—প্রতীকী ছবি।
পূ্র্ব কলকাতা জলাভূমিতে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অতীতে একাধিক বার সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। এ বার ওই জলাভূমি এলাকায় বিভিন্ন হোর্ডিংয়ের কাঠামো নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হলেন শহরের নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের একটি সংগঠনের অভিযোগ, হোর্ডিংয়ের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গিয়ে তাতে ধাক্কা খেয়ে মারা যাচ্ছে বহু পাখি। এর প্রতিকার চেয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভেবেছে ওই সংগঠনটি।
ই এম বাইপাস ধরে চিংড়িঘাটার কিছুটা পর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। সংগঠনটির অভিযোগ, ওই জলাভূমির উপরে দৈত্যাকৃতি হোর্ডিংয়ের জঙ্গল তৈরি হয়ে গিয়েছে। জায়গাটি রামসার সাইটের তালিকাভুক্ত। তাই সেখানে যে কোনও ধরনের নির্মাণ বেআইনি বলেই দাবি তাদের। সংগঠনটির পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশও। ঘটনার তদন্ত শুরু করে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ওই সব হোর্ডিংয়ের আইনি বৈধতা প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার কাছে জানতে চেয়েছে।
উল্লেখ্য, শুধু হোর্ডিং নয়, পূর্ব কলকাতা জলাভূমির বহু ভেড়িও প্রোমোটারদের দখলে চলে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠেছে কয়েক বছর ধরে। এক সময়ে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির উপরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবেশকর্মীদের দীর্ঘ আন্দোলনে শেষ রক্ষা হয়। কারণ তাঁদের দাবি ছিল, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি আসলে শহরের বর্জ্য জল নিকাশির ফুসফুস। সারা কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার জল ওই পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে এসে পড়ে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবে পরিশোধিত হয়।
সূত্রের খবর, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি দখলের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রায় ৩৫০টি অভিযোগ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন থানায় দায়ের হয়েছে। এমনকি, ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটিও পরোক্ষে মেনে নিয়েছে নানা ভাবে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির উপরে দখলদারির চেষ্টার কথা। তারা জানায়, ওই সব হোর্ডিং সংস্থাকে শুনানিতে ডেকে পাঠানো হলেও তারা আদালতে পাল্টা মামলা করে বসে রয়েছে। যে কারণে সমাধান সূত্র বার করা সম্ভব হচ্ছে না।
নাগরিকদের ওই সংগঠনের তরফে আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই জায়গায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। তার জেরে রাতে দীর্ঘ সময়ে ডিজেলের ধোঁয়া ওই সংরক্ষিত এলাকাকে দূষিত করছে। রাতের চড়া আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে হোর্ডিংয়ে ধাক্কা খেয়ে মারা যাচ্ছে পাখিরা। আমরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক, কলকাতা পুলিশ, পরিবেশ দফতর, কলকাতা পুরসভা-সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছি। জাতীয় পরিবেশ আদালতেরও দ্বারস্থ হব।’’
ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট জানাচ্ছে, হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দেয় কলকাতা পুরসভা। অতীতেও পূর্ব কলকাতা জলাভূমির হোর্ডিং নিয়ে কলকাতা পুরসভাকে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভার কাছেও পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে হোর্ডিংয়ের সমস্যার বিষয়টি নতুন নয়। জটিলতার কথা তারাও স্বীকার করেছে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে এই সমস্যার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমস্যার কথা জানি। সমাধানের কথা আমরাও ভাবছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy