পরিচয়: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের উপহার দেওয়া হল বই। বেশ কয়েক জন মা বই চেয়েও নিলেন। বুধবার, মানিকতলা খালপাড়ে। ছবি: সুমন বল্লভ।
শিক্ষা দফতরের নির্দেশ ছিল, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করতে হবে বিভিন্ন স্কুলে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, এ দিন উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা থাকায় যে সব স্কুলে পরীক্ষার সিট পড়েছে, সেই স্কুলগুলিতে ভাষা দিবস পালন করা গেল না। যা দেখে শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, উচ্চ মাধ্যমিকের রুটিন করার সময়ে সংসদের উচিত ছিল, ২১ ফেব্রুয়ারি যে পরীক্ষার সূচি পড়ছে, তা খেয়াল রাখা।
যেমন, দ্য খিদিরপুর অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ মহম্মদ সালেহিন বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়ায় পড়ুয়াদের নিয়ে মাতৃভাষা দিবস পালন করতে পারলাম না। পরীক্ষার পরে শিক্ষকেরা ছোট করে একটি অনুষ্ঠান করেছেন ঠিকই। কিন্তু সেখানে পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিল না। এটা আমাদের খুব খারাপ লেগেছে। রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তীর মতো এই দিনটিও যথাযথ ভাবে পালন করার নির্দেশ থাকে শিক্ষা দফতরের তরফে।’’ ওই স্কুলের বাংলার শিক্ষক বিজয়কৃষ্ণ বারুই বলেন, ‘‘২১ ফেব্রুয়ারি আমরা মাতৃভাষা নিয়ে ছোট ছোট পড়ুয়াদের সচেতন করি। তাদের আলাদা করে মাতৃভাষার গুরুত্ব বোঝানো হয়। এ বার সে সব কিছুই করা গেল না।’’
উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠেও। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘প্রতি বছর অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে, বড় করে আমরা এই দিনটি পালন করি। পরীক্ষা মিটে গেলে কোনও এক দিনে আমরা ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান করব।’’
তবে, যে সব স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েনি, সেখানে অবশ্য নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি। শ্যামবাজার এ ভি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জনকুমার মুখোপাধ্যায় যেমন বললেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা গান, আবৃত্তি, নাটক করেছে। প্রতি বার আমাদের মাধ্যমিকের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকেরও সিট পড়ে। এ বার তা না পড়ায় এই দিনটা পালন করতে পারলাম।’’
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘বাংলা ভাষা নিয়ে সরকার এত সচেতনতার প্রসারের কথা বলছে। অথচ, উচ্চ মাধ্যমিকের সূচি তৈরির সময়ে সেই দিনটি সম্পর্কে সচেতন হতে ভুলে গেল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদই? শুধু তা-ই নয়, আগামী বছরের মাধ্যমিকের রুটিনেও দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সেই দিনটি ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন। আবার রয়েছে শবে বরাতও। ওই দিনে কী ভাবে পরীক্ষা ফেলা হল? আগে থেকে সচেতন হলে এই বিষয়গুলি এড়ানো যায়।’’ শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ওই দিনটি পরিবর্তন করা হতে পারে। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তা জানান, এ বার ভোটের কারণে পরীক্ষা এগিয়েছে। সাধারণত, কোনও বারই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরীক্ষা পড়ে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy