উনিশ শতকের প্রথম বছরটি শেষ হওয়ার ঠিক মুখে শ্রীরামপুরে উইলিয়াম কেরি নিজ পুত্র ফেলিক্সের সঙ্গেই খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করলেন কৃষ্ণ পাল নামে এক কাঠের মিস্ত্রিকে। উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড আর জশুয়া মার্শম্যানের মতো মিশনারিদের পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে এদেশীয়দের মধ্যে বাংলা ভাষায় ধর্ম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কৃষ্ণ পালের। কৃষ্ণ পাল এবং তাঁর মতো অন্য দেশীয় প্রচারকদের বাংলা ভাষায় ধর্মব্যাখ্যা প্রভাব ফেলেছিল শহর কলকাতাতেও। স্থানীয় মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা, প্রয়োজন দেখা দেয় এক গির্জার যেখানে বাংলা ভাষায় উপাসনা হবে। উইলিয়াম কেরি ও ব্যাপটিস্ট মিশনের নেতারা কলকাতার লালবাজার এলাকায় স্থানীয় মানুষের জন্য একটি আলাদা গির্জা স্থাপনের উদ্যোগ করেন।
উইলিয়াম ওয়ার্ড-এর বয়ান থেকে জানা যায়, আজকের লালবাজার সংলগ্ন এলাকাটি সেই সময়ে ছিল শুঁড়িখানা, বারবনিতা ও উৎপেতে জাহাজি সাহেবে পরিপূর্ণ। অশান্তি ও অনাচারের এই কেন্দ্রেই ঈশ্বরের বাণী প্রচারের জন্য উপাসনালয় স্থাপনের কাজ শুরু হয় ১৮০৬ সালে, জনৈক জেমস রোল্ট সাহেবের থেকে দুই বিঘারও বেশি জমি কিনে। আদি ট্রাস্ট ডিক্লেয়ারেশন-এ প্রস্তাবিত গির্জাটির উল্লেখ করা হল ‘দ্য নিউ ক্যালকাটা চ্যাপেল ফর ডিভাইন ওয়রশিপ অব অল ডিনোমিনেশন অব ক্রিশ্চানস’ নামে। নির্মাণকাজ শুরু হলে অর্থের সমস্যা দেখা দিল। কিন্তু তার থেকেও বড় বাধা সরকারের অসহযোগিতা। সেই সময়ই (১৮০৬) ধর্মীয় বিবাদ থেকে উদ্ভূত ভেলোর বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার মিশনারিদের উৎসাহ দিতে রাজি ছিলেন না। এক বার তো পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট স্বয়ং গির্জা তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন। বিলেত থেকে অনুমতি আনিয়ে আবার কাজ শুরু করা যায়।
সমস্ত বিপত্তি কাটিয়ে ১৮০৯ সালের পয়লা জানুয়ারি এই লালবাজার গির্জায় উপাসনা শুরু হয় ১৬৫ জন সদস্য নিয়ে। বঙ্গদেশে জন্মানো রোমান ক্যাথলিকরা প্রথম বাংলা ভাষায় বাইবেল পাঠ শুনলেন এই গির্জায়। এমনকি ইংরেজি না-জানা কলকাতার অনেক পর্তুগিজ ও আর্মেনীয় এই খ্রিস্টানেরও বাংলা উপাসনায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা হল। কেরি, ওয়ার্ড, মার্শম্যান ছাড়াও প্রথম পরিচালন পর্ষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক হেনরি ডিরোজ়িয়োর পিতামহ, মাইকেল ডিরোজ়িয়ো।
স্থাপনার পর গির্জাটি লোকমুখে ‘লালবাজার ব্যাপটিস্ট চার্চ’ নামেই পরিচিত হয়। গত শতকের মাঝামাঝি থেকে এর নাম হয় ‘কেরি ব্যাপটিস্ট চার্চ’। নামের মতো আদি স্থাপত্যেও বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। সামনের গাড়িবারান্দাটি সরিয়ে প্রবেশপথ-সহ ভিতরের জায়গা বাড়ানো হয়েছিল উনিশ শতকের মাঝামাঝি। তখনই ধারের অতিরিক্ত গাড়িবারান্দা ও যাজকদের আবাসগৃহও তৈরি হয়েছিল। ভবনের ডান দিকে একটি বাইবেল স্কুল গড়া হয় ১৯৫০-এর দশকে। ধর্মাচরণের সঙ্গে জনসেবায়, বিশেষত শিক্ষা প্রসারে যুক্ত থেকেছে প্রতিষ্ঠান। বড়দিন এগিয়ে আসছে, যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালিত হবে গির্জায়। মনে করিয়ে দেবে কলকাতার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে তার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের কথাও। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
মননের মুখ
জাতি ও উপনিবেশবাদের চুম্বকে বিশ্ব ইতিহাসের পর্যালোচনা তাঁর ইতিহাস-চর্চার প্রধান অভিমুখ। আমেরিকার বস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ‘স্টার্নস ট্রাস্টি প্রফেসর’ ক্রিস মঞ্জাপ্রা-র গবেষণা ও লেখালিখি স্বীকৃত বিশ্ব স্তরে, গত সেপ্টেম্বরে তাঁর বই দ্য লং ডেথ অব স্লেভারি অ্যান্ড দ্য ফেলিয়োর অব ইম্যানসিপেশন ঠাঁই পেয়েছে ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি বুক প্রাইজ়-এর চূড়ান্ত নির্বাচন-তালিকায়। জন্মসূত্রে যোগ আফ্রিকা ও ভারতের সঙ্গে, হার্ভার্ডের প্রাক্তনী ক্রিসের সঙ্গে কলকাতা ও ঢাকার টান গভীর তাঁর ‘বেঙ্গলি ইন্টেলেকচুয়াল ওরাল হিস্ট্রি প্রজেক্ট’ সূত্রে, ১৯২০-১৯৫০ সময়কালে দুই বাংলায় জন্মানো বৌদ্ধিক বিশিষ্টজনের সঙ্গে কথালাপ ও সাক্ষাৎকারে বাংলার মনন-ইতিহাস চর্চা। ক্রিস এ বার এ শহরে, কৃষ্ণা বসুর (ছবি) ৯৩তম জন্মবার্ষিকীতে নেতাজি ভবনে বলবেন আগামী ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়। কৃষ্ণা বসুর সাক্ষাৎকারের অডিয়ো-অংশ শোনাবেন, দেবেন কলকাতার বৌদ্ধিক পরম্পরা-পরিচয়।
কারিগর হাট
ভারতের নানা রাজ্যের আছে নিজস্ব লোকশিল্প-হস্তশিল্পের সংস্কৃতি। মেলার মরসুমে সেই ঐতিহ্য-পরম্পরাকে যদি নিজের শহরে হাতের কাছে পাওয়া যায়, তার চেয়ে আনন্দের আর কী! গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে গত ২০ তারিখ থেকে শিল্প-স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আর্ট ইলুমিনেটস ম্যানকাইন্ড (এইম)-এর আয়োজনে ও তবলা আইএনসি ও গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল কোঅর্ডিনেশন কমিটির সহযোগিতায় চলছে ‘কারিগর হাট’— পশ্চিমবঙ্গ-সহ প্রায় সতেরোটি রাজ্যের হস্তশিল্পসম্ভার: কাঁথা কাঠ বাঁশ বেত লোহা ডোকরা পাথর টেরাকোটা ইত্যাদি, লোকনৃত্য গান নাটক বই পুতুলনাচ বহুরূপী, কী নেই! লোকশিল্পীদের কর্মশালা, সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানও। এ বছরের ভাবনা ‘আদিবাসী শিল্প’। ২৬ ডিসেম্বর অবধি, দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা।
বিজ্ঞানের ইতিহাস
ভারতে বিজ্ঞানের ইতিহাস চর্চার বাতাবরণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকেই, নেহরু ও নিডহ্যামের পত্রবিনিময়ই তার প্রমাণ। পরে তা সমৃদ্ধ হয় সমরেন্দ্রনাথ সেন দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় আব্দুর রহমান প্রমুখের ভাবনায়। কিন্তু একুশ শতকের সম্প্রতিকাল পর্যন্তও বিজ্ঞানের ইতিহাসচর্চায় নিয়োজিত নথিভুক্ত কোনও সোসাইটি ছিল না। এ বছরের মাঝামাঝি কলকাতায় গড়ে ওঠে ‘সোসাইটি ফর দ্য হিস্ট্রি অব সায়েন্স’; গত ৪-৫ ডিসেম্বর তার প্রথম সভা হল সায়েন্স সিটি ও এশিয়াটিক সোসাইটিতে। ছিলেন অগ্রণী বিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও ইতিহাসবিদ-সহ প্রায় দু’শো সদস্য, সেমিনারে মূল ভাষণ দেন প্রজিতবিহারী মুখোপাধ্যায়। ৬-৭ ডিসেম্বর এশিয়াটিক সোসাইটির নিজস্ব আলোচনাচক্রে কথা হল বিজ্ঞান-সচেতনতার ঐতিহাসিক সামাজিক তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে।
ক্যামেরার চোখে
গত বছর তাদের এই উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্বের চারশোরও বেশি আলোকচিত্রী, আগ্রহী-রসিকের সংখ্যা ধরলে তা পাঁচ হাজার! এ বছরও সগৌরবে কলকাতায় হতে চলেছে ‘ইন্ডিয়া ফোটো ফেস্ট ২০২৩’। শহরের আর্ট গ্যালারি ও শিল্পচর্চা প্রতিষ্ঠান ‘ছবি ও ঘর’ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই উৎসবে ক্যামেরার লেন্সে দেখা গল্প আর জীবন ফুটে ওঠে শিল্পিত প্রকাশে, এক ছাদের তলায় সংলাপে দাঁড় করিয়ে দেয় আলোকচিত্রী আর দর্শককে। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু আইসিসিআর-এ, চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ছবির প্রদর্শনী তো আছেই, সঙ্গে আগামী কাল দুপুর ৩টে-রাত ৮টা আলোচনা, প্রশ্নোত্তর পর্ব ও প্রেজ়েন্টেশন; পরশু ৩টে থেকে ৫টা বিশিষ্ট আলোকচিত্রীদের অংশগ্রহণে কর্মশালা, পরে পুরস্কার ও সংবর্ধনা।
নাট্যস্বপ্নকল্প
“মূল না থাকলে সমান্তরাল হয় কী ভাবে?” বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের দেড়শো পূর্তি সূত্রে বলছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, “পেশাদারি থিয়েটারের প্রতিস্পর্ধী নির্মাণ থাকতেই পারে, তা বলে সাধারণ রঙ্গালয়ের বৈভব ভুলে যাব?” এই ভাবনাসূত্রেই ‘অন্য থিয়েটার’-এর উদ্যোগে ‘নাট্যস্বপ্নকল্প ২০২৩’-এর আকর্ষণ অবন্তী চক্রবর্তী নির্দেশিত বিনোদিনী অপেরা ও সুমন মুখোপাধ্যায় নির্দেশিত আজকের সাজাহান, গিরিশ মঞ্চে ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সম্মানিত হবেন ওঁরা, সঙ্গে তূর্ণা দাশও, অ্যাকাডেমিতে ২৯-এ সন্ধ্যা ৬টায়, তূর্ণার পরিকল্পনা ও প্রয়োগে মঞ্চস্থ হবে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা কাব্য, কবির জন্মদ্বিশতবর্ষের সূচনা উপলক্ষে। থাকবেন পবিত্র সরকার মামুনুর রশীদ এম কে রায়না। প্রকাশ পাবে নাট্যপত্র অন্য দি আদার, বিভাসবাবুর নাট্যসংগ্রহ প্রথম খণ্ড (প্রকা: সপ্তর্ষি)।
মর্মকথা
পরানুকরণ নয়, দেশীয় ভাব সৃষ্টি। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতশিল্পের মর্মসুধা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শিল্পচর্চার পরিসরে। কত বিবিধ বিষয়ে এঁকেছেন লিখেছেন, রসজ্ঞজন জানেন তা। তারই অন্যতম ১৯৩০-সময়কালে ‘আরব্য রজনী চিত্রমালা’ (ছবি)। এই চিত্রমালা নিয়ে অবনীন্দ্রনাথের মন্তব্য, “আমার জীবনের নানাবিধ অভিজ্ঞতা এই শিল্পকর্মে জড়িয়ে আছে।” ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে এই চিত্রমালায় কী করে উত্তর-ঔপনিবেশিক চিত্রশিল্পের দিশা দেখান অবনীন্দ্রনাথ, সে কথার সূত্র ধরেই বলবেন শিল্পীর প্রদৌহিত্র, ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব ইন্টিগ্রাল স্টাডিজ়-এ ‘হরিদাস চৌধুরী অধ্যাপক’ দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার-এর বিবেকানন্দ হল-এ। আশ্রমের সংগ্রহশালা বিভাগের ‘ভারতীয় শিল্পের মর্মানুসন্ধান’ পাঠ্যক্রমের অঙ্গ এ বক্তৃতা।
ক্যালেন্ডারে ধরা
নানা চরিত্র, বিচিত্র তাদের অভিব্যক্তি। হাসির গল্প, রম্যরচনা, ফিচারের সঙ্গে তাঁর মজার অলঙ্করণ, ক্যারিকেচার ও কার্টুন পাঠকের মন জয় করেছে, বেড়াতে গিয়ে তুলির টানে প্রকৃতিকে তুলে ধরাতেও সিদ্ধহস্ত শিল্পী দেবাশীষ দেব। ১৯৭৮ সালে সন্দেশ পত্রিকার শারদ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশ পায় তাঁর আঁকা, পরের বছর আনন্দবাজার পত্রিকা-য় যোগদান। কর্মজীবনের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি প্রকাশিত হল নতুন বছরের দেওয়াল-ক্যালেন্ডার ‘দেবাশীষ দেব@৪৫’ (ছবি)। অগ্নিভ চক্রবর্তীর পরিকল্পনা ও রূপায়ণে ক্যালেন্ডার সেজে উঠেছে তাঁর আঁকা পত্রিকা ও বইয়ের প্রচ্ছদ, অলঙ্করণ, কার্টুন, বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের ক্যারিকেচার, বই ও গল্প-উপন্যাসের নামাঙ্কন, বেড়ানোর আঁকায়। বিশেষ আকর্ষণ তাঁর আঁকা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্পের অলঙ্করণের প্রাথমিক খসড়া, জন্মদিন ও বিবাহবার্ষিকীর ডিজ়াইন করা কার্ড, সিনেমার নামলিপি, টাইটল-কার্ড।
নেপথ্যচারিণীরা
১৯৮৪-র ২৫ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা, চার দশক মঞ্চগানের সংগ্রহ-সম্প্রসারণে, থিয়েটার যাত্রা সিনেমার চর্চায় মগ্ন ‘একাডেমি থিয়েটার’। তার আর্কাইভে আছে ৩৫ হাজার বই ও রেকর্ড, পোস্টার ছবি, দুষ্প্রাপ্য ক্যামেরা-গ্রামোফোন রেকর্ডার, সাবেক বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানের প্রযোজনায় নানা সময়ে এ শহর শুনেছে মঞ্চগান লোকগান কাব্যগীতি সিনেমা ও যাত্রার গান-সম্ভার। এ বার তাদের নবতম নিবেদন ‘বাইজি সঙ্গীত’। বাইজিদের নাচ-গানে মুগ্ধ ছিলেন নবাব জমিদার নব্য বাবুরা; অর্ধেন্দুশেখর থেকে অজিতেশ মঞ্চ-পরম্পরা নিকিবাই জানকিবাই মালকাজান গওহরজান আখতারিবাইয়ের গানে ভরা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় জ্ঞান মঞ্চে সেই সব গানই শোনাবেন দেবজিত্ ও ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ওঁদের প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা, ভাষ্যপাঠে দেবদূত ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy