গুরুদ্বারার অনুষ্ঠানে বাঁ দিক থেকে মলয় ঘটক ও অরুপ বিশ্বাস, মাঝে জিতেন্দ্র তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের মূলস্রোতে ফেরার চেষ্টা অব্যাহত জিতেন্দ্র তিওয়ারির। এ বার তাঁকে দেখা গেল আসানসোলের গুরুদ্বারার এক অনুষ্ঠানে রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। সেখান থেকে দলীয় কর্মসূচির প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার কথাও জানান তিনি। রবিবার তিনি বলছেন, ‘‘আমি দলের সঙ্গে আছি। দল যেমন বলছে, তেমনই সভা, অনুষ্ঠান করছি। জেলা এবং রাজ্যের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়।’’ ঘটনাচক্রে, রবিবারই আসানসোল রবীন্দ্র ভবনে বৈঠকে বসে তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ দেননি জিতেন্দ্র। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়কের যুক্তি, ‘‘আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর রোড শো আছে। পাণ্ডবেশ্বরে তার পাল্টা রোড শো করব আমি। তারই প্রস্তুতি বৈঠক আছে পাণ্ডবেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায়। তাই রবীন্দ্রভবনের সভায় থাকতে পারছি না। জেলা সভাপতির অনুমতি নিয়েই সব কাজ করছি।’’
গত ১৬ ডিসেম্বর জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন জিতেন্দ্র। জানিয়ে দেন দলত্যাগের কথাও। তার পরের দিন কলকাতায় অবশ্য উল্টো ছবি দেখা যায়। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পাশে দাঁড়িয়ে জিতেন্দ্র ঘোষণা করেন, তিনি দলে থাকছেন। ঘটনাচক্রে সেই দৃশ্যের মাস খানেকের মাথায় রবিবারও আসানসোলের গুরুদ্বারের অনুষ্ঠানে জিতেন্দ্রর পাশে ছিলেন রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী।
এর মাঝে আসানসোলে জিতেন্দ্রর জায়গায় উঠে এসেছেন ভিন্ন চরিত্র। পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতির পদ জিতেন্দ্রকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তা তুলে দেওয়া হয়েছে অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের হাতে। তাৎক্ষণিক ভাবে নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানাতে কার্পণ্য করেননি জিতেন্দ্র। কিন্তু তার পর দিনই টুইটার এবং ফেসবুকে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ ভাষায় শায়েরি এবং প্রবাদ তুলে ধরেছিলেন। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে একটি আমেরিকান প্রবাদ তুলে ধরে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক লিখেছিলেন, ‘হোয়েন দ্য গোয়িং গেট্স টাফ, দ্য টাফ গেট্স গোয়িং’। অর্থাৎ, ‘পরিস্থিতি যখন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, দৃঢ়চিত্ত মানুষই তার মোকাবিলা করতে পারেন’। সেই একই কথা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও লেখেন জিতেন্দ্র। পাশাপাশিই উর্দু কবি রাহত ইন্দোরির একটি শায়েরিও ফেসবুকে পোস্ট করেন। লেখেন, ‘আমাদের শহরের দৃশ্য দেখতে পাবেন না / এখানকার মানুষ চোখে স্বপ্ন রাখে / প্রদীপ হয়ে আমায় নেভাতে পারবে না তুমি / আমরা আমাদের বাড়িতে অনেক সূর্য রাখি’। সেই সঙ্গে জুড়েছেন আরও একটি পোস্ট, ‘যত কঠিন সংঘর্ষ হবে, বিজয়ের আনন্দ ততই মধুর হবে’। জিতেন্দ্রর আমেরিকান প্রবাদ এবং উর্দু শায়েরির মিশেলে ওই পোস্ট স্বাভাবিক ভাবেই নিত্যনতুন জল্পনা তৈরি করে।
তার পর থেকে দলীয় বৈঠকেও সে ভাবে দেখা যায়নি তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতিকে। নতুন জেলা কমিটি গঠন হওয়ার পর আসানসোল পোস্ট অফিস সংলগ্ন তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে কমিটির প্রথম বৈঠক হয় গত ১৯ জানুয়ারি। সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন জিতেন্দ্র। গত ২৩ জানুয়ারি পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর ছাতাডাঙায় দলীয় সভায় তাঁকে দেখা যায়নি। তার পর দিন, অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে জেলার শাখা সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকেও গরহাজির থাকেন জিতেন্দ্র।
জিতেন্দ্রর অনুপস্থিতি নিয়ে অরূপ অবশ্য বলছেন, ‘‘দলটা আমাদের। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের দলের ব্যাপার আমদের বুঝতে দিন।’’
রবিবার গুরুদ্বারার অনুষ্ঠানের পর জিতেন্দ্র টুইটারে লেখেন, ‘আজ বার্নপুরের তোরণদ্বারের উদ্বোধন হয়েছে যাতে বড় ভাই আদরণীয় @মলয় ঘটক’দা এবং অভিভাবক তুল্য রাজ্য সরকারের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন’।
आज बर्नपुर के तोरण द्वार का उद्घाटन किया गया, जिसमे बड़े भाई आदरणीय @GhatakMoloy दा और अभिभावक तुल्य राज्य सरकार के मंत्री @aroopbiswasaitc भी उपस्थित थें। pic.twitter.com/zpZ0rIjjkJ
— Jitendra Tiwari (@JitendraAsansol) January 24, 2021
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy