Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Cyber Fraud

গুগল থেকে নম্বর নিয়ে ফোন করে জালিয়াতদের খপ্পরে, উধাও আট লক্ষ 

বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগ জানাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনে গুগলের মতো ‘সার্চ ইঞ্জিন’ বর্তমানে প্রায় সকলেই ব্যবহার করেন। কিন্তু সেখানে ভুয়ো নম্বর দিয়ে রাখে সাইবার জালিয়াতেরা।

An Image Of Cyber Fraud

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:২৯
Share: Save:

বাবার পেনশন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে গুগল থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা নম্বর জোগাড় করে তাতে ফোন করেছিলেন বিমানবন্দরের এক ইঞ্জিনিয়ার। সেই সূত্রেই সাইবার জালিয়াতদের খপ্পরে পড়েন তিনি। ফোন ‘হ্যাক’ করে দু’টি অ্যাকাউন্ট তো বটেই, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও তুলে নেওয়া হয়েছে টাকা। এ ভাবে প্রায় আট লক্ষ টাকা খুইয়ে ওই ইঞ্জিনিয়ার কার্যত সর্বস্বান্ত। ক্রেডিট কার্ডের দেনা শোধ করতে হবে কি না, তা ভেবেও রাতের ঘুম উড়েছে তাঁর।

বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগ জানাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনে গুগলের মতো ‘সার্চ ইঞ্জিন’ বর্তমানে প্রায় সকলেই ব্যবহার করেন। কিন্তু সেখানে ভুয়ো নম্বর দিয়ে রাখে সাইবার জালিয়াতেরা। একটু অসতর্ক হলেই বিপদ। বিশ্বজিৎ মণ্ডল নামে বিমানবন্দরের কর্মী ওই ইঞ্জিনিয়ার জানালেন, তাঁর বাবার পেনশনের অঙ্ক আচমকা কমে যাওয়ায় তিনি গুগল দেখে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের নম্বর জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু সেটি যে জালিয়াতদের নম্বর, তা তিনি বুঝতে পারেননি। নিজের ফোনে তাঁকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়েছিল। তা করতেই ফোনটি হ্যাক হয়ে যায়। তার পরেই তাঁর ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলা শুরু হয়।

বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘আমি দেখছি, আমার ফোনে ওটিপি আসছে, আর ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। যিনি ফোন করেছিলেন, আমি তাঁকে বার বার বলছিলাম বিষয়টা। তিনি নির্লিপ্ত গলায় বলে যান, কোনও টাকা বেরোচ্ছে না।’’

মাত্র ৪০ মিনিটে ওই ইঞ্জিনিয়ারকে এক রকম পথে বসিয়ে দিয়ে যায় প্রতারকেরা। গত বৃহস্পতিবার বিধাননগর সাইবার অপরাধ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বজিৎ। তিনি জানান, যে নম্বরে তিনি ফোন করেছিলেন, প্রথমে সেটি বেজে যায়। তার পরে সেই নম্বর থেকে পাল্টা ফোন আসে। তিনি ফোন ধরলে তাঁর কাছ থেকে পেনশন কমে যাওয়ার বিষয়টি শোনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘আমার এবং বাবার অ্যাকাউন্ট দু’টি আলাদা দুই ব্যাঙ্কে রয়েছে। লোকটি জোর করে আমার ফোন নম্বর নিল। আমি বললাম, আমার ব্যাঙ্ক আলাদা। সে বলল, যে লিঙ্কটি পাঠাচ্ছে, তাতে বাবার অ্যাকাউন্টও দেখা যাবে। আমিও বোকার মতো ওই কথায় বিশ্বাস করলাম।’’ এর পরে ক্রেডিট কার্ড এবং দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানালেন, গত বছর গুগল থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নম্বর জোগাড় করে ফোন করায় প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন নৈহাটির এক ব্যক্তি। প্রায় দেড় লক্ষ টাকা তাঁর বেরিয়ে যায়। বিভাস জানান, ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’
(এসইও) নামে এক ধরনের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারকেরা
নিজেদের ভুয়ো ওয়েবসাইটগুলি গুগলে উপরের দিকে তুলে রাখে। মানুষ না বুঝে ওই সব সাইটে ঢুকে প্রতারিত হন। তাঁর কথায়, ‘‘গুগলে কোনও নম্বর খোঁজা নিরাপদ নয়। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার, তাদের অ্যাপ ডাউনলোড করা ভাল। বিশেষত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে। কারণ, গুগল পরীক্ষা করে না, তার মধ্যে কে কী আপলোড করছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Financial Fraud Online fraud police investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy