Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Molestation

Molestation: পুলিশই ভক্ষক হলে কী ভাবে চলবে: বিচারক

পুলিশের হাতে নিপীড়িত তরুণী এতটাই বিধ্বস্ত যে, এ দিন তিনি জানিয়ে দেন, ওই ঘটনার বিষয়ে আপাতত তাঁর কিছু বলার নেই।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:০৬
Share: Save:

‘‘মানুষ ভরসা করে পুলিশের কাছে সাহায্য চান। রক্ষক হয়ে আপনারাই যদি ভক্ষকের মতো আচরণ করেন, তা হলে চলবে কী ভাবে?’’

কলকাতার রাতপথে তরুণী ছাত্রীকে মোটরবাইকে তুলে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত এএসআই-কে সোমবার সরাসরি এই প্রশ্ন করেন বিধাননগরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়। ধৃত এএসআই এবং তাঁর সঙ্গী সিভিক পুলিশকর্মীকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শনাক্তকরণের জন্য ধৃতদের টিআই প্যারেডে দাঁড় করানো এবং নিগৃহীতার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার ব্যাপারে পুলিশ যে-আবেদন জানিয়েছিল, বিচারক সেই আর্জিও মঞ্জুর করেছেন।

পুলিশের হাতে নিপীড়িত তরুণী এতটাই বিধ্বস্ত যে, এ দিন তিনি জানিয়ে দেন, ওই ঘটনার বিষয়ে আপাতত তাঁর কিছু বলার নেই। তরুণী এখন আছেন আসানসোলে নিজের বাড়িতেই। রবিবার পরীক্ষা থাকায় শুক্রবার রাতে তিনি সল্টলেকে এসে নামেন। ফোনে ধরা হলে তরুণী এ দিন জানান, রবিবার পরীক্ষা দিয়ে তিনি আসানসোলে ফিরেছেন। আদালত যে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়টি মঞ্জুর করেছে, তা জানানো হলে তরুণী বলেন, ‘‘আদালত ডাকলে নিশ্চয়ই যাব। পরে সব জানতে পারবেন। আপাতত কিছু বলার মতো মানসিক পরিস্থিতিতে নেই আমি।’’

তিনি সে-রাতে কী ভাবে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন?

জবাবে ওই তরুণী শুধু বলেন, ‘‘ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পুলিশ পুরো বিষয়টি জানে। আমাকে কিছু বলতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে।’’ পুলিশি সূত্রের খবর, ফোন বন্ধ থাকায় ক্যাব বুকিং করতে না-পেরে ওই তরুণী রাস্তায় থাকা পুলিশকর্মীদের মোটরবাইকে উঠেছিলেন। কাজেই ঠিক কোন ফোন থেকে তিনি বন্ধুদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। তরুণী তার জবাব দেননি। পুলিশের উর্দি এবং পুলিশের স্টিকার সাঁটানো মোটরবাইক দেখেই তরুণী তাঁদের সাহায্য চেয়েছিলেন বলে খবর।

পুলিশি সূত্রের খবর, ধৃত এএসআই এবং তাঁর সঙ্গী সিভিক ভলান্টিয়ার নাওভাঙা এলাকায় একটি ‘গেট টুগেদার’ সেরে ফিরছিলেন। তাঁদের গায়ে মদের গন্ধ ছিল বলেও তরুণী এফআইআরে জানিয়েছেন। ধৃত এএসআই সন্দীপ পাল এবং সিভিক ভলান্টিয়ার অভিষেক মালাকারের আইনজীবী অভিষেক মুখোপাধ্যায় ও পবিত্র বিশ্বাস এ দিন আদালতে তাঁদের মক্কেলদের জামিনের আর্জি জানান। তাঁদের যুক্তি, পুলিশকর্মীরা উপকার করতে চেয়েছিলেন। তরুণীও এফআইআরে স্বীকার করেছেন, অভিযুক্ত সন্দীপের ফোন থেকেই তিনি তাঁর বন্ধুকে খবর দিয়েছিলেন। অভিষেকের আইনজীবী পবিত্রবাবু আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল বাইক চালাচ্ছিলেন। তাঁর পক্ষে হেনস্থা করা সম্ভব নয়। এফআইআরের বয়ানে ‘অসঙ্গতি’ আছে বলে তাঁর অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী সাবির আলির বক্তব্য, অভিষেক বাইক চালালেও ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন। ধৃতেরা আদৌ উপকার করতে চেয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারক। ধৃতদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ধৃতেরা সেই সময় ডিউটিতে ছিলেন না। তা সত্ত্বেও তাঁরা স্থানীয় থানার সাহায্য নিলেন না কেন? কেন তরুণীকে একটি ক্যাব ধরিয়ে না-দিয়ে তাঁকে মোটরবাইকে বসালেন?

বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তের ভার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদের আধিকারিককে দেওয়া হবে। তদন্ত দ্রুত শেষ করে চার্জশিট দিয়ে শুনানির জন্য সব পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান ডিসি (সদর) সূর্যপ্রকাশ যাদব। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এই বিষয়ে তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং পুলিশের কাছে তদন্তের সবিস্তার তথ্য চেয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Molestation sexual harassment District magistrate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy