(বাঁ দিক থেকে) সুকান্ত মজুমদার, ব্রাত্য বসু, সিভি আনন্দ বোস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক আকচাআকচি শুরু হয়ে গেল। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর জন্য সরাসরি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা সুকান্তকে জবাব দিতে গিয়ে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর জন্য সরাসরি রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে দায়ী করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হোস্টেলের তিন তলা থেকে ‘কোনও ভাবে’ পড়ে যান নদিয়ার বগুলা থেকে কলকাতায় পড়তে আসা স্বপ্নদীপ। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় ১৭ বছর বয়সি পড়ুয়ার। তার পর থেকেই র্যাগিং-এর অভিযোগ উঠছে। শুধু তাই নয়, কেন স্বপ্নদীপকে পোশাকহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই মৃত ছাত্রের বাবা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ সবের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক তরজা।
সুকান্ত টুইটে লিখেছেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে রাজ্য সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে সুশাসন কায়েম রাখতে ব্যর্থ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার র্যাগিংয়ের মতো অপরাধ রুখতে পারেননি। রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানাই।’’ পাল্টা ব্রাত্য লিখেছেন, ‘‘যে কোনও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাতে বিজেপির কাজ হল রাজ্য সরকারের খুঁত খুঁজে বার করা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আমাদের উপর দায় চাপানোর তাড়াহুড়োয় এটা ভুলে গিয়েছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি রাজ্যপালের নিয়ন্ত্রণে। ফলে এটা তাঁর ব্যর্থতা।’’
জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকার সময়ে বিধানসভায় আচার্য বিল পাশ হয়েছিল। যেখানে রাজ্যপালের বদলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদাধিকার বলে মুখ্যমন্ত্রীকে করার কথা বলা হয়েছিল। রাজ্যপাল বদলে গেলেও সেই বিলে সই না হওয়ায় তা আইনে পরিণত হয়নি। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের কর্মসূচি থেকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে আচার্য বলে সই করুন।’’ মমতা উচ্চশিক্ষায় রাজভবনের ‘হস্তক্ষেপ’-এর অভিযোগ তুলে এ-ও বলেছিলেন, ধনখড় এই রকম (বোসের মতো) ছিলেন না। এই আবহে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনাতেও সেই রাজনৈতিক চাপানউতর জারি রইল।
প্রসঙ্গত, বুধবার মৃত ছাত্রটির বাবাকে ফোন করেছিলেন মমতা। সূত্রের খবর, তাঁকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ছেলেকে তো তিনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। কিন্তু সঠিক তদন্ত করে সত্য সামনে আনা এবং দোষীদের (যদি কেউ থেকে থাকে) চিহ্নিত করে শাস্তি সুনিশ্চিত করার বিষটি তিনি দেখবেন। পাল্টা রাজ্যপাল বলেছেন, তিনি পৃথক একটি কমিটি গড়ে গোটা বিষয়টির তদন্ত করাবেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়েও গিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
সব মিলিয়ে, স্বপ্নদীপের মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy