বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ শিয়ালদহ উড়ালপুলে এক মহিলাকে, একটি বেসরকারি বাস দ্রুত গতিতে ধাক্কা মারে। ফাইল ছবি।
দ্রুত গতিতে গাড়ি চলে, এমন সেতু বা উড়ালপুল দিয়ে হাঁটা কিংবা রাস্তা পার হওয়া নিষিদ্ধ। অথচ, এ বিষয়ে হুঁশ নেই কারও। পথচারীরা সতর্ক হন না, কড়া হাতে বিধি বলবৎ করার পুলিশি উদ্যোগও চোখে পড়ে না। যার জেরে ফি-বছর একাধিক দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। বুধবার যেমন ঘটল শিয়ালদহ উড়ালপুলে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বেরিয়ে উড়ালপুল ধরে হেঁটে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দিকে এসে উড়ালপুলের উপরেই বাস ধরতে যান এক মহিলা। সেই সময়ে একটি বেসরকারি বাস দ্রুত গতিতে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। মহিলা রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁর পায়ের উপর দিয়ে বাসের চাকা চলে যায়। শিয়ালদহ ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মী দ্রুত মহিলাকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। বছর পঞ্চাশের ওই মহিলা মৃত্যুর আগে জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম নমিতা মল্লিক। যদিও রাত পর্যন্ত তাঁর পরিবারের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করতে পারেনি।
এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পরেও শিয়ালদহ উড়ালপুলের পরিস্থিতি বদলায়নি। দ্রুত গতিতে চলা যানবাহনের ফাঁক দিয়েই রাস্তা পেরোনোর চেষ্টা করছেন অনেকে। রাস্তার মাঝে গাড়ি বা বাস থেকে নামার পুরনো রোগও চোখে পড়ল। সেতুর মাঝেই হঠাৎ থেমে যাওয়া বাস থেকে বড় বড় তিনটে বস্তা নামাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারল বস্তায়। চালক বললেন, “ভাবতেই পারিনি, এ ভাবে বস্তা নামানো হবে। ধাক্কা মেরে পিষে দিলে তো গাড়িচালককে পুলিশ জেল খাটাবে।” আর একটি গাড়ি স্টেশনের দিক থেকে এসে মৌলালির দিকে যাওয়ার পথে খুব জোরে ব্রেক কষল ভারী ব্যাগ পিঠে নিয়ে এক যুবক সামনে চলে আসায়।
উড়ালপুলের উপরেই এক ট্র্যাফিক-কর্তার কার্যালয়। তার কাছে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘সকালে আমিই ডিউটিতে ছিলাম। মহিলা ট্র্যাফিক সিগন্যাল বোঝেন বলে মনে হল না। ভোরে এমনিতেই জোরে গাড়ি চলে। তার উপরে স্টেশন থেকে বহু লোক হেঁটে উড়ালপুল পেরিয়ে বাস ধরেন। মহিলাও তেমনই কিছু করছিলেন। বাসের সামনে পড়ে যান।’’ কিন্তু এ ভাবে উড়ালপুল পেরোনোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয় না? ওই ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘মধ্যরাত থেকে শিয়ালদহে কর্মযজ্ঞ চলে। এক দিকে আনাজ ফাঁকা করানো হয়, অন্য দিকে স্টেশন থেকে শয়ে শয়ে লোক বেরিয়ে গাড়ি ধরেন। কাকে ছেড়ে কাকে আটকাব? বাহিনীতে অত লোকই বা কই? আমরাই তো ছুটি পাই না!’’
লালবাজারের কর্তারাও মানলেন, মামলার তেমন ব্যবস্থা না থাকার কথা। ট্র্যাফিকের এক কর্তার কথায়, “এ ক্ষেত্রে জে-ওয়াকিংয়ের(ট্র্যাফিক-বিধি উড়িয়ে শহরের পথে বেপরোয়া হাঁটাচলা) মামলা করাযায়। অন্য কোনও ধারা নেই। মামলা করতে হয় কলকাতা পুলিশ আইনের ৬৬ নম্বর ধারায়। জরিমানা ১০ থেকে ৫০ টাকা। এত কম জরিমানায় কারও হুঁশ ফেরে না।” আর এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, “এই জরিমানা বা মামলাতেও অনেক ঝামেলা। আগে মাইকে পথচারীদের সতর্ক করতে হবে। তাতেও সতর্ক না হলে মামলা বা জরিমানা হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy