স্বস্তি: লন্ডন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
একরাশ অনুশোচনা নিয়ে শুক্রবার লন্ডন থেকে বৃষ্টিভেজা কলকাতায় এসে নামলেন অভীপ্সা দাস। নিজে ক্যানসারের চিকিৎসক। ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা এই যুবতী এখন লিডসে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে কর্মরত।
ফেব্রুয়ারিতে যখন কলকাতায় আসেন অভীপ্সা, তখন ৬৪ বছরের বাবার ক্যানসার ধরা পড়ে। কাজের জন্য বাবাকে ফেলেই চলে যেতে হয়েছিল। এ দিন অভীপ্সা বলেন, “মাসখানেক আগে থেকেই বাবার অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ফেরার। কিন্তু উড়ান পাইনি।” লন্ডন থেকে দিল্লি, মুম্বইয়ের উড়ান ছিল। কিন্তু অভীপ্সার অভিযোগ, শত অনুরোধেও সেখানে জায়গা পাননি তিনি। বলা হয়েছে, সরাসরি কলকাতার উড়ান না থাকলে সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়ে যাওয়া হবে না।
ওই যুবতীর কথায়, ‘‘বাবা ১ জুন মারা গেলেন। শেষ সময়ে পাশে থাকতে পারিনি। এই আক্ষেপ জীবনে যাবে না।’’ এখন শহরের একটি হোটেলে সাত দিন কোয়রান্টিনে থেকে মায়ের কাছে যাবেন অভীপ্সা। মা একা দমদমে বসে রয়েছেন মেয়ের অপেক্ষায়।
লকডাউনে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের আনতে কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘বন্দে ভারত’ উড়ান শুরু হয় মে মাসে। শুধু অভীপ্সা নন, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে আটকে থাকা বহু কলকাতাবাসী সরাসরি উড়ান না-থাকায় এত দিন ফিরতে পারেননি। ইংল্যান্ড ও আমেরিকা থেকে দেশের অন্য শহরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ভারতীয়দের। এই প্রথম ৭১ জনকে নিয়ে কলকাতায় নামল লন্ডনের উড়ান। এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে আমেরিকা থেকে ১৯৫ জনকে আনা হয়েছে।
এ দিন নিজের অভিজ্ঞতা বলছিলেন সিনেমা নিয়ে লিডসে পড়তে যাওয়া যশ শর্মা। ছিলেন ১৫ তলা হস্টেলে। লকডাউনের পরে হস্টেলের ১১৫টি ঘরের বাকি সবগুলিতে তালা পড়ে গিয়েছিল। যশ একা ছিলেন। ওই তরুণের কথায়, “সাইকেল চালানোর অধিকার ছিল। তাই সাইকেল নিয়ে বেরোতাম। সন্ধ্যায় অত উঁচু বাড়িতে শুধু আমার ঘরে আলো জ্বলত।”
আরও পড়ুন: সীমান্তে গুলি নেপাল পুলিশের, হত ভারতীয় কৃষক, আহত তিন
ত্রিপুরার বাসিন্দা অনিন্দ্য দেবনাথের পরিবারের সদস্য অসুস্থ। তিনিও কলকাতায় ফিরতে চেয়ে পারেননি। এ দিন শহরে নেমে সাত দিন কোয়রান্টিনের পরে দেশীয় উড়ান ধরে বাড়ি ফিরবেন। লন্ডন থেকে আসা তন্ময় গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন শেফিল্ডে। তাঁর কথায়, “ওখানে লকডাউনের নিয়ম মানা হচ্ছে। তবে, প্রাতর্ভ্রমণ বা সাইকেল চালানোয় পুলিশ আপত্তি করছে না।” কলকাতায় নামার পরে তাঁদের থেকে স্বাস্থ্য দফতর পাসপোর্ট নিয়ে নিয়েছে। বলা হয়েছে, দু’দিন পরে ফেরত পাবেন। যা শুনে বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়ানো এক পুলিশ অফিসারের সরস মন্তব্য, ‘‘আসলে হোটেল থেকে যাতে কেউ পালিয়ে না-যান, তার জন্য বোধহয় এই ব্যবস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy