Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape and Murder

যুবকের মৃত্যুতে অভিষেক-তিরে কর্মবিরতি, তবু অনড় ডাক্তারেরা

জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ন্যায্য ও বৈধ বলেও মত প্রকাশ করে অভিষেক জানান, তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের এমন ভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে অত্যাবশ্যক চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত না হয়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫২
Share: Save:

দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম যুবককে শহরের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলেও চিকিৎসা শুরু হতে অনেক দেরি করা হয়েছিল। তাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন কোন্নগরের বাসিন্দা বিক্রম ভট্টাচার্যের মা। শুক্রবারের সেই ঘটনায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছে শাসকদলও। তাদের দাবি, চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরেই ওই যুবক ঠিক মতো পরিষেবা পাননি।

সে দিন রাতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-হ্যান্ডলে দাবি করেন, আর জি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকদের যে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে, তারই জেরে ওই যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। তবে, জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ন্যায্য ও বৈধ বলেও মত প্রকাশ করে অভিষেক জানান, তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের এমন ভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে অত্যাবশ্যক চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত না হয়। পাশাপাশি, গাফিলতি না শুধরে নেওয়ার কারণে কারও মৃত্যু হলে তা ‌হত্যারসমতুল্য বলেও স্মরণ করিয়েছেন অভিষেক। তাঁর মতে, জুনিয়র চিকিৎসকদের যদি প্রতিবাদ-আন্দোলন চালাতেই হয়, তা হলে তা গঠনমূলক ভাবে সহানুভূতি ও মানবতার সঙ্গে করা উচিত। যাতে নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার মাধ্যমে আর কোনও জীবন ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে।

আর জি করের আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবি, ওই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কর্মবিরতির কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁরা জানান, সিনিয়র চিকিৎসকেরা ওই রোগীর প্রয়োজনীয় সব রকম চিকিৎসা করেছিলেন। তাই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ ঠিক নয়। একই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও। তাঁরা জানান, সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ভর্তির পরেই ক্ষতে ব্যান্ডেজ করা থেকে ওষুধপত্র দেওয়া, সবই হয়েছিল। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করানোর কথাও বলা হয়। কিন্তু সিটি স্ক্যানে গিয়ে বিক্রমের অবস্থার অবনতি হয়। তড়িঘড়ি ট্রমা কেয়ারে নিয়ে গেলেও কিছু করা যায়নি। সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।

যদিও বিক্রমের মা কবিতা বলেন, ‘‘আর জি করে যাওয়ার পরেও এক-দেড় ঘণ্টা চিকিৎসা হয়নি। সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে ছেলেটা বেঁচে যেত।’’ শুক্রবার ভোরে কোন্নগরে বাড়ির কাছেই একটি ডাম্পারে উঠতে যান বিক্রম। সেই সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশের গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্স চালক বিক্রমকে। সেখান থেকে আর জি করে আনা হয়। কিন্তু কেন ওই হাসপাতালে আনা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় বিক্রমের দু’টি পা দলা পাকিয়ে গিয়েছিল। মাথায় চোট ছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, দুর্ঘটনার পরে অ্যাম্বুল্যান্স আসতেও দেরি করে।তিনি বলেন, ‘‘ওয়ালশ হাসপাতাল কোন্নগর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে। সেখানে দুই কিলোমিটার দূরের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেলে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে দ্রুত কলকাতা মেডিক্যালে পাঠানো যেত।’’ বিক্রমের কাকিমা রীনা দাস বলেন, ‘‘আর জি করে গোলমাল চলছে। ওকে পিজিতে নিয়ে গেলে বোধহয় বাঁচানো যেত।’’ ওয়ালশ হাসপাতালের সুপার প্রণবেশ হালদারের দাবি, বিক্রমকে কলকাতা মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হয়েছিল।

কোন্নগর পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সে বিক্রমকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। চালক সুরজ সিংহের দাবি, সাড়ে ৫টা নাগাদ ফোন এসেছিল। ৬টা নাগাদ কাজে যোগ দিয়েই তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরিজনদের কথাতেই তিনি প্রথমে ওয়ালশ, সেখান থেকে আর জি করে নিয়ে যান। পুরপ্রধান স্বপন দাসের বক্তব্য, ‘‘বাড়ির লোকই যদি আর জি করে নিয়ে গিয়ে থাকেন, আমরা কী করব?’’

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Medical College Abhishek Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy