Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Pandemic

Pandemic: স্কুল তো খুলবে, পরিকাঠামোর ঘাটতি মিটবে?

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল চালানোর জন্য পরিকাঠামোর আরও উন্নতি ঘটানো প্রয়োজন।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২১ ০৮:০৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর ছুটির পরে স্কুল খোলার ব্যাপারে চিন্তাভাবনার কথা বলায় পড়ুয়া, শিক্ষক, অভিভাবক-সহ প্রায় সকলেই খুশি। সেই সঙ্গে খানিকটা চিন্তিতও। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে ফিরিয়ে আনার জন্য স্কুল খোলা যেমন জরুরি, একই ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল চালানোর জন্য পরিকাঠামোর আরও উন্নতি ঘটানো প্রয়োজন। প্রশ্ন উঠছে, অতিমারির আবহে স্কুল চালাতে হলে যে-বাড়তি ও উন্নত পরিকাঠামো দরকার, সর্বত্র তার বন্দোবস্ত করা যাবে তো?

অধিকাংশ স্কুল জানাচ্ছে, তাদের দারোয়ান নেই, নেই ঝাড়ুদারও। শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এই অবস্থায় স্কুল খুললে শ্রেণিকক্ষ থেকে শৌচাগার, সামগ্রিক ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। স্থায়ী ঝাড়ুদারের ব্যবস্থা না-থাকলে রোজ দু’‌বেলা স্কুল পরিষ্কার করবে কে? নিয়মিত জীবাণুনাশ এবং স্কুলের ফটকে থার্মাল গানের সাহায্যে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করানো হবে কাদের দিয়ে?

স্কুল খোলার চিন্তাভাবনা শুরু হওয়ায় খুশি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শুক্রবার সোনারপুরে একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের পড়াশোনায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত, সে এখন সপ্তম শ্রেণির মাঝপর্বে চলে এসেছে। যদি ধরে নেওয়া যায়, সে এই সময়ে সে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পুরো পাঠ্যক্রম পড়ে ফেলেছে, তা হলে ভুল করা হবে। তাদের এই দেড় বছরের পাঠ-ঘাটতি কী ভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়, সেটা সরকারকে ভাবতে হবে।’’

পড়াশোনার ঘাটতি পূরণের সঙ্গে সঙ্গেই উঠছে পরিকাঠামোর প্রশ্ন। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির নান্দারিয়া শাস্ত্রী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খোলার সময় স্যানিটাইজ়ার কেনা, স্কুল সাফাইয়ের খরচ কম্পোজিট ফান্ড থেকে এসেছিল। তবে স্কুল পরিষ্কার রাখার জন্য ঝাড়ুদার থাকাটা জরুরি। ‘‘একশো দিনের কাজ প্রকল্পে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের মধ্য থেকে কিছু কর্মীকে স্কুল পরিষ্কার করার কাজে রাখা যেতে পারে,’’ প্রস্তাব শুদ্ধদেববাবুর। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের সহকারী প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুল পরিষ্কার রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের বাড়তি সাহায্য দরকার।’’

হাওড়ার দুইল্যা পাঁচপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার দাস জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান রাস্তার একদম ধারে। তাই স্কুলের বাইরে দাঁড় করিয়ে থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা মাপলে রাস্তায় পড়ুয়াদের লাইন পড়ে যাবে। অগত্যা স্কুলের ভিতরে পড়ুয়াদের ঢুকিয়েই তাপমাত্রা মাপতে হবে। ‘‘স্কুলে দারোয়ান নেই। তাপমাত্রা মাপবে কে? শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদেরই সেই দায়িত্ব নিতে হবে,’’ বলছেন ওই প্রধান শিক্ষক।

এসএফআই, ডিএসও-র মতো বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন অনেক দিন ধরেই পড়ুয়াদের টিকা দিয়ে স্কুল খোলার দাবি জানিয়ে আসছে। স্কুল খুললে টিকাকরণ ও স্বাস্থ্যবিধি পালনে জোর দেওয়ার জন্য পরিকাঠামোর ঘাটতি মেটানোর দাবি তুলছে তারাও।

শিক্ষা শিবিরের একাংশের মতে, স্কুল খুললে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাড়তি ভূমিকা কী হবে, সেই বিষয়ে শিক্ষা দফতরের তরফে একটা সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করা দরকার। ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘স্কুল খোলার পরে স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি প্রয়োজন।’’

শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘পুজোর পরে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, তার আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে করোনা স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নিয়মকানুন জানানো হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy