—প্রতীকী ছবি
অস্থায়ী কর্মীদের বেতন নেই দীর্ঘদিন। অসহায়তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
অথচ রাজ্যের সেই মৎস্য উন্নয়ন নিগম থেকেই মৎস্যমন্ত্রীর ভাই, সচিবের গাড়িচালক-সহ দফতরের ছ’জন শীর্ষ আধিকারিকের নামে প্রতি মাসে বেআইনি ভাবে গাড়ির মোটা টাকার বিল (তেল-সহ গাড়ির আনুষাঙ্গিক খরচ) হিসাবে প্রায় চার লক্ষ টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিগমের এক শীর্ষ কর্তার অভিযোগ, ‘‘অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়াই নিয়ম না-মেনে কোষাগার থেকে ওই খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিগমকে। অথচ নগমের আয় কম বলে কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না।’’
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরীর নামে তিনটি গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে। মন্ত্রী সরকারি ভাবে একটি গাড়ি পান পরিবহণ দফতর থেকে। অভিযোগ, মন্ত্রী দফতরে গেলে তাঁর ভাই সন্দীপ রায় চৌধুরী সঙ্গে থাকেন। দফতরের অভিযোগ, সন্দীপের নামেও বরাদ্দ রয়েছে একটি গাড়ি। সেই গাড়ির বিল বাবদ মাসে ৭০-৭২ হাজার টাকা নিগমের কোষাগার থেকে তোলা হয় বলেও অভিযোগ। নিগমের এক কর্তার কথায়, ‘‘অথচ সন্দীপ নিগম বা দফতরের কোনও কর্মীও নন।’’
অভিযোগ, দফতরের সচিব অবনীন্দ্র সিংহের গাড়িচালক মহম্মদ রহিবুল হকের নামেও কোষাগার থেকে বেআইনি ভাবে গাড়িভাড়া বাবদ মাসে ৫৪ হাজার টাকা তোলা হচ্ছে। আধিকারিকদের অভিযোগ, সচিব এমনিতেই সরকারি গাড়ি পান। তার বাইরে তাঁর চালকের নামে প্রতি মাসে নিগম থেকে গাড়ির মোটা টাকা তোলাটা চরম ‘অপরাধ’ বলে দাবি অফিসারদের।
দফতরের ক্ষুব্ধ আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘নিগম বরাবরই আর্থিক ভাবে সবল ছিল। কিন্তু গত ছ’বছর ধরে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে মন্ত্রী, সচিব-সহ একাধিক আধিকারিকের নামে গাড়ির বিলের খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কর্মীরা দীর্ঘ দিন বেতন পাচ্ছেন না।’’ নিগমের এক শীর্ষ কর্তার অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে নিগমের অধীনে ২২টি মাছ চাষের প্রকল্পের মধ্যে ১৫টি প্রকল্পের অস্থায়ী কর্মীরা ৯-১৪ মাস বেতন পাচ্ছেন না। অথচ মন্ত্রী, সচিব-সহ একাধিক আধকারিকের গাড়ির বিলের মোটা টাকা দিতে হচ্ছে। এই অব্যবস্থা না ঘুচলে নিগমের ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব।’’
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯-এর পর থেকে শুরু হয়েছে এই বেনিয়ম। অভিযোগ, সচিবের এক নিকটাত্মীয় গত কয়েক মাস ধরে একটি নতুন গাড়ি মৎস্যমন্ত্রীকে ভাড়া দিয়েছেন। ওই ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা করে নিগম থেকে তোলা হয়। দফতরের এক আধিকারিকের অভিযোগ, ‘‘মন্ত্রী তিনটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। দু’টি গাড়ির নামে যে মোটা টাকা তোলা হচ্ছে, তার অর্ধেকও খরচ হয় না।’’
মৎস্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘খবরটা ঠিক নয়। আমার একটা পুরনো গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া দফতরের গাড়ি রয়েছে।’’ কিন্তু নিগমের কর্মীরা যখন দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না, তখন সেই নিগম থেকেই নিয়মের তোয়াক্কা না-করে গাড়ি ভাড়ার এত টাকা তোলা কতটা যুক্তিযুক্ত? মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি জেনে বলব।’’ সচিব অবনীন্দ্র সিংহয়ের মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy