জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
করোনা-কালে সব ধরনের অনুষ্ঠানই সারতে হচ্ছে নমো নমো করে। অতিমারির ছায়ায় স্বাধীনতা দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানও এ বার ছোট এবং নিয়ন্ত্রিত। অথচ সেই সময়েই রাজভবনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চা-চক্রের আসরে গুচ্ছ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়ে এমন ভাবে অনুষ্ঠান করা কত দূর সঙ্গত, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রশাসনিক এবং চিকিৎসক মহলেও। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়ার সম্ভাবনাও অত্যন্ত ক্ষীণ।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজভবনে চা-চক্রের আসরে আমন্ত্রিত প্রায় ৯০ জন। করোনা-যোদ্ধাদের কয়েক জনকেও এ বার স্বাধীনতা দিবসে আপ্যায়িত করতে চেয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়। আমন্ত্রিতদের গাড়ির চালক, অনেকের নিরাপত্তারক্ষী এবং ব্যক্তিগত সঙ্গীদেরও রাজভবন চত্বরে এসে অপেক্ষা করতে হবে। সকলে যদি না-ও আসেন, তা হলেও সংখ্যাটা নেহাত কম হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসার ব্যবস্থার কথা রাজভবন সূত্রে বলা হলেও সংক্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি যে তাতে থেকে যাবে, সেই উদ্বেগের কথাই শোনা যাচ্ছে প্রশাসনিক কর্তা এবং চিকিৎসকদের মুখে। বিশেষত, যে অনুষ্ঠানে প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের কর্তারা আমন্ত্রিত, সেখানে কোনও ভাবে কেউ সংক্রমিত হলে তার অভিঘাতও হবে অনেক বেশি।
সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে টেলিফোনে কথার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছিলেন, এ বছর চা-চক্রের আয়োজন যেন ভেবেচিন্তে করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও আজ রেড রোডে বাহুল্যবর্জিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানই করছেন। কিন্তু রাজভবন কত আমন্ত্রিতকে নিয়ে কী ভাবে আজ অনুষ্ঠান করছে, সেই ব্যাপারে শুক্রবার রাত পর্যন্ত নবান্নের কাছে বিশদ কোনও তথ্য পাঠানো হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যে কত জন আজ রাজভবনের অনুষ্ঠানে যাবেন, তা নিয়েও সংশয় আছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা মানে কি তাহলে কেবল সংখ্যাগুরুর ধর্মাচরণেরই স্বাধীনতা?
চার দেওয়ালের মধ্যে এই সময়ে এমন অনুষ্ঠান যে যুক্তিপূর্ণ নয়, তা ব্যাখ্যা করে চিকিৎসক কুণাল সরকার বলছেন, ‘‘এখন যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে, সে বিয়ে বা স্বাধীনতা দিবস যা-ই হোক না কেন, বেশি লোক না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। ঘরের মধ্যে অনুষ্ঠান হলে তো আরও সচেতন থাকা দরকার। যখন আমরা গোষ্ঠী-সংক্রমণের দিকে যাচ্ছি, সেই সময়ে এমন কোনও আয়োজন উচিত নয়, যাতে আশঙ্কার জায়গাটা উন্মুক্ত হয়।’’
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির জন্য স্বাধীনতা দিবসের সব ধরনের জমায়েত বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে সমাজে ভুল বার্তা যেতে পারে। কারণ, কোনও বিশিষ্ট মানুষ যদি এই ধরনের অনুষ্ঠান করেন, তা হলে সমাজে তার প্রভাব অনেক বেশি পড়ে। আশা করব, রাজ্যপাল নিশ্চয়ই কোভিড বিধিকে মান্যতা দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy