বাবুল সুপ্রিয়ের সামনে সুরঞ্জন দাস। বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
গোলমালের বিভিন্ন ঘটনায় আগেও তাঁরা পুলিশ ডাকেননি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার আরও এক বার জানিয়ে দিলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকায় বিশ্বাসী নন তাঁরা। কারণ, এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ দিন এক প্রেস বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার যাদবপুরে প্রবল ছাত্র-বিক্ষোভের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পড়ুয়ারা তাঁকে আটকে রাখেন। উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে পুলিশ ডাকতে বলেন বাবুল, আচার্য-রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উপাচার্য সরাসরি জানিয়ে দেন, তিনি ইস্তফা দেবেন, তবু ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকবেন না।
তার পরে মন্ত্রীকে ‘উদ্ধার’ করতে ছুটে যান রাজ্যপাল। সঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢোকে পুলিশ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ দিনও জানান, তাঁরা চান না, ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকুক। বাবুলের আগমনের পরে যা ঘটেছে, তার নিন্দা করা হয়েছে বিবৃতিতে। জানানো হয়েছে, ক্যাম্পাসে রাজ্যপালের গাড়ি আটকে রাখার ঘটনা দুঃখজনক। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনাও দুর্ভাগ্যজনক। আচার্যের গাড়ির সামনে যে-অবরোধ হয়েছিল, পুলিশ নয়, শিক্ষক-কর্মীদেরই হস্তক্ষেপে তা ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটা এক বিবৃতিতে জানায়, বাবুলের আচরণ প্ররোচনামূলক ছিল। তবে ছাত্রদের আরও সংযমী হওয়ার দরকার ছিল। জুটা-র সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের সই-সহ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আচার্য-রাজ্যপালের ভূমিকায় তাঁরা গভীর ভাবে মর্মাহত। বাবুল যে-ভাবে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তার নিন্দা করেছে জুটা। রাতে চার নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে যে-ভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে, নিন্দা করা হয়েছে তারও। যাদবপুরকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ করার জন্য শিক্ষকদের দাবিপত্র হিসেবে একটি চিঠি সে-দিন বাবুলের হাতে দেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। জুটা সে-দিনও বিষয়টি অস্বীকার করেছিল। শুক্রবারেও তারা জানায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ডেপুটেশন বা দাবিপত্র দেওয়ার কথা সর্বৈব মিথ্যা। এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, বাবুল যে ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠানে আসবেন, প্রেক্ষাগৃহ চেয়ে আবেদন করার সময় তা জানানো হয়নি। এ দিন তিনি জানান, নবীন বরণ এবং একটি আলোচনাসভার জন্য প্রেক্ষাগৃহ চেয়ে আবেদন করেছিলেন বাংলা বিভাগের গবেষক সুমনচন্দ্র দাস। কিন্তু সেই আবেদনের সঙ্গে অনুষ্ঠানের অতিথিদের নামের তালিকা ছিল না। উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে অনুমতি দেওয়া হয়। তার পরে, অনুষ্ঠানের আগের দিন একটি চিরকুটের মাধ্যমে তাঁর দফতরে জানানো হয়, সঙ্গীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয় আসছেন। সেই চিরকুট তাঁর হাতে আসেনি বলে জানান রেজিস্ট্রার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি ইউনিটের সম্পাদক সুমনচন্দ্র অবশ্য জানান, তাঁরা রেজিস্ট্রারের কাছে দু’দিন দু’টি হল বুকিংয়ের আবেদন করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর গাঁধী ভবন বা ১৯শে কে পি বসু মেমোরিয়াল হল। দ্বিতীয় হলটি পান। বাবুল যে আসছেন, তা লিখিত ভাবে রেজিস্ট্রারের দফতরে জানানো হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। বাবুলের আসার কথা তাঁরা যাদবপুর থানাতেও জানান। সুমন বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ সেই নামের তালিকা দেখেননি। সেটা তো আমাদের গাফিলতি হতে পারে না।’’
বৃহস্পতিবার নবীন বরণ অনুষ্ঠান হলেও প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি! ছিলেন দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষের কিছু পড়ুয়া। আর ছিলেন মাঝবয়সি কিছু দর্শক।
উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু এবং সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে এ দিন জানান হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy