শেষ বার সংস্কার করা হয়েছিল প্রায় আট বছর আগে। বছর তিনেক আগে এক সমীক্ষায় জানা যায়, রেল সেতুতে ওঠার রাস্তা দু’দিকেই ভেঙে গিয়েছে। রেললাইনের নীচের মাটি যে ক্রমশ নরম হচ্ছে, তা-ও বলা হয়েছিল ওই সমীক্ষাটিতে। তার পরেও রেল থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। গত রবিবার সেতুর দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোড জলের তোড়ে ধুয়ে গিয়েছে। আর তার পর থেকেই দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
রেল সূত্রের খবর, তিন বছর আগে সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের খারাপ অবস্থা প্রথম যখন ধরা পড়েছিল, সে সময়েই রেল থেকে জারি করা হয়েছিল চূড়ান্ত সতর্কতা। নির্দেশ দেওয়া হয়, সেতুতে ওঠার দু’দিকে লাইনের নীচে মাটি-পাথরের বাঁধের উপর দিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে ট্রেন চালাতে হবে। প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, সেতু-সহ দু’দিকে রাস্তা সংস্কার করার প্রকল্প তৈরি হয়েছিল। আর্থিক বরাদ্দের জন্য সে প্রকল্প জমাও পড়েছিল।
কিন্তু বাস্তবে যে কাজ কিছুই হয়নি, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় এ বারের বন্যায়। জলের তোড়ে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) এবং মালদহ মেন লাইনে সুধানি এবং তেলটা স্টেশনের মাঝের সেই ১৩৩ নম্বর সেতুর ‘অ্যাপ্রোচ রোড’ ধুয়ে গিয়েছে। সেতুর দু’দিকে প্রায় ১২০ মিটার লাইন জলের উপরে ঝুলছে। এই ঘটনার পরে রেলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, তিন বছরেও সেতু মেরামতের কাজ হয়নি কেন?
রেলবোর্ডের একটি অংশ প্রকাশ্যে এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের পাল্টা অভিযোগ, অ্যাপ্রোচ রোডের পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ, তা নিয়ে স্থানীয় কর্মী-আধিকারিকরা কোনও রিপোর্টই পাঠাননি। তবে মুখে তাঁরা যা-ই বলুন, কার গাফিলতিতে রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে, তা চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের রেলকর্তাদের এর জন্য উপরমহলের কাছে জবাবদিহিও করতে হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘তেলটা সেতু নিয়ে এত দিন কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা আধিকারিকদের কাছে জনে জনে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’
পাশাপাশি দ্রুত গতিতে সেতু মেরামতের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই কাজে বিএসএফের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৫০ ওয়াগন ভর্তি বালির বস্তা এবং ১০টি রেক বোঝাই বোল্ডার পাঠানো হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের বন্যায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটিই সব থেকে বড় ক্ষতি। কাটিহার বিভাগের ডিআরএমকে ঘটনাস্থলে ক্যাম্প করে থেকে মেরামতির কাজ তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘আশা করছি দ্রুত লাইন স্বাভাবিক হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy