Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
India-China

তান-উন-সানকে জড়িয়ে ধরলেন নেহরু

১৯৩৭ সালের ১৪ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অধ্যাপক তান-উন-সানের উপস্থিতিতে শান্তিনিকেতনে এই ভবনের পথচলার শুরু। বিশ্বব্যাপী সৌভ্রাতৃত্বের অন্যতম নিদর্শনও বটে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

সৌরভ চক্রবর্তী
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ০৪:৩০
Share: Save:

লাদাখের ঘটনায় মন ভার ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষকদের। কিন্তু, বর্তমান সীমান্ত সংঘাত ভারত-চিনের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে বিঘ্নিত করবে না বলেই মনে করছে বিশ্বভারতীর চিনাভবন। ১৯৩৭ সালের ১৪ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অধ্যাপক তান-উন-সানের উপস্থিতিতে শান্তিনিকেতনে এই ভবনের পথচলার শুরু। বিশ্বব্যাপী সৌভ্রাতৃত্বের অন্যতম নিদর্শনও বটে। চিন থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে আসা পড়ুয়াও এই প্রতিষ্ঠানে নিজেকে নিরাপদ বলেই মনে করছেন।

প্রাচীন ভারতের সঙ্গেও চিনের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। প্রাচীন রেশম পথ ধরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অন্য এলাকার সঙ্গে ভারতবর্ষের যে বাণিজ্য হত, সেই পথের অন্যতম অংশীদার ছিল চিন। তবে ১৯৪৭ সালের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে নানা টানাপড়েন চলেছে।

এখন আবার নতুন করে প্রশ্নের মুখে দু’দেশের সম্পর্ক। কিন্তু, বিশ্বভারতীর অতীত বলছে পরিস্থিতি যেমনই হোক, রাজনৈতিক টানাপড়েন কখনওই দুই দেশের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

তারই উদাহরণ এই চিনাভবন। প্রবীণ আশ্রমিকদের অনেকেরই মনে পড়ছে, ১৯৬২ সালের সমাবর্তনের কথা। সে বার চিন-ভারত যুদ্ধের পরে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জওহরলাল নেহরু সেই সমাবর্তনে এসেছিলেন। সে বছরই লিখেছিলেন জওহরলাল— প্রতি বছর বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে আসার জন্য তিনি অপেক্ষা করে থাকেন, এটি তাঁর কাছে ‘অ্যানুয়াল পিলগ্রিমেজ’। সে বার সেখানে চিনাভবনের অধ্যক্ষকে (তান-উন-সান) দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নেহরু নিজে গিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নেন। তৈরি হয় নজির। বিশ্বভারতী সূত্রেই জানা যাচ্ছে, চিন-ভারত যুদ্ধের পরে পরে তান-উন-সানের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় আশ্রমকন্যা শ্যামলী খাস্তগীরের। এই বিয়ের মধ্যে তৎকালীন অনেকেই যুদ্ধ-বিরোধী বার্তা দেখতে পেয়েছিলেন।

সূত্রের খবর, চলতি বছরেও চিনাভবন থেকে অন্তত ৯ জন ছাত্রছাত্রীর স্কলারশিপ নিয়ে বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার কথা। করোনার জেরে সেই প্রক্রিয়া স্থগিত থাকলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই পড়ুয়ারা সেখানে যাবেন। চিনাভবনের ছাত্র আশিস দাস বলেন, “সীমান্তের পরিস্থিতি আর যেখানে আমরা পড়তে যাব, সেখানকার অবস্থার আকাশ-পাতাল পার্থক্য। বিভাগের সিনিয়রদের কাছে শুনেছি, রাজনৈতিক সম্পর্ক যাই থাক, ওখানে সবাইকে আপন করে নেওয়া হয়।” বাংলা ভাষা শিখতে আসা এক চিনা ছাত্রী বলছিলেন, “শিক্ষক থেকে বন্ধু, সবাই এখানে আমায় আপন করে নিয়েছে। মনেই হয়নি বাড়ি থেকে দূরে আছি। সীমান্তের রাজনীতি সম্পর্কে আমি জানি না। শুধু এটুকু জানি, বিশ্বভারতীতে আমি সুরক্ষিত।”

সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষও। কর্মীমণ্ডলীর যুগ্ম-সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “উপাচার্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

India China Ladakh Viswabharati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy