মার্চ মাস শুরু হতে এখনও এক দিন বাকি। কিন্তু আচমকা গরমের দাপটে এখনই নাকাল মহানগরের বাসিন্দারা। সকাল হলেই চড়তে শুরু করছে পারদ। দুপুরে পথেঘাটে শুকনো গরমে রীতিমতো চোখমুখ জ্বালা করছে! ঘাম হচ্ছে না, কিন্তু একটু ঘোরাফেরা করলেই গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে পথচারীদের।
আচমকা এই গরম হাজির হওয়া মানছে আবহাওয়া দফতরও। তাদের তথ্য বলছে, শুক্রবার মহানগরের তাপমাত্রা উঠে গিয়েছে ৩৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় স্বস্তি মিলছে না রাতেও। এ দিন শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি।
পরিবেশবিদদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ফেব্রুয়ারির শেষে গরমের এই অস্বস্তি শুধু তাপমাত্রার জন্য নয়। চোখমুখ জ্বালার পিছনে দায়ী বায়ু দূষণও। শুকনো আবহাওয়ায় এমনিতেই বাতাসে দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। বাড়তি থাকে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণও। পরিবেশবিদেরা মনে করছেন, গরমের সঙ্গে দূষিত কণাও মানুষের অস্বস্তির কারণ।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, এ দিন শহরের বহু জায়গাতেই বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল।
কেন এমন আচমকা গরম?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীদের মতে, মহানগর থেকে শীত বিদায় নিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এ সময় তাপমাত্রা বাড়ার কথা। কিন্তু সাগর থেকে জলীয় বাষ্পের জোগান মিলছে না। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে তাপমাত্রা কম থাকে। পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম ভারতের মতো শুকনো গরমও থাকে না। “জলীয় বাষ্পের জোগান না থাকায় শহরে এমন শুকনো গরম হাজির হয়েছে,” বলছেন এক আবহবিজ্ঞানী।
আবহবিদেরা বলছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা ছিল। ফলে বাতাসে ছিল জলীয় বাষ্প। কিন্তু অক্ষরেখাটি দুর্বল হয়ে পড়ায় সাগর থেকে মহানগরের বাতাসে জলীয় বাষ্প টেনে আনার পরিস্থিতি নেই।
এই পরিস্থিতিতে সাবধানবাণী শুনিয়েছেন চিকিত্সকেরাও। তাঁরা বলছেন, ঋতু বদলের সময়ে এমনিতেই রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আচমকা ঠান্ডা-গরম লেগে শরীর আরও খারাপ হতে পারে। রোদে ঘোরার সময়ে আচমকা গরমেও শরীর খারাপ হয়ে পড়তে পারে। শুকনো গরমের নিরিখে চিকিত্সকদের পরামর্শ, রোদ এড়াতে ছাতা-টুপি মাথায় রাখুন। সঙ্গে রাখুন জলের বোতল। গরম লাগলেও রাস্তার বরফ-আইসক্রিম বা ঠান্ডা পানীয় খাবেন না। ধুলোবালি এড়াতে রুমালে নাক ঢাকতে পারেন।
মহানগরের বাসিন্দারা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, কত দিন সইতে হবে এমন গরম?
হাওয়া অফিস বলছে, এই পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজন ঝড়বৃষ্টি। জলীয় বাষ্পের জোগান না বাড়লে ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হবে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, “দু’-এক দিনের মধ্যে ঝড়বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা নেই। তবে একটি অক্ষরেখা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সেটি তৈরি হলে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় ঝড়বৃষ্টি মিলতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy