রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (বাঁ দিক থেকে) —ফাইল চিত্র।
অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সঙ্ঘাত চরমে উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বৈঠকে ডাকলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যা কার্যত রাজভবন বনাম বিকাশ ভবনের ‘সঙ্ঘাত’। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রেজিস্টারদের সঙ্গে ব্রাত্য আলোচনা করবেন বলে খবর। বিশেষত, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোসের দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশ সম্পর্কে ওই বৈঠকে কথাবার্তা হবে। শিক্ষা দফতর সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, ওই দিন রেজিস্ট্রাররা নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন শিক্ষামন্ত্রীকে।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ এবং পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে সম্প্রতি রাজভবনের তরফে একের পর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তার মধ্যে একটিতে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই, তাতে অন্তবর্তিকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন তিনিই। আচার্য হিসেবে এই দায়িত্ব নিতে পারেন বলে দাবি করেছেন তিনি। অন্য দিকে, রাজ্যপাল বোস আইনের বাইরে হাঁটছেন বলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তার পরও রাজভবনের তরফ থেকে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হয়।
মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে এ নিয়ে মুখ খোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, “এখন আমাদের এখানে বসে রয়েছেন এক জন মাননীয় রাজ্যপাল। তিনি বলছেন, আমি স্কুল দেখব। আমি কলেজ দেখব। আমি বিশ্ববিদ্যালয় দেখব। আমি বলি, আইন মেনে চলুন। আমার কোনও আপত্তি নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘টাকা দেব আমরা, পলিসি করব আমরা, আর আপনি খবরদারি করবেন!” তিনি আরও বলেন, “আমরা ইলেক্টেড (নির্বাচিত), আপনি কনভেনশনাল নমিনেটেড পোস্টে। উনি কী ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রীর থেকেও বড়? সে উনি বড় হতেই পারেন।”
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও রাজ্যপালকে নিশানা করেন তিনি। “এরকম যদি চলতে থাকে, যদি কোনও বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর (রাজ্যপাল) কথা মতো চলে, তা হলে আমি বলে রাখছি আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব... আপনি (রাজ্যপাল) যদি মনে করেন, আমি চিফ মিনিস্টারের থেকেও বড়! কিন্তু মনে রাখবেন সমস্ত পলিসি ঠিক করে রাজ্য সরকার, আপনি নন। আপনি যদি কোনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন, আর কোনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় আপনার কথায় চলে, আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। কারণ আমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে দেব না।’’ ওই সময়ই শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ব্রাত্যকে বলব কলেজের প্রিন্সিপাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে মিটিং করুন। প্রাক্তন উপাচার্যরাও থাকবেন। আপনারা আগামিদিনেও থাকবেন। কে কী করবেন, আমি দেখছি।”
এর পরই শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেল যে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারদের নিয়ে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy