Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

টাকার দাবিতে অ্যাম্বুল্যান্স চলল না, মৃত্যু রোগীর

সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে নিউ টাউনের ইকো পার্ক থানা এলাকার হাতিয়াড়ায়।

ভাঙচুরের পরে অ্যাম্বুল্যান্স। নিজস্ব িচত্র

ভাঙচুরের পরে অ্যাম্বুল্যান্স। নিজস্ব িচত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৫
Share: Save:

রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স চালক দাবি করেছিলেন ৫০০ টাকা। রোগীর পরিজনেরা তাঁকে অনুরোধ করেন আগে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে। কিন্তু অভিযোগ, চালক তাতে রাজি হননি। তখন নিরুপায় হয়েই পরিজনেরা অ্যাপ-ক্যাব ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যান রোগীকে। সেখানে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই খবর পেয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিজনেরা। তাঁরা গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালককে মারধর করেন ও অ্যাম্বুল্যান্সে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চালককে উদ্ধার করে পুলিশ। যান স্থানীয় কাউন্সিলরও।

সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে নিউ টাউনের ইকো পার্ক থানা এলাকার হাতিয়াড়ায়। মৃতের নাম শিবু সরকার (৬৫)। ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের শাস্তির দাবি তুলেছে তাঁর পরিবার। যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সোমবার রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে শিবুবাবুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন তাঁরা হাতিয়াড়ার বাসিন্দা, অ্যাম্বুল্যান্স চালক চাঁদু সর্দারের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। সাড়া না মেলায় তাঁর বাড়িতে হাজির হন শিবুবাবুর আত্মীয়েরা। অভিযোগ, আধ ঘণ্টা ধরে ডাকাডাকির পরে চাঁদু ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জানান, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রোগী নিয়ে যেতে হলে আগে ৫০০ টাকা দিতে হবে। শিবুবাবুর পরিবারের লোকেরা তখন তাঁকে বলেন, আগে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হোক। তার পরে টাকা দেওয়া হবে। অভিযোগ, আগে টাকা না পেলে যাবেন না বলে বেঁকে বসেন চাঁদু। শেষে শিবুবাবুকে অ্যাপ-ক্যাবে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতের ছেলে অরূপ সর্দার বলেন, ‘‘রাতে তখন বাবার খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। চাঁদু জানায়, টাকা না দিলে সে যাবে না। সময়ে পৌঁছলে বাবাকে বাঁচানো সম্ভব হত।’’

স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি সূত্রের খবর, সাবেক রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা থাকাকালীন পুরসভা ও সাধারণ মানুষের অর্থেই অ্যাম্বুল্যান্সটি কেনা হয়। পরে রাজারহাট-গোপালপুর বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে মিশে যায়। প্রায় এক বছর অ্যাম্বুল্যান্সটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। এলাকার কাউন্সিলর গীতা সর্দার জানান, চাঁদুই অ্যাম্বুল্যান্সটি নিজের টাকায় মেরামত করে চালাতেন। মানুষের সুবিধা হবে ভেবে তাঁরাও অনুমতি দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে অন্যায় করেছে চাঁদু। আগে রোগীকে পরিষেবা দিতে হবে, পরে টাকা।’’ বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত ঘটনা। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তবে অ্যাম্বুল্যান্স পুরসভার নয়। পুরসভা অর্থসাহায্য করেছিল মাত্র।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Ambulance Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE