পার্থ-কাণ্ডে তৃণমূল লজ্জায় বলেও দাবি করেছেন সৌগত।
এমন দুর্নীতি দেশে এর আগে দেখা যায়নি। শিক্ষক নিয়োগ-কাণ্ড নিয়ে এই ভাষাতেই সরব বিরোধীরা। এ বার সেই সুরই শোনা গেল তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মুখে। শুধু তাই নয়, ‘এবিপি আনন্দ’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার নগদ টাকা উদ্ধারকে লালুপ্রসাদ যাদব বা সুখরাম শর্মার সঙ্গে তুলনাও করেন সৌগত।
এর আগেও এমন নানাবিধ মন্তব্য করে তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন সৌগত। এ বারও তেমনটা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘সারা ভারতেই এই রকম দুর্নীতির ব্যাপার কম হয়েছে। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ অনেক দিন জেলে ছিলেন। কিন্তু লালুর কাছ থেকে এত নোট তো বার হয়নি। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন সুখরাম। তাঁর ওখান থেকে দু-তিন-চার কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে দেখা গিয়েছে। এই ভাবে তো কোথাও কখনও দেখা যায়নি।’’
তবে দলের কোনও নেতাই প্রকাশ্যে সৌগতের এই মন্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাইছেন না। রাজ্য স্তরের এক নেতা বলেন, ‘‘উনি অস্বস্তিতে আছেন বুঝতে পারছি। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে বলে দলের অস্বস্তি যে বাড়াচ্ছেন সেটাও ঠিক। তবে উনি দলের প্রবীণ নেতা। তাই আমি এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না। যা বলার দলনেত্রী বলবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্তব্য শোনার পরে দলের ভিতরে কিছু বলেছেন কি না তা অবশ্য জানা যায়নি। শুক্রবার তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে সৌগতকে ফোন করা হলে তিনি ওই বক্তব্যে অনড় বলেই জানান।
শুধু লালু, সুখরামের সঙ্গে তুলনা করাই নয়, উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়েও সৌগত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘৫০ কোটি টাকা! টাকার ছবি না দেখলে তো বিশ্বাস করতে পারতাম না। দেখলাম তো ছবি। এই যে টাকার পাহাড়টা দেখা গিয়েছে, এটা দেখার পরে লোকের কাছে কী জবাব দেব আমরা? এই বিড়ম্বনা, এই লজ্জা তো আমাদের আছে।’’ একই সঙ্গে সৌগত এটা বুঝিয়ে দেন যে, নিজে এমনটা বললেও, এ সব বিষয়ে বিরোধীদের সমালোচনা তিনি শুনতে নারাজ। সৌগত বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের লোক, তৃণমূলের সঙ্গেই থাকব, আর তৃণমূলের সবাই চোর বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আমরা প্রতিরোধ করব।’’
প্রসঙ্গত গত ২২ জুলাই রাতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাটে তল্লাশি করে বিপুল নগদ উদ্ধার করে। এর পরে বেলঘরিয়ায় অর্পিতার অন্য একটি ফ্ল্যাট থেকেও নগদ উদ্ধার হয়। সব মিলিয়ে উদ্ধার হওয়া অর্থের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়াও ৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সোনা ও বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার হয়। ইডির দাবি অনুযায়ী, খোঁজ মেলে বহু কোটির স্থাবর সম্পত্তি ও অনেক ভুয়ো সংস্থার হদিস।
সৌগত যে সুখরাম শর্মার প্রসঙ্গ তুলেছেন, তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী। ১৯৯৬ সালে টেলিকম ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তাঁর বাড়ি থেকেও কয়েক কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছিল। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ার জেরে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিল কংগ্রেস। অন্য দিকে, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy