বি বা দী বাগের লাইসেন্সপ্রাপ্ত পুরনো অস্ত্রের দোকান থেকে শুধু কার্তুজই নয়, বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হত বন্দুকও। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই দোকান থেকে বেশ কয়েকটি বন্দুক সরানো হয়েছে। বন্দুক বেআইনি ভাবে বিক্রি করার জন্য ওই দোকানের আরও এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। ধৃতের নাম শান্তনু সরকার। রবিবার চম্পাহাটির বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে, সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ওই অস্ত্রের দোকানের মালিক এবং কর্মীদের। প্রসঙ্গত, কার্তুজ-কাণ্ডে ইতিমধ্যে ওই দোকানের কর্মী জয়ন্ত দত্তকে গ্রেফতার করেছেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। এ দিন অন্যান্য কর্মী এবং দোকান-মালিকের মুখোমুখি জয়ন্তকে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, তাঁদের বক্তব্য খতিয়ে দেখে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দোকানের যাবতীয় বন্দুক ও কার্তুজের হিসাব রাখার দায়িত্ব ছিল ধৃত শান্তনুর উপরে। অভিযোগ, তিনি ওই কাজ তো ঠিক মতো করেনইনি, উল্টে দোকান থেকে পাচার করেছেন বন্দুক এবং কার্তুজ। তদন্তকারীরা জানান, এই ঘটনায় শনিবার ফারুক মল্লিক নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি দোনলা বন্দুক এবং চার রাউন্ড কার্তুজ। তদন্তে উঠে আসে, ওই বন্দুকটি বি বা দী বাগের এই লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানের। যা শান্তনু ফারুককে বিক্রি করেছিলেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
গোয়েন্দারা আরও জানান, এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আব্দুল সেলিম গাজির একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক রয়েছে। আব্দুলের দাবি, তিনি সেটি কেনেন বি বা দী বাগের ওই দোকান থেকে। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় জয়ন্ত ও শান্তনুর। এক গোয়েন্দা-কর্তা বলেন, ‘‘ধৃতদের এবং দোকানের মালিক ও কর্মীদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জানা সম্ভব, কী ভাবে তাঁদের আলাপ হয়েছিল।’’ এসটিএফের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছেন, মাস দুয়েক ধরে তাঁরা এই কাজ করছেন। যদিও গোয়েন্দাদের বক্তব্য, এই চক্রটি বেশ অনেক দিন ধরেই সক্রিয়।
ধৃত শান্তনুকে এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হয়। কোর্টে পুলিশের দাবি, শান্তনুর একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। পরে বিচারক ধৃতকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসটিএফ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)