জবানবন্দি দিয়ে আদালত থেকে বেরোনোর পথে ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল ওরফে অনুপ সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলার চেষ্টায় তাঁকেও টানা হয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের বারমোর বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল ওরফে অনুপ সিংহ। শুক্রবার কলকাতায় এসে গোপন জবানবন্দি দিলেন তিনি। এমপি-এমএলএ কোর্টে জয়মঙ্গল সবিস্তার জানিয়েছেন, কী ভাবে, কারা তাঁকে ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেস এবং জেএমএমের যৌথ সরকার ভাঙার চেষ্টায় জুড়তে চেয়েছিলেন? ঠিক কী প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর আস্থা ভোটে জিতে ঝাড়খণ্ডে নতুন করে নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করেছে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সরকার। তার আগে গত ৩০ জুলাই হাওড়ার পাঁচলায় ৪৯ লক্ষ নগদ টাকা-সহ গ্রেফতার করা হয় তিন ঝাড়খণ্ড বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কছপ এবং নমন বিক্সল কোঙারিকে। অভিযোগ ওঠে, এঁরা ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলার জন্য টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমনই অভিযোগ করেন ঝাড়খণ্ডেরই শাসক জোটের আর এক বিধায়ক জয়মঙ্গল ওরফে অনুপ। রাঁচীতে দায়ের করা সেই অভিযোগে অনুপ বলেছিলেন, তাঁকেও কলকাতায় আসতে বলা হয়েছিল। ১০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। রাজেশ এবং ইরফান তাঁকে ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার জন্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা করতেও বলেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। শুক্রবার কলকাতার এমপি এমএলএ কোর্টে গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জয়মঙ্গল বলেন, ‘‘২০২১ সালেও আমি অভিযোগ করেছিলাম। তখন ঝাড়খণ্ড পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল, বহু প্রমাণও হাতে ছিল তাদের। এর ভিত্তিতেই গত ৩০ জুলাই একটি অভিযোগ করি। তার প্রেক্ষিতে এই জবানবন্দি।’’
ঝাড়খণ্ডের বিধায়কদের ওই মামলায় এর পর তদন্ত শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা শাখা সিআইডি। গ্রেফতার করা হয় তিন বিধায়ককে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে তিন বিধায়ক ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়েছেন ঠিকই, তবে তদন্ত চলছে। শুক্রবার জয়মঙ্গলের জবানবন্দি দেওয়া নিয়ে তাঁর আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, ‘‘২০২১ সাল থেকে কংগ্রেসের সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। সে বছর এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তও শুরু হয়। অভিযুক্ত তিন ঝাড়খণ্ড বিধায়কের নাম প্রকাশ্যে এসেছিল তখনও। তখন থেকেই কুমার জয়মঙ্গল ওরফে অনুপ সিংহের উপর চাপ দিচ্ছিলেন ঝাড়খণ্ডের ওই তিন বিধায়ক। যার জেরে গত ৩০ জুলাই রাঁচীতে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি।’’ পরে কৌস্তভ জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এই জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা হচ্ছিল। নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। শুক্রবার ১৬৪ ধারায় ওই জবানবন্দি বা স্বীকারোক্তি দিতেই কলকাতায় এসেছেন ঝাড়খণ্ডের এই বিধায়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy