অবরুদ্ধ মানিকতলা মোড়। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
মাল বোঝাই একটি কন্টেনারের সঙ্গে লরির সংঘর্ষে উল্টে গিয়েছিল দু’টিই। মঙ্গলবার রাতে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের এই ঘটনায় আহত হননি কেউ। কিন্তু লরি ও কন্টেনার সরিয়ে রাস্তা খালি করতেই প্রায় ছ’ঘণ্টার বেশি সময় লেগে গেল পুলিশের। এর জেরেই প্রবল যানজটে বুধবার কাজের দিনে নাকাল হলেন সাধারণ মানুষ। আর এই দেরির কারণ হিসেবে ফের সামনে এল পরিকাঠামোর অভাবের প্রসঙ্গ। পুলিশকর্তারা জানান, লালবাজারের কাছে গাড়ি সরানোর বড় মাপের ক্রেন না থাকাতেই এই দেরি।
পুলিশ জানায়, রাত তিনটে নাগাদ মাটি বোঝাই লরিটি শ্যামবাজারের দিক থেকে শিয়ালদহের দিকে আসছিল। আর কাঁকুড়গাছির দিক থেকে টাইল্স বোঝাই কন্টেনারটি মানিকতলা মেন রোড দিয়ে যাচ্ছিল বিবেকানন্দ রোডের দিকে। হঠাত্ কন্টেনারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে লরিটিকে। ছিটকে পড়ে লরিটি। কন্টেনারটিও রাস্তার উপরে মালপত্র-সহ পড়ে যায়। শর্ট-সার্কিট হয়ে আগুন লেগে পুড়েও যায় সেটি। তবে পুলিশ এলেও রাস্তায় পড়ে থাকা ভারি মালপত্র ও গাড়ি সরানো সম্ভব হয়নি। এর জেরে ব্যাপক যানজট হয়। শেষে বহু চেষ্টার পরে সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ সেগুলি সরানো হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনার জেরে যানজট হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু পরিস্থিতি কত দ্রুত স্বাভাবিক করা যায়, সেটাই মূল প্রশ্ন। ট্রাফিক পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে তারা। তা হলে বুধবার মানিকতলায় কী হল? অনেকেই বলছেন, শুধু মানিকতলাই নয়, রবিবার পুরসভার সামনে এস এন ব্যানার্জি রোডেও আচমকা মাটি ফঁুড়ে বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে আসে একটি ট্রামলাইন। তা মেরামতের জন্যও পুলিশ ও পুরসভার কাউকে তড়িঘড়ি আসতে দেখা যায়নি। সোমবার রানি রাসমনি অ্যাভিনিউয়েও উল্টে যাওয়া ডাম্পার তুলতে রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যায়।
শহরের এক নাগরিকের প্রশ্ন, “নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে প্রশাসনের এই আঠারো মাসে বছর মানসিকতা চলবে কত দিন?”
পুলিশের অবশ্য দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি তুলতে দেরি হলেও বুধবার বিশেষ যানজট হয়নি। কিন্তু দেরি হল কেন? ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, পরিকাঠামোর অভাবেই দেরি। পুলিশের ক্রেন দিয়ে ১০টন ওজনের মাল বা গাড়ি সরানো যায়। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে উল্টে যাওয়া কন্টেনার-লরির ওজন ছিল ৩০ টনেরও বেশি। তা সরানোর ক্রেন পুলিশের নেই। ফলে অন্য সংস্থার সাহায্য নিতে হয়। পুলিশ জানায়, লরিটি কোনও মতে সরানো গেলেও কন্টেনারটি সরাতেই হিমসিম খেতে হয়। পুলিশের চারটি ক্রেন ব্যর্থ হলে বন্দর থেকে বড় ক্রেন এনে কন্টেনারটি সরানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy