স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্যামাচরণ রায় তাঁর বাড়িতে বেদী স্থাপন করে কালী পুজো শুরু করেন। —নিজস্ব চিত্র।
স্বপ্নাদেশ থেকেই নাকি গোকর্ণের বিখ্যাত কালী পুজোর শুরুটা হয়েছিল। নিজের বাড়িতে বেদি স্থাপন করে সে পুজো শুরু করেন গোকর্ণের বাসিন্দা শ্যামাচরণ রায়। এর পর বহু সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সে পুজোর নাম বদলেছে। তবে এখনও সেই ঐতিহ্য অমলিন রয়েছে। প্রতি বছর যাবতীয় আচার মেনেই গোকর্ণের মন্দিরে কালী পুজো হয়।
তিন-চারশো বছর আগেকার এই কালী পুজোর জন্য নাম ছড়িয়েছে প্রাচীন গ্রাম গোকর্ণের। মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর-কান্দি রাজ্য সড়কের পাশের এই গ্রামের পুজো প্রথামাফিক হলেও প্রতিমা বিসর্জন হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সপ্তাহের শনি-মঙ্গলবারে মন্দিরে বেশি ভিড় হয়। এ ছাড়া কার্তিক মাসে কালী পুজো উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে কাতারে কাতারে ভক্তেরা আসেন। গোটা এলাকা আলোয় ভরে ওঠে। এখানে নিত্য পুজো এবং ভোগ হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের এক জন বলেন, “এখানে শুদ্ধ মনে প্রার্থনা করলে তা সফল হয়।”
শক্তিপুজোর জন্য প্রাচীন কাল থেকেই বিখ্যাত গোকর্ণ। গ্রামের মধ্যেই ছড়িয়ে আছে তার অসংখ্য চিহ্ন। তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত শ্যামারায় কালী মন্দির। মন্দিরের মনোরম ও শীতল পরিবেশ আজও নাকি ব্যথিত মানুষের মনে শীতলতা নিয়ে আসে। পাওয়া না পাওয়ার হিসেব মিলে যায় মুহূর্তের মধ্যে। কথিত রয়েছে, আজ থেকে প্রায় তিন-চারশো বছর আগে এই গ্রামে একটি শ্মশান ছিল। সেখানে গোকর্ণের বাসিন্দা হটেশ্বর রায় শ্মশান কালী প্রতিমার প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। তখন একে হাটুরায়কালী বলা হত। একটি রত্নবেদী উপর পুজো হত। পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এলাকার অন্য এক বাসিন্দা শ্যামাচরণ রায় তাঁর বাড়িতে বেদী স্থাপন করে পুজো শুরু করেন। ফলে ওই কালীর নাম বদলে হয় শ্যামারায় কালী।
আরও পড়ুন: আমপানে বাংলাকে আরও ২৭০০ কোটি দেবে কেন্দ্র, তৃণমূল বলছে ‘নগন্য’
আরও পড়ুন: শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করে প্রহৃত বেলুড় থানার ৭ পুলিশকর্মী
যাবতীয় প্রথা মেনেই পুজো হয় গোকর্ণের মন্দিরে। —নিজস্ব চিত্র।
শোনা যায়, গৌড় অধিপতি শশাঙ্কের সময় নাকি এই এলাকায় তাঁর সুবিখ্যাত গোশালা ছিল। প্রাচীন গাছের মাঝে বড় বড় পুকুর, বিন্যস্ত রাস্তা, গ্রামীণ হাসপাতাল, দুটো বড় হাইস্কুল, বাজারহাট— সব মিলিয়ে এখনও বনেদি গ্রামের ছাপ রয়ে গিয়েছে। এই গ্রামে সম্ভবত ১৯৯২ সালে ভয়ঙ্করতম ঘূর্ণিঝড় হয়। তাতে পুরো গ্রাম তছনছ হয়ে যায়। সেই ঝড়ের চিহ্ন আজও বয়ে বেড়াচ্ছে বহু পুরনো বাড়ি। তবে ঝড়ঝাপ্টা এড়িয়েও অক্ষত হয়েছে কালী পুজোর ঐতিহ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy