জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত ফলকের জায়গায় এখন বসেছে এই ফলক। নিজস্ব চিত্র
দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার কয়েক দিন আগেই গঙ্গাসাগরের যুব আবাসে জ্যোতিবাবুর নামাঙ্কিত ফলক ঢেকে দিয়ে বসানো হয়েছে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর নামের ফলক। রাজনৈতিক অশিষ্টাচারের অভিযোগ তুলে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম। সরকারের অবশ্য দাবি, ওই ফলক আগে থেকেই ছিল।
সাগরের যুব আবাস সংস্কারের পরে সেখানে বসেছে নতুন ফলক। পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গঙ্গাসাগরে গিয়ে সেই ফলকের আবরণ উন্মোচন করেছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও পূর্তমন্ত্রী অরূপের নাম দেওয়া ওই ফলকে নব কলেবরের যুব আবাস উদ্বোধনের তারিখ লেখা আছে ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, যখন থেকে আবাস সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল, তখনকার তারিখই উল্লেখ করা হয়েছে।
যুব আবাসের কর্মী ও নিরাপত্তাকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই দেওয়ালেই ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবাবুর নামের ফলক। কাঠের কাজ করে প্রথমে পুরনো ফলক ঢেকে দেওয়া হয়। সেখানে বসানো হয়েছে সাগর-সৈকতের ফটোফ্রেম। ফ্রেমের শোভা বাড়াতে ব্যবস্থা হয়েছে নীল-সবুজ রঙের আলোর। আবাসের এক নিরাপত্তাকর্মীর কথায়, “এই ভবন জ্যোতি বসু উদ্বোধন করেছিলেন। সেই সময়ের ফলকটা যে জায়গায় ছিল, সেখানেই এই ফটোফ্রেম বসানো হয়েছে।”
সিপিএম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, ১৯৮৪ সালের ২৪ অগস্ট সাগরে ওই যুব আবাস উদ্বোধন করেছিলেন তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবাবু। সে সময়ে সার্কিট হাউস ও জেলা পরিষদ বাংলোও উদ্বোধন হয়েছিল তাঁর হাতে। তখন বসানো ফলকে নাম ছিল যুবকল্যাণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী ও জেলা পরিষদ সভাধিপতি শিবদাস ভট্টাচার্যেরও। সেই আমলে সাগরের বিধায়ক প্রভঞ্জন মণ্ডল যুব আবাস গড়ার ভাবনা সরকারকে জানিয়েছিলেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সংগঠনের তরফে তখন আমরা সুভাষদা’র কাছে গিয়েছিলাম। গঙ্গাসাগরে পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রথম কাজ জ্যোতিবাবুর হাতেই। তাঁর নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টা রাজনৈতিক অশালীনতা! ইতিহাস মুছে দেওয়ার এই চেষ্টায় নরেন্দ্র মোদী বা যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে এই রাজ্য সরকারের ফারাক নেই!’’ একই সুরে বিধানসভায় কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ইতিহাস মুছে দিতে চাওয়াই এঁদের সংস্কৃতি। এই ভাবে চললে পরে কেউ এসে আবার ওঁদের ফলক খুলে না ফেলে দেয়!’’ নিউটাউনের নাম জ্যোতি বসু নগর করার সিদ্ধান্ত বাতিল হওয়ার প্রসঙ্গও তুলছেন তাঁরা।
নতুন ফলক অনুযায়ী, নবরূপে সজ্জিত যুব আবাসের উদ্বোধন হয়েছে ২০১৪ সালেই। তা হলে এত দিন পরে ফলক কেন? কেনই বা পুরনো ফলক ঢেকে ফেলা হয়েছে? পূর্তমন্ত্রী অরূপ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওই ফলক ছিলই। এর বেশি কিছু জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy