শোভাবাজার রাজবাড়িতে পুজো দিচ্ছেন জে পি নড্ডা। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
সরাসরি রাজনীতির কথা এড়িয়ে গেলেও কলকাতায় পুজোর উদ্বোধনে এসে ‘দুর্নীতি ও অত্যাচার’ বন্ধে প্রার্থনার কথা শোনা গিয়েছিল কেন্দরীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গলায়। একই ভাবে পুজোর মধ্যে শহরে এসে ইঙ্গিতেই রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা। তাঁর কথায় উঠে এল ‘দুর্নীতি’, ‘ভাই-ভাতিজা’ প্রসঙ্গ। ‘অশুভ শক্তি’ বিনাশ করার কথাও বললেন নড্ডা। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য পাল্টা কটাক্ষ করেছে, এত দিন যে বিজেপি নেতারা বলতেন বাংলায় পুজো করতে দেওয়া হয় না, তাঁরাই পুজোর সময়ে রাজ্যে এসে নানা কথা বলছেন!
বিমানবন্দরে নেমে শনিবার সকালে নড্ডা প্রথমে যান হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডের একটি পুজো মণ্ডপে। সেখানে তিনি দুর্গা প্রতিমাকে জবার মালা পরান, আরতি করেন। এর পরে তাঁর গন্তব্য ছিল শোভাবাজার রাজবাড়ি। সেখানে সপ্তমীর অঞ্জলি দেন। সেখান থেকে যান নিউ মার্কেট সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে। সফরে শেষ গন্তব্য ছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। সেখান থেকে রাজারহাটের একটি হোটেলে কিছু সময় কাটিয়ে তিনি দিল্লি ফিরে গিয়েছেন।
নড্ডা এ দিন বলেন, “কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতার পূণ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে আমার মা দুর্গার কাছে কী বা চাওয়ার থাকতে পারে! আমি যে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে কলকাতায় আসতে পেরেছি, সেটা ভেবেই আমার গর্ব হচ্ছে! আমি চাই, অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভ শক্তির বিকাশ হোক।’’ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে রামমন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “যাঁরা ভাই-ভাতিজা করে, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচারের পথ নিয়েছে, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। দেশ সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস, সব কা প্রয়াসের পথে চলুক।” সেই সঙ্গে এ দিন তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে বাংলার দুর্গাপুজোর ইউনেস্কোর কাছ থেকে পাওয়া স্বীকৃতির কথা।
বিজেপি সভাপতির বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘এত দিন তো বলতেন, বাংলায় পুজো হয় না। এখন পুজোয় ঘুরতে আসছেন। এত দিন মিথ্যে কথা বলার জন্য ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘যিনি নিজের রাজ্যে দলকে জেতাতে পারেন না, তাঁর অন্য রাজ্যে এসে বড় বড় কথা বলার আগে লজ্জা পাওয়া উচিত! আর সামনে তো লোকসভা নির্বাচন। সেখানে অশুভ শক্তি সরে গিয়ে শুভ শক্তি আসুক, সারা দেশ চাইছে। উনিও চাইছেন, অসুবিধা নেই তো!’’ সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে নড্ডাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, সহ-পর্যবেক্ষক আশা লকড়া, উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ, রাজ্য কোর কমিটির সদস্য রাহুল সিংহেরা।
তবে নড্ডা আসার আগে তাঁর হোর্ডিং খুলে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে এক প্রস্ত বিতর্ক হয়েছে। নিউ মার্কেট, শোভাবাজার রাজবাড়ি-সহ যে কয়েকটি মণ্ডপে এ দিন নড্ডার যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার তরফে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে হোর্ডিং লাগানো হয়েছিল। বিজেপির অভিযোগ, পুরসভার তরফে সকালে হোর্ডিংগুলি খুলে ফেলা হয়। দলের উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি তমোঘ্নের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নিজেরা সামনে না এসে পুরসভাকে দিয়ে এই কাজ করাচ্ছে।’’ হোর্ডিং সরানো বন্ধ না হলে শহর অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তাঁরা। যদিও পরে আর বেশি দূর জল গড়ায়নি। তৃণমূলের তরফে কুণালের অবশ্য দাবি, ‘‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে কিছু করা হয়নি। কারও হোর্ডিংয়ের উপরে হোর্ডিং লাগালে যদি অভিযোগ হয়, তবে প্রশাসনকে তো ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy