ফুচকা, ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম— কোনও কিছুর অভাব নেই। অনেকেই পুজো দেখতে বেরিয়ে ম্যাডক্সে খেতে যান।
কী ভাবে ফিরবেন
কাছেই হাজরা মোড়। অথবা হাজরা রোড ধরে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি। দু’দিক থেকেই শহরের সর্বত্র যাওয়ার বাস মিলবে। হাজরা মোড়ের কাছেই যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনও পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy