কালনা বইমেলার উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র
কল্পনাশক্তি বাড়াতে বই পড়ার অভ্যাস রপ্ত করতে বললেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের শিমূলতলার একপেরিয়া মাঠে চতুর্থ কালনা বইমেলার উদ্বোধন করেছেন প্রবীণ এই সাহিত্যিক। গত বছর পুরনো বাস স্ট্যান্ড এলাকার হিমঘরের মাঠে হয়েছিল বইমেলা। এ বার হচ্ছে আরও বড় এলাকা জুড়ে। বৃহস্পতিবার মেলা কমিটির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। অনেক প্রকাশনা সংস্থা মেলায় তাদের বিক্রয়কেন্দ্র খুলেছে।
মেলার উদ্বোধন করে শীর্ষেন্দু বলেন, ‘‘আধুনিক জিনিসপত্র তো দূর অস্ত, ছোটবেলায় বিদ্যুতের আলোও দেখিনি। হ্যারিকেনের আলোয় আমার পড়াশোনা। তখন টেলিফোন দেখিনি, রেডিয়ো দেখিনি, টিভি দেখেনি। মোবাইলের আবিষ্কার তখন হয়নি। একটা জিনিস ছিল। তা হল বই।’’ দর্শকদের উদ্দেশে সাহিত্যিক বলেন, ‘‘বইয়ের আকার অনেকটা জানালার মতো। বাস্তবে বই হল একটি জানালা। যে কূপমণ্ডূকতার হাত থেকে আমাদের অনেক দূরে নিয়ে যেতে পারে। মানুষ কল্পনাশক্তিতে অনেক অভাব দূর করতে পারে। কল্পনাশক্তি ছাড়া মানুষ কিছু আবিষ্কার করতে পারত না। কল্পনাশক্তিকে বরাবর শান দিয়ে এসেছে বই।’’ প্রবীণ সাহিত্যিক মনে করেন, ‘‘মোবাইল আসুক, এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আসুক। তবে বইয়ের মতো বিশ্বস্ত বন্ধু আর কেউ নেই। বইমেলায় হাজার হাজার মানুষ আসেন। অনেকে বই না কিনলেও বইয়ের গন্ধ শুঁকে দেখেন। হয়তো এক দিন কাগজে বই লেখা হবে না। তবে বইয়ের প্রাসঙ্গিতা কমবে না। আজকাল মানুষ অনেক বেশি বই পড়েন। মানুষ বই পড়ছেন না, আমি তা বিশ্বাস করি না। বরং আগে মানুষ কম পড়তেন। এখন অনেক বেশি বই পড়ছেন। এই পড়াটা আমরাটের পাই।’’
উদ্যোক্তারা জানান, এ বার মেলায় ৮৮টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার। এ ছাড়া, বিজ্ঞান মঞ্চ-সহ নানা সংগঠনের স্টলও রয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে মিলছে খাবার। রয়েছে নাগরদোলা। বইমেলার উদ্বোধনে ছিলেন পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সাংসদ সায়নী ঘোষ, জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহুল পান্ডে, কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ, পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি, শিল্পদ্যোগী সুশীল মিশ্র, কালনার উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল, কালনা কলেজের অধ্যক্ষ তাপসকুমারসামন্ত-সহ অনেকে।
সায়নী বলেন, ‘‘বই পড়ুন। বই উপহার দিন।’’ পুলিশ সুপারের আর্জি, জন্মদিন-সহ নানা অনুষ্ঠানে বই উপহার দিন। পরবর্তী প্রজন্মকে বইপিপাসু করে তুলুন। এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুমাল্য দাস সম্পাদিত অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস শীর্ষক বইয়ের উদ্বোধন হয়।
আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বইমেলা চলবে। প্রতি দিনই মেলা প্রাঙ্গণে হবে নানা অনুষ্ঠান। সেখানে স্থানীয় শিল্পীরা যেমন সুযোগ পাবেন, তেমনই কলকাতার পেশাদার শিল্পীরাও অনুষ্ঠান করবেন। বইমেলার আহ্বায়ক সুব্রত পাল বলেন, ‘‘প্রত্যেক বারই বইয়ের চাহিদা বাড়ে মেলায়। এ বারও দেশ, বিদেশের প্রচুর বই এসেছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্রত্যেক দিনই কবি, সাহিত্যিকেরা হাজির থাকবেন। আমাদের আশা, এ বারের বইমেলায় আগের বছরের থেকে অনেক বেশি বই বিক্রি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy