কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
নতুন করে আর কেউ গ্রেফতার হয়নি। দু’দিন ধরে পুলিশ অফিসার সমীর সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফলে, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পোস্টার-কাণ্ডের তদন্ত এখনও মাঝপথে। কিন্তু এর মধ্যেই গোটা ঘটনায় দলেরই জেলা স্তরের এক নেতার কলকাঠি রয়েছে বলে দাবি করলেন কল্যাণ। কারণ, সমীরবাবু ওই নেতার ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। এমনকি, লোকসভা ভোটে হুগলিতে দলের খারাপ ফলের পিছনেও ওই নেতা এবং তাঁর অনুগামীদেরই দায়ী করেছেন সাংসদ। তবে, যে নেতার বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, তাঁর নাম উল্লেখ করেননি কল্যাণ।
সোমবার রাতে পোস্টার-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শ্রীরামপুরের বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বলেন, ‘‘দিল্লিতে, কলকাতায় দলের জন্য পরিশ্রম করি। আর দলেরই কোনও নেতা যদি পিছন থেকে কলকাঠি নাড়েন, তা হলে আর কী-ই বা বলার থাকে? যাঁরা এ সব করছেন, ঠিক করছেন না। দলের ভাবমূ্র্তির ক্ষতি হচ্ছে। দলনেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এত পরিশ্রম করছেন, আর আমাদেরই কিছু নেতা দলবিরোধী কাজ করে চলেছেন। এটা লজ্জার।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘শুধু বিজেপির বাড়বাড়ন্তে নয়, লোকসভা ভোটে জেলায় খারাপ ফলের পিছনে দলের এক শ্রেণির নেতাও দায়ী। তাঁরাই পুলিশ, প্রশাসনের একাংশকে ভোটে দল-বিরোধী কাজে যুক্ত করেছিলেন। রত্নাদির (হুগলির পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ)) মতো ভাল মানুষ না-হলে হারেন না। ওঁরা জেলাকে তৃণমূল সাংসদহীন করতে চেয়েছিলেন।’’
লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের পর থেকেই দলকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে দলের নেতাকর্মীদের একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও হুগলিতে ওই পোস্টার-কাণ্ডের জেরে সেই বার্তার কার্যকারিতা নিয়ে দলের সাধারণ কর্মীরা সন্দিহান। কল্যাণবাবু যে নেতার দিকে তোপ দেগেছেন, দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে কলকাতায় ডেকে পাঠাতে পারেন, এ গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।
কাটমানি ফেরত দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের নির্দেশের পর থেকে রাজ্য জুড়ে নানা জায়গায় অশান্তি হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগে সরব হয় বিজেপি এবং গ্রামবাসীদের একাংশ। কিন্তু গত ২৯ জুলাই গভীর রাতে শ্রীরামপুর স্টেশন এবং সংলগ্ন এলাকায় সাংসদ কল্যাণের নামে ‘কাটমানি-পোস্টার’ ঘিরে বিরোধীদের ততটা সরব হতে দেখা যায়নি। জলঘোলা হয় পুলিশ এবং শাসকদলের অন্দরেই। তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে একটি গাড়ি আটক করে। পরে দেখা যায়, ভাড়াগাড়িটি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিআইবি) সাব-ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত সমীরবাবু ব্যবহার করছিলেন। গাড়ির চালক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। দু’জনেই দাবি করে, ওই রাতে গাড়িতে সমীরবাবুও ছিলেন। শনিবার রাত থেকে সমীরবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ চললেও আগাগোড়া তিনি সব কথা অস্বীকার করেন বলে পুলিশের দাবি। এতদিন কল্যাণ এ নিয়ে সে ভাবে মুখ খোলেননি। কিন্তু এ বার তিনি মুখ খোলায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেল।
লোকসভা ভোটে জেলার তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে হুগলি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। আরামবাগে কোনও মতে মুখরক্ষা হয়েছে। এ নিয়ে কল্যাণ তোপ দাগলেও চুঁচুড়ার ওই নেতার ঘনিষ্ঠরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy