আবার ফিরল ২০১২ সালের সেই দুঃস্বপ্নের রাত। আবার সেই চরম লজ্জার স্মৃতি ছায়া ফেলে গেল যেন।
সুজেটকে ধর্ষকরা গাড়িতে তুলে নিয়েছিল মধ্যরাতের পার্ক স্ট্রিট থেকে। বাঙালির গর্বের কলকাতাকে নিদারুণ কলঙ্কের ভাগীদার করে সুজেটকে তারা ফেলে দিয়েছিল এক্সাইড মোড়ের কাছে।
এ বার সেই কলঙ্কের ভাগীদার মহানগরীর উপান্তে সল্টলেক। মধ্যরাতের সল্টলেকে পথভ্রষ্ট তরুণীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার নামে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ। ভোরের কাছাকাছি পৌঁছে খালপাড়ে তরুণীকে ফেলে দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দেওয়া।
শিউরে উঠতে হয়। নৃশংসতা, পাশবিকতা, আদিম হিংস্রতা— কী বলা যেতে পারে একে, বুঝতে পারি না। তার চেয়েও বেশি দুর্বোধ্য যা, তা হল সুজেটের লড়াই একটুও শিক্ষা দিল না আমাদের! মুখ লুকিয়ে থাকেননি পার্ক স্ট্রিটের নির্যাতিতা। ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, লজ্জা ধর্ষিতার নয়, ধর্ষকের। অনেক কটূক্তি, অনেক অশালীন ইঙ্গিত, অনেক অসহযোগিতার ঢেউ সরিয়ে অনেক পথ এগিয়েছিলেন সুজেট। বিচারের দাঁড়িপাল্লায় সুজেটের সেই অদম্য জেদ অনেকটাই ভারী হয়ে উঠেছিল ধর্ষকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের তুলনায়।
আফশোস হয়েছিল সে দিন, যে দিন দেখেছিলাম ধর্ষকদের পরিণতি দেখার জন্য সুজেট আর এ পৃথিবীতে নেই। বার বার মনে হয়েছিল, এই নতুন সকালে জরুরি ছিল তাঁর থাকা, যিনি এ সকালের কারিগর।
আজ মনে হচ্ছে, বৃথা আফশোস করেছিলাম। কোনও নতুন সকালই আসেনি। মরীচিকা দেখেছিলাম মাত্র। সুজেটের লড়াই কোথাও কোনও বার্তা দিতে পারেনি। সুজেটের জয় এ শহরে বা তার আশেপাশে ঘাপটি মেরে থাকা পাশবিক অন্ধকারগুলো মুছতে পারেনি একটুও।
আজ মনে হচ্ছে, ভালই হয়েছে সুজেট নেই। তাঁরও হয়তো মনে হত, লড়াই বৃথা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy