স্বাগত: জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে সংস্থার কর্ণধার সজ্জন জিন্দলের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার শালবনিতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগেই শালবনিতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গেল। সোমবার সেই মঞ্চ থেকে রাজ্যের শিল্পবান্ধব চেহারাটা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুঝিয়ে দিলেন, শিল্পে অশান্তি তাঁর সরকার বরদাস্ত করে না। জেলার পুলিশ-প্রশাসনকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “জিন্দলরা যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন তা দেখতে হবে। ওরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের মতো।” সমান্তরাল ভাবে স্থানীয়দের প্রতি তাঁর বার্তা, “ওদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে আগামী দিনে আপনারা কাজ করবেন। যত ভাল ব্যবহার ওরা পাবে, তত বেশি করে ওরা শিল্প তৈরি করবে।”
সপরিবার মঞ্চে হাজির জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দলও মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশংসায় ভরিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, “তিন বছর আগেও অনেকে বলতেন, বাংলায় শিল্প করার দরকার নেই। কিন্তু আমি জানতাম, বাংলা উন্নয়নশীল রাজ্য, মমতাদির সরকার শিল্পবান্ধব। দিদি বলেছিলেন, আপনারা শিল্প করুন। দিদিই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। আজ উত্সাহ দিতে এসেছেন।”
সজ্জনকে বলতে শোনা যায়, “বাংলায় এটা আমাদের প্রথম প্রকল্প। জমি নেওয়ার দশ বছর পরে প্রকল্প চালু হচ্ছে। আগামী দিনে আরও পরিকল্পনা রয়েছে।” সজ্জনের মতে, “এ রাজ্যে যে সহায়তা মিলেছে, অন্য রাজ্যে এত তাড়াতাড়ি তা মেলে না। মনে হয়, এটা আমাদেরই রাজ্য।” কন্যাশ্রী প্রকল্পেরও বিস্তর প্রশংসা করেছেন সজ্জন। তিনি বলেন, “মমতাদির কন্যাশ্রী এখন তো বিশ্বখ্যাত হয়েছে।”
আরও পড়ুন: মুকেশ, মিত্তলরা আজ শিল্প সম্মেলনে
২০০৮ সালের ২ নভেম্বর শালবনিতে জিন্দলদের ইস্পাত প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল। তখন জিন্দলদের ঘোষণা ছিল, ২০১৩ সালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের উত্পাদন শুরু হবে। পরে যদিও ইস্পাত প্রকল্প স্থগিত হয়। শালবনিতে ৮০০ কোটি টাকা লগ্নি করে সিমেন্ট কারখানা গড়ে তোলা হয়। জিন্দল প্রকল্পে জমিদাতাদের সকলে এখনও চাকরি না পাওয়ায় এলাকায় অসন্তোষ রয়েছে। তা আঁচ করেই রবিবার সজ্জন-পুত্র পার্থ জিন্দল জানিয়েছিলেন, সব জমিদাতা পরিবারকে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তাঁরা রাখবেন।
কাজ না পাওয়ার অসন্তোষ যাতে সমস্যা তৈরি না করে স্থানীয়দের সেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। ‘বেঙ্গল মিন্স বিজনেস’ মনে করিয়ে দিয়ে জিন্দলদের পূর্ণ সহযোগিতা করতে বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে মমতা বলেছেন, “জিন্দল গোষ্ঠীর সঙ্গে গরিব মানুষের সম্পর্ক খুব ভাল। আমি শুনেছি পার্থ (সজ্জন-পুত্র) একটা ঘর তৈরি করছেন এখানে থাকবেন বলে। এলাকায় থাকলে এলাকার জন্য আরও বেশি ভাবা যায়, আরও বেশি কাজ করা যায়।” জমিদাতাদেরও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।
সিমেন্টের পরে বিদ্যুৎ উত্পাদন কেন্দ্র এবং রং কারখানা গড়ার পরিকল্পনা জানিয়ে সজ্জন বলেন, “আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর রাজ্যের অন্যতম উন্নয়নশীল জেলা হয়ে উঠবে।” সজ্জনের উদ্দেশে মমতাকেও বলতে শোনা যায়, “দিল মাঙ্গে মোর। আপ আচ্ছে সে কাম করেঙ্গে, ইয়ে মেরে কো বিশ্বাস হ্যায়। ইট ইজ ইওর ওন হোম, এনজয় অ্যান্ড ওয়ার্ক ফর দ্যাট।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy